হে যন্ত্র মানব
চিনতে পারছ আমাদের
হে যন্ত্র মানবের দল ।
মনে পড়ে আমাদের পূর্ব পুরুষদের ।
যাদের তুমি করেছ গৃহহারা ,
ক্ষুধার তাড়নায় তাদের আর্তনাদ ,
তোমাদের মর্ম পরশ করে নি সেই দিন ।
শুধু বর্বরের মত করেছিলে উল্লাস।
তোমার বৈজ্ঞানিকের
মেধার বলে বলিয়ান হয়ে ,
নিজের শ্রেষ্ঠত্বের দম্ভে ,
গাছ কেটে গড়েছ গগনচুম্বী অট্টালিকা ,
পাহাড় কেটে রাজপথ ।
নদীতে বাঁধ বেঁধে বদলে দিয়েছ গতিপথ ,
স্পুটনিক পাঠিয়েছ গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে ।
প্রকৃতির বুকে বারবার হেনেছ আঘাত ।
তোমার কলকারখানার ধোঁয়ায় -
পবনদেবকে দূষিত করেছ অনায়াসে ।
প্রকৃতি বারেবারে জানিয়েছে মৃদু প্রতিবাদ ,
অগ্রাহ্য করেছ তুমি ,
লোভ আর যশের আকাঙ্খায় ।
আজ এক অণু ক্ষুদ্র ভাইরাসের ভয়ে
ভীত ,সন্ত্রস্ত তুমি ।
লুকিয়েছ রুদ্ধদ্বার আপনার গর্তে ।
তোমার প্রাণের যন্ত্র স্তব্ধ আজি ,
দেখ চেয়ে
প্রকৃতির মুখে আজ অবজ্ঞার হাসি ।
কোথা গেল
তোমার দাম্ভিকতার অট্টহাস ।
তোমার আগ্নেয়াস্ত্র আর মিসাইলের টঙ্কার ।
পারমানবিক বোমায় সজ্জিত তোমার বেসুরো ঝঙ্কার ।
আজ তুমি বুঝেছ ,
প্রকৃতির ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণাও ভেদ মানে না ।
অর্থের ভেদ
জাতির ভেদ
বর্ণের ভেদ
ধর্মের ভেদ ।
তাই আজ
তোমার রাজার আসন টলিয়াছে
এক অজানা আশংকায় ।
জানি আগামী দিনে
তোমার বৈজ্ঞানিকের দল
অকেজো করে দেবে
ভাইরাসের সকল শক্তি ।
আবার দম্ভভরে তুমি প্রকৃতিকে
করবে পরিহাস ।
তবু আজ
তোমার এই ভীত রূপ দেখতে
আমরা এসেছি তোমার রাজপথে ,
আনন্দে নেচে উঠেছে আমাদের মন।
হে শক্তিধর
তুমি যতই শক্তিমান হও
তুমি তো কালের থেকে বড়ো নও ।
জেনে রেখো,
আগামি দিনেও যদি আত্মম্ভরিতায়,
আঘাত হানো প্রকৃতির বুকে ,
তবে তৈরি থেকো
প্রকৃতির রুদ্রমুর্তির প্রলয় নাচনের জন্য ।
সেইদিন আবার আমাকে পাবে
তোমার আস্তানায় ,
চিরতরে তোমার ধ্বংস -
চাক্ষুষ করতে ।