হতভাগ্যদের অধিকার থাকতে নেই
মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান

ডুবে যাওয়া সন্ধ্যার রক্তিম সূর্যটা
রাতভর অন্ধকার খেতে খেতে
ভোরবেলা উঁকি দেয় পুবের জানালায়।
শীতল শিশির ঘাসের চিবুকে
চকিত চুমুর রেখা এঁকে টুপ করে
শুয়ে পড়ে মাটির মাদুরে।
প্রজাপতি তার অধর রাঙায় পুষ্পের পরাগে
বিহঙ্গ সঙ্গম মুগ্ধতায় ডানা ঝাপটায়;
ক্লান্তির বাষ্প উড়ায় স্নিগ্ধ সকালের
ঝিরঝির হাওয়ায়।
নিসর্গের নান্দনিক আহবানে
সাড়া দিয়ে মেলে ধরে অরণ্যের অসীম লাবণ্য।
আহ্নিক গতির আকর্ষণে ছুটে চলা
পৃথিবীর পথে আরসব প্রাণির মতোন শুরু হয়
খাদ্যের সন্ধানে তোমার আমার ছুটে চলার ব্যস্ততা।
আমাদের আঙুল স্পর্শের অনেক আগেই
চাঁদের চিবুক স্পর্শ করে ফেলে
ভারতের চন্দ্রযান
কাছে থেকেও কতটা দুর্লঙ্ঘ দূরত্ব আমাদের!
আমাদের দেখা হবার আগেই দুইশতবার
সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে ফেলে পৃথিবী।
মৃত বৃক্ষের শুকনো পাতার শব্দের সাথে
শিশিরের পতনের সাথে
পুষ্পের বৃন্তচ্যুতির বেদনার সাথে
বুকের গহীনে বেজে ওঠে বেদনার ভায়োলিন।
শহরময় ছড়ায় বুকে অঙ্কুরিত যন্ত্রণার কলরব।
শ্রাবণের সরোবর পার হয়ে ভাদ্রের উঠানে
শেফালির কামনাকাতর অজড় উত্থান,
পরাশক্তির স্যাংশান,
রাজনীতির সংলাপ,
চায়ের কাপের টুংটাং আওয়াজ, সব...
সব আমাদের পাশকেটে চলে যায়।
আমাদের ভাবনার বাড়ি তছনছ করে
উড়ে যায় ওরলান-টেন ড্রোন,
অ্যাপাচি হেলিকপ্টার, ক্রুজ মিসাইল,
মিগ টুয়েন্টি নাইন বোমারু বিমান
আমাদের অর্থনীতি চুরমার করে
গজায় টাকার আচানক পাখা।
আমাদের অস্থির ব্যস্ততা কেবল... কেবল
চোখ বন্ধ রেখে নিষ্ফল আকাশ ঝাড়ু দিয়ে চলা আর
তারাদের মাঝে হারানো দিনের ফিলোসোফি খোঁজা।
সংবিধান, স্বাধীনতা আর গণতান্ত্রিক অধিকার
একমাত্র ঈশ্বরের আশীর্বাদপুষ্ট রাজনীতিকের
হতভাগ্যদের কোনোই অধিকার থাকতে নেই
হাভাতের প্রেম ও প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষার জৈবিক জাল বুনতে নেই
এসো আমরা ব্যস্ততা এবং কষ্ট খেয়েই বেঁচে থাকি।
২৮-০৮-২০২৩