উদ্যমী কবি খ্যাত কবি শিমুল শুভ্র-এর আহবানে অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় প্রকাশের উদ্দেশ্যে বাংলা কবিতা ডট কমের সাইটে ১৭/৮/২০১৭ তারিখে প্রকাশিত “স্বপ্ন পুরুষ” নামের কবিতার লিঙ্কটি জমা দেই। উদ্যমী কবির অদম্য, প্রাণবন্ত উদ্যোগে শত কবির শত কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয় “কাব্য শতদল” নামের কাঙ্ক্ষিত সেই গ্রন্থ।
কবির এই উদ্যমের প্রশংসা করতেই হয়। সুদূর প্রবাসে থেকে তিনি অসাধ্য সাধন করেছেন এবং সৌখিন কবিদের বুকে লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। এজন্য কবি শিমুল শুভ্রকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
এই প্রথম কোন গ্রন্থে গ্রন্থিত আকারে নিজের লেখা প্রকাশিত হতে দেখে আনন্দের আতিশয্যে নিজের লেখা কবিতা নিজেই কিনে নিলাম অমর একুশে গ্রন্থ মেলা ২০১৭ এর ৩৮৮-৮৯ স্টল থেকে। সাথে থাকা অনেক কবি বন্ধুরাও সোৎসাহে কিনে কাব্য শতদলের পাঁপড়ির কোমল পরশ গায়ে মাখতে শুরু করে। এতো আনন্দের মাঝে বেদনার ভায়োলিন বুকে বাজে তখনই যখন ২৬ পৃষ্ঠায় স্থান পাওয়া নিজের লেখাটির উপর চোখ পড়ে। কবিতাটির অষ্টম চরণ “বিক্ষোভে বিপ্লবে প্রতিবাদ মিছিলে অগ্রণী কাণ্ডারী” পরিবর্তন করে লেখা হলো “বিক্ষোভে বিপদে প্রতিবাদ মিছিলে অগ্রণী কাণ্ডারী”। এই “বিপ্লবে” শব্দটি “বিপদে” রূপান্তরিত হয়ে পুরো কবিতাটিকেই বিপদে ফেলা হয়নি, লেখক হিসেবে আমি নিজেও পড়েছি বিপদে। পাঠক মনে করবে এটি লেখকের অদক্ষতা, অজ্ঞতা। কবিতাটির শেষের দিকে ২৬ চরণ “বিনম্র শ্রদ্ধায় আজও তোমাকে স্মরি আদর্শের পিতা”। এখানে “আদর্শের” শব্দটি ভেঙ্গে “আর্দ শের” লেখা হয়েছে। এটি টাইপের ভুল বা কনভার্টের সময় ফন্ট ভাঙ্গার ভুল হিসেবে মেনে নেয়া যায়। কিন্তু “বিপ্লবে” শব্দটি প্ল সংযুক্ত বর্ণটি ভাংলেও ব কখনও দ হওয়ার কথা নয়। এটি অজ্ঞতা ও অদক্ষতার পরিচায়ক। সম্পাদকের অনবধানতাও হতে পারে।
আমার পাশেই স্থান পাওয়া আরেকটি কবিতা কবি মোঃ আরিফ হোসেন সর্দার লেখা “আল্লাহ আল্লাহ কর ভাই”
হয়ে আছে “আলাহ আলাহ কর ভাই”। ফন্ট ভাঙ্গার দোষে এমনটি হয়ে থাকলে সব কটি “আল্লাহ” শব্দই “আলাহ” হতো কিন্তু কবিতার অষ্টম চরণে ঠিক ভাবেই “আল্লাহ” শব্দটি এসেছে।
এমনিভাবে পীযূষ কবি খ্যাত কবি সৌমেন বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত “অডিশন চলছে” কবিতায় বানান ভুলের অডিশান হয়েছে। এমনকি শ্রদ্ধেয় কবি অনিরুদ্ধ বুলবুলের লেখা সম্পাদকীয়তে “স্বত্বাধিকারী” শব্দটি হয়ে গেছে “সত্ত্বাধিকারী” যা মালিকানার অধিকারকে অস্থিত্বের অধিকারে পরিণত করেছে।
গ্রন্থটি গতরাতে হাতে পেয়েছি। সবগুলো কবিতা যদিও পড়া হয়নি তবুও এরই মধ্যে যা নজরে এসেছে তাতে মনে হয়েছে গ্রন্থটিকে প্রকাশক অথবা সম্পাদকের বৈমাত্রেয় সন্তান হিসেবে প্রসব করা হয়েছে।
এছাড়া কথায় আছে “বইয়ের মলাট লেখকের ললাট”।
গ্রন্থটির প্রচ্ছদ নিয়েও অনেককে উষ্মা প্রকাশ করতে দেখেছি।
তার পরেও বলছি আমরা কেউ ভুল ভ্রান্তির ঊর্ধ্বে নই। বড় কাজে ভুল হতেই পারে। তবে যে ভুলের কারণে লেখক, প্রকাশক, সম্পাদক বিপদে পড়েন সে ধরনের ভুল সম্পর্কে আরো সচেতন ও যত্নবান হলে আশা করি কবিতা শিল্পের উৎকর্ষতা বৃদ্ধি পাবে, পাঠক হৃদয় জয় করে কাব্য চর্চা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
কবি শিমুল শুভ্রসহ গ্রন্থটি প্রকাশের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই।
শুধু বলব-
স্বপ্ন কাননের ফুল কাব্য শতদল
শত কবির নামের মাঝে
আমার নামটিও পেয়েছে ঠাঁই
আনন্দ আজ বাঁধ মানে না
সম্পাদক সমীপে কৃতজ্ঞতা জানাই।
শত কবির শত সাধনা
শত চিন্তা চেতনার ফল
স্বপ্ন কাননে যে ফুল ফুটিল
তার নাম কাব্য শতদল।
শতদলের শত পাঁপড়ি
শত রঙে হয়েছে রঙিন
কাব্য সুধায় মন ভরেছে
আহা কী আনন্দের দিন!
সবাই ভালো থাকুন আনন্দে থাকুন। আর গ্রন্থটি যারা ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছেন তারা নিজ থেকে ভুলগুলো সংশোধন করে কাব্য পাঠ করে বিমল আনন্দ লাভ করুন এই প্রত্যাশায় শেষ করছি।
ধন্যবাদ সকলকে।
১৮-২-২০১৭