খুব ভোরে ঘুম থেকে জেগে সেদিন গিয়েছি মাঠে,
চারিদিকে কুয়াশায়, হিমেল হাওয়ায় জড়িয়েছে বটে।
দেখিনু দূরে একটি ছেলে কাঁদে
গায়ে কিছু নাই, বোঝা রয়েছে কাঁধে!
আযানের সময় ঐ শীতে গিয়েছে পাড়তে খেজুরের রস,
বয়স বেশি হবে না। বেশি হলেও হবে নয় কিংবা দশ।
পরনে একটি প্যাণ্ট, খালি গা আর খালি পা ছেলেটির
কন কনে শীতে দু’চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে ছেলেটির।
উঠতে পারছে না গাছে
রসে গাছ গিয়েছে ভিজে!
তীরের মতো বেধে শীত, কষ্টে উঠল ভেজা গাছে ছেলেটি,
এই শীতে বেশ ক’টি গাছে উঠলে রসে ভিজল প্যাণ্টটি।
ঠক্ ঠক্ কাঁপছে শীতে, দাঁড়াতে পারছে না, মুখে নেই কথা,
কঠোর শ্রম, এতো কষ্ট কেন জীবনে! কেন এতো ব্যথা?
সূর্য ওঠে নাই, ফর্সা হচ্ছে ঊষা
সোনালী রোদের নেই তবু ভরসা!
এতক্ষণে ছ’খানা রস ভরেছে, কষ্টে তুলেছে কঁধে,
শীতে কাঁপতে কাঁপতে হোঁচট খেয়ে পড়ল বাঁধে।
আঘাতে ব্যথায়, অবশ দেহে পড়ে রইল ছেলেটি,
কিছুক্ষণ পরে জ্ঞান ফিরলে, উঠে চলল হাঁটিহাঁটি।
গুটি শুটি পায়ে বাড়ির দ্বারে প্রায়
রক্তাক্ত দেহে ভেঙ্গে পড়ল কাঁন্নায়!
ওদিকে খবর শুনে ছুটে এলো মহাজন তাড়াতাড়ি,
ধমক দিয়ে বেদম মারল আর তাড়ায় দিলো বাড়ি।
বলল মহাজন, এতো ক্ষতি করলি তুই! ভেঙ্গেছিস্ রস্
পারিস নে তবে, এসেছিস্ কেন? সংসারে নামালি ধস্ ।
কর্তার চেয়ে ছেলেটির বেশি ক্ষতি
এতটুকু বয়সে বিশ্রাম নেই একরতি!
কাজ আর কাজ , বিরামহীন কাজ, তাতে নেই লাজ
কাঁদতে কাঁদতে কত কথা তার মনে ভীড় করে আজ।