অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্খায় গড়ে ওঠে আন্দেলন
ভাষার উপর আঘাত হানতেই বলেন, বাংলা ছাড়েন।
অল্প সময়ে মোহভঙ্গ ঘটে বীর বাঙালির
এক পর্যায়ে গুলি। অন্দোলন আরো বেগবান
ঝরে পড়ল অনেক তাজা প্রাণ। তরপর প্রতিবাদ,
বন্দি হলেন আন্দোলনের অগ্রসৈনিক শেখ মুজিব।
বাঙালির আত্মপরিচয়ের বীজ বুনল সংগ্রামী তরুণেরা,
বাংলাই আমাদের রাষ্টভাষা। দেশব্যাপি আন্দোলন,
সবাইকে ছাড়িয়ে বাঙালির আশার প্রতীক হয়ে ওঠেন ।
জেল থেকে মুক্ত হয়ে আবার জেলে গেলেন,
আন্দোলনের চাপে জেল থেকে বের হলেন,
অবহেলিত বংলার মানুষর পক্ষে আওয়াজ তুললেন
“আমাদের অধিকার আমাদের ফিরিযে দাও”।
বৈষম্যমূলক আচরণে আমরা নিষ্পেষিত নির্যাতিত,
ষেষট্টিতে উত্থাপন করেন বাঙালির মুক্তির সনদ
ঐতিহাসিক “ছয় দফা”। শেখ মুজিব হলেন
সবাইকে ছাড়িয়ে মুক্তি আন্দোলনের নয়ণমণি।
“আগরতলা ষড়য়ন্ত্র” মামলার প্রধান আসামী করে
রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা দিলেন স্বৈর পাকসামরিক জান্তা।
তিনি লড়েছেন বাঙালিকে নিয়ে স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে।
তিনিতো বীর, বাঙালির নয়ণমণি, শ্রদ্ধা রাশি রাশি;
তারপর উত্তল বাংলায় এলো ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান।
জেল থেকে মুক্ত করে আনলেন সংগ্রামী ছাত্র জনতা,
অকৃত্রিম ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে উপাধি পেলেন “বঙ্গবন্ধু”।
পতন স্বৈরচারি আয়ূবের। অবার নয়া সামরিক শাসন,
“ মৃত্যৃকে আমি ভয় পাইনা। বড় ভালোবাসি বাঙালি ,
মাতৃভাষা আর বাংলাদেশকে” তিনি বললেন।
অবশেষে জেনারেল ইয়হিয়া দিলেন সত্তরে নির্বাচন।
বাঙালি সমবেত হলেন বঙ্গবন্ধুর ছয়দফার ছায়াতলে,
বাংলার জয় হয় আর পাক এলিটদের ষড়যন্ত্র যায় রসাতলে।
বঞ্জিত শোষিত মানুষের পক্ষে হাত তুললেন ৭মার্চের ভাষণে,
মার্চ জুড়ে অসহযোগ আন্দোলন আর ভুট্টো কালক্ষেপনে।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে চলল, বাংলার অফিস অদালত ব্যাংক বীমা।
ওদিকে ইয়াহিয়া-ভুট্টোর সামরিক হামলার পরিকল্পনা,
নিরস্ত্র বাঙালির উপর সশস্ত্র বর্বর হামলা ২৫ মার্চ রাতেই,
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন ২৬মার্চ প্রথম প্রহরেই।
বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ উচ্চারিত হলো বাংলার ঘরে ঘরে,
দেশদ্রোহির নামে বঙ্গবন্ধুর বিচার হয় সামরিক আদালতে।
সামরিক জান্তার সরকার, কবর খোঁচে জেলের ভেতরে
মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারিত হয় বাঙালির অন্তরে।
বিশ্বনেতৃবৃন্দের চাপে আর গৌরাবান্বিত মুক্তিযুদ্ধের ফলে,
মৃত্যুর মুখ থেকে বীরের বেশে, ১০ জানুয়ারী স্বদেশে ফেরে।
মুক্তির আলোর পথে, দায়িত্ব নিলেন বাংলাদেশ পুনগঠনে,
কুচক্রী মহল, ষড়যন্ত্রের জাল বিছাতে পেলেন ওদের সমর্থন।
শরণার্থীদের পুনবাসন আর বিধবস্ত অবকাঠামো পুর্নগঠনে,
সবাই চেয়েছিল সব সমস্য হতাশা দূর হবে তাঁর যাদুর স্পর্শে।
সম্পদের সল্পতা,প্রতিবন্ধকতা, প্রাকৃতিক দূর্যোগ আর ষড়যন্ত্র;
বিরোধীশক্তি অপপ্রচার চালিয়েছিল ‘বাকশাল’ একনায়কতন্ত্র।
বঙ্গবন্ধু বললেন, এটা সময়িক পিছু হটা আমার বাকশাল।
বাঙালিকে ভুল বুঝিয়ে চোরাবালি দিয়ে ঢোকে ষড়যন্ত্রকারী দল।
অপপ্রচারে সফল তারা পঁচাত্তরের ১৫ আগষ্ট ভোর রাতে,
বাংলার মহাবীর পড়ে থাকে ধানমণ্ডির ৩২ নং সিঁড়িতে।
কেঁদে ছিল বাংলাদেশ! আজও কাঁদে ঘাতকের আঘাতে,
কেঁদেছে বিশ্বমানবতা! কাঁদেনি ঘাতকের বুলেট সে রাতে।
তারপর আলোর পথ থেকে অন্ধকারে ,মানচিত্রে শত্রুর ঢিল,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম মুছে দিতে করল ইনডেমনিটি বিল।
(১৫ আগষ্ট ২০০৮)