দীপ হাতে  দেখলাম শুধু,
অপরূপ শোভা, মধুমাখা হাসি, কি কথা ক’বে বধূ!
এক হাতে দীপ, অন্য হাতে টানিছ অবগুণ্ঠন খানি,
সুধাভরা আঁখি! তবু মুখে ফোঁটে না কোন বাণী।
কী যেন ইশারায়! বুঝালে শুধু ভয়ে ভয়ে লাজে,
দীপখানি রেখে, কর জোড়ে দাঁড়িয়ে অপরূপ সাজে।
দুরু দুরু বুকে সহসা বললে, তুমি মোর প্রাণ সখা,
নিদ্রাপুরিতে  নির্জন ঘরে, তাই দীপ হাতে আমি একা।
চমকে নড়েচড়ে বসে। বললাম, কে ডাকল নাম ধরে?
জোড় হাতে দাঁড়িয়ে বলল, ডেকেছি সুখনিদ্রার ঘোরে।
পূণর্শশী মধ্যগগনে নরম আলোয় শোভিত ধরাতাল,
নিদ্রাপুরিতে সুখ শয্যায় ঘুমাচ্ছে নর-নারী অবিচল।
               মাঝে মাঝে কেঁপে ওঠে বুক,
কথা ফোঁটে না মুখে, সব কিছু ভুলে দেখি রমণীর মুখ।
হৃদস্পন্দন থামে! অবাক তাকিয়ে ভ্রমর গুঞ্জন শুনি কানে,
ঝিরঝির বাতাসে পাপড়ি পড়ছে ঝরে বেদনার কুঞ্জবনে।
কী কথা ক’বে? কী জন্য এসেছো দীপ হাতে এ রাতে!
বসো রমণী, আর কত দাঁড়াবে! যেতে হবে মোর প্রভাতে।
            মধ্যরজনী পার হয়ে তিমির রজনী প্রায়,
দাঁড়ায় থাকব প্রিয়তম মৃত্যু অবধি তোমার আশায়
(এ কথা বলল মনে মনে)। তারপর পড়ল চরণতলে।
বাহু দু’খানা ধরে তুললাম টেনে দেখি ভরে গেছে আঁখিজলে।
সহসা দমকা বাতাসে নিভে গেছে দীপ, পড়েছে ঘোমাটাখানি;
আঁখিজল মুছতেই দেখি এ যে মোর চিত্রপটের প্রেমের রাণী।
                                                                        


(২৯জুলাই ২০০৯)