ছেলেকে নিয়ে চলল মা সেই গৃহস্থের বাড়ি,
দ্বারে পৌঁছাতেই গৃহকর্তা তাকাল আড়িআড়ি।
গিয়েছিলি তবে এসেছিস কেন?
কি ক্ষতি করেছে ও তাকি জানো!
ও রকম কাজ করতে হবে। যদি না পারে নিয়ে যাও,
আঁচল দিয়ে ঢেকে রেখে, কোরমা পোলা খাওয়াও।
হাতজোড় করে করুণ মিনতি স্বরে বলে , ভাই
তুমি আর আল্লাহ্ ছাড়া এ ধরণীতে ওর কেহ নাই।
বাবা যতনে করো কাজ
দেখবে তুমি হবে মহারাজ!
ছেলেকে রেখে চলল মা, হতাশা আর একরাশ দুঃখ নিয়ে,
এতক্ষণ কাঁদে নাই, এখন মায়ের চোখে অশ্রু যায় বয়ে।
মায়ের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে তাকালো গৃহকর্তার দিকে,
পায়ের ওপর পা তুলে ডাকল গৃহকর্তা বউ আর ঝিকে।
এই দেখ আবার এসেছে ফিরে
ছেলেটির এখনও অশ্রু ঝরে!
বলল, দাঁড়ায়ে র’বি ! মাঠের দিকে চল, করতে হবে চাষ,
অতি কষ্টে চলল মাঠে। ক্ষিধেয় জ্বলে তবু কাটতে হয় ঘাস।
সকাল দুপুর খায়নি অনাথ ছেলেটি, এখন সন্ধ্যা প্রায়,
পেটের ক্ষুধায়, মারের চোটে ব্যাথায় জ্বর এসেছে গায়।
অতিকষ্টে ফিরল বাড়ি
জুটল না কিছু ঔষুধবড়ি!
ব্যাথার শোকে রোগের সাথে যুদ্ধ করে মরল অবশেষে,
খবর শুনে জনম দুঃখীনি মা আসল ছুটে উর্ধ্বশ্বাসে।
মানিক বলে ডাকতে ডাকতে জড়িয়ে ধরল বুকে,
সব হারিয়ে পাগলীনি মা এখন আবল তাবল বকে।
খোদার কাছে নালিশ করে
দিনরাত অশ্রু ঝরে!
গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ঘুরে ফিরে খুঁজে ফেরে শুধুই বলে,
বাবা মানিক কোথায় গেলি! আয় ফিরে আমার কোলে।