প্রকৃতির মাঝে ঋতু পরিবর্তন ক্রমাগত,
খোলস বদলে প্রতিনিয়ত হচ্ছে রূপান্তরিত।
জরাজীর্ণ অতীত ফেলে বর্তমানের মধ্যদিয়ে
         জন্ম নতুনের। নব নব রূপ নিয়ে।
             প্রকৃতির মাঝে ধবংস অনিবার্য,
ক্ষয় ভয় ভুলে পালাবদল! এ যেন প্রতিদিনের কার্য।
জীবনে সুখ দুঃখ চলে কর্মফলে সর্বদা প্রবাহমান,
জীরনে দহন জ্বালা পালাবদলে মরীচিকা সমান।
ধেয়ে আসে ঝড় ভেঙ্গে করে তছনছ দুর্দান্ত গতিতে,
ধবংস সৃষ্টির খেলা প্রকৃতিতে ,তার নিজস্ব ঋতুতে।
রুদ্র রূপে ধেয়ে আসে ঝড় কালবৈশাখী,
শুষ্ক ধুলায় আকাশ বন্ধ করে দেয় আঁখি।
প্রকৃতি বদলে দেয় সব, নতুনের প্রতি আগ্রহী,
জড়জীবন পুরাতনের প্রতি নাহি মহি।
বৈশাখ আসে দহন বিশষ্কতার রূপ নিয়ে,
জৈষ্ঠ খরতা বাড়ায় বৈরি আবহাওয়া দিয়ে।
ফলে ফলে ভরে দেয় মধু রস প্রকৃতির মাঝে,
পালাবদলের পালায় মেঘের ঘনঘটা বাজে।
রূদ্র রূপের ভৈরব বৈশাখ থেমে যায়,
আষাঢ় শ্রাবণের বিরমহীন বারিধারায়।
চুম্বনদেয় মাটির মমতায় বৃক্ষলতায়,
উচ্ছ্বাসে ভাসে নব জীবনের ভাবনায়।
পথ ঘাট কাদায় কাঁদে, নদ-নদী যৌবনে হাসে;
সর্বগ্রাসি বন্যার মাঝে সবুজ গ্রাম ভাসে।
ঝর ঝর ঝর, দিনরাত ঝরছে অবিরাম;
বিরহ বেদনায় প্রেমিকার ঘুম হারাম।
মেঘ গুড় গুড় মেঘলা দিনে দুরু দুরু বুক,
দিন মজুরের কাজ বহে না! জমাট বাঁধে অসুখ।
পালাবদলের পালে শরৎ আসে শুভ্র সতেজ হাসি হেসে,
শিশির ঝরা সবুজ মাঠে শিউলি কাশফুল বাতাসে ভাসে।
বাংলার মুখে হাঁসি, কৃষাণির ঘরে ঘরে আনন্দের গান;
নবান্নের উৎসব, গ্রামে গ্রামে নতুন ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণ।
শিশির কুয়াশায় শান্ত  হেমন্ত জানিয়ে দেয় শীত আগত,
পালাবদলের পালায় জড়তা স্তব্ধতা নামে প্রকৃতির পাতায়।
দিনের আলো ঢেকে রাখে ঘন কুয়াশা চাদর  দিয়ে,
পিঠা-পায়েশের ধুমপড়ে মিষ্টি খেঁজুরের রস দিয়ে।
চারিদিকে শুষ্কতা, শুরু হয় পাতা ঝরার পালা;
ঋতুরাজ বসন্ত এসে ভরে দেয় ফুলে ফুলে ডালা,
নব নবীনের উৎসবে ন্যাড়া গাছে কচিপাতা।
যৌবনের উচ্ছ্বাসে ফিরে পায় প্রকৃতির লতাপাতা
শীতের হিমেল হাওয়া ঠেলে প্রকৃতিতে ঋতুরাজ বসন্ত,
দক্ষিণা বাতাসে সজীবতা আনে মধুময় অফুরন্ত অনন্ত।
                                                              




(২৪ জুন ২০০৯)