আমি গনতন্ত্র দ্যাখেছি -
উপজেলা পরিষদ এবং ইউপির নির্বাচনে
পঁয়ত্রিশ বছরের বয়সে এ-তো সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচন পূর্বে আমাকে আর কেউ দ্যাখায়নি।
উপজেলা নির্বাচনে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্ট ছিলাম
একটি স্বচ্ছ, সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচন দ্যাখেছিলাম সেইদিন।
উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর বড়ভাই বললেন হেঁসে
চেয়ারম্যান প্রার্থীর যতো ব্যালট পেপার আছে
নিয়ে এসো আমার কাছে --
কোমর ভেঙে দেবো কোন মন্তব্য যদি হয় পাছে।
এক কোনে দাঁড়িয়ে দ্যাখছি করে হা
কি ভাবে ভেঙে দিচ্ছে গনতন্ত্রের পা --
ধর্ষক ধর্ষনের লালসায় নারীর কাপড়-চোপড় যেভাবে ছিড়ে নগ্ন করে দেহ
গনতন্ত্রকেও সেইদিন খিড়কি বন্ধ করে বিবস্ত্র করে কণ্ঠ চেপে খামচে ধরেছিল চিবুক।
আমি দর্শকের মতো দাড়িয়ে ছিলাম সেইদিন
ধর্ষিতা নারীর চিৎকারের মতো চিৎকার শুনেছিলাম
বুলেট বিদ্ধ হবার ভয়ে সেইদিন কেউ এগিয়ে আসেনি
আমি এজেন্ট হ'য়ে আমার নির্বাচিত প্রার্থীকে ভোটটি দিতে পারিনি।
সব ব্যালট রাখা হলো টেবিলের 'পর
দরজা-জানালা মেরে খিল --
বুক ফুলিয়ে ব'লে সব ব্যালটে আমি একাই মারবো সীল
বিরোধিতা করতে এলে ছাতিম ভেঙে দেবো মেরে কিল।
তেল বাজেরা ঢালছে মাথায় তেল
আরো কিছু বাকি আছে সেইগুলোতেও মেরে দেন।
মারতে মারতে হাঁপিয়ে যান প্রার্থীর ভাই
কে যেন ব'লে উঠলো জলদি এক বোতল কোক নিয়ে আয়।
আমার ভোট আমি দ্যাবো,যাকে খুশি তাকে দ্যাবো
চলবে না আর এ গান -
সবার ভোট আমি দেবো, সরকারের মনোনীত প্রার্থীকে দিবো - লিখে নিন নতুন স্লোগান।
এইতো গেলো উপজেলা
দ্যাখবো এবার ইউপির খেলা
এক-এক করে যাচ্ছে ভোটার প্রিয় প্রার্থীকে দিতে ভোট
চেয়ারম্যানের ব্যালট হ'য়েছে গায়েব বেঁধেছে এক জোট।
চেয়ারম্যান উর্ধ্বাকাশের পথিক
ভোটারের হাতে কেবল মেম্বারের প্রতীক।
এটাই আমাদের গনতন্ত্র -
আমরা বুক ফুলিয়ে এই গনতন্ত্রের কথা বলি
প্রিয় প্রার্থীকে ভোট দিতে না পেরে --
ভোটকেন্দ্র রোদনভরা আহাজারি।
সেইদিনও আমি এজেন্ট ছিলাম
দ্যাখে ছিলাম তেলেসমাতি -
দুধের দাঁত তখনো পড়েনি
ব্যালট পেপারে সীল মারে শতেকখাকি।
সেইদিন ভাই চিনে-নি ভাইকে
বন্ধু চিনে-নি বন্ধুকে
ধূলিসাৎ করে সম্মানি ব্যাক্তির গগনচুম্বী সম্মানকে।
প্রবাসীর ব্যালট থাকেনি অবশিষ্ট -
তা-ও হ'য়ে গিয়েছিলো কাস্ট
সবার দৃষ্টি ফাঁকি দিয়ে -
মন্তু মিয়াও ভোট দিয়ে যায় এসে কবর থেকে।
আমি বিবস্ত্র গনতন্ত্র দ্যাখেছি বিবস্ত্র গনতন্ত্র
এক ধর্ষিতা নারীর মতো অসহায় গনতন্ত্র দ্যাখেছি।
২৫/০৭/২০২২ সৌদি আরব