সেই ভালো ছিলে
......................
সেই ভালো ছিলো!
যখন ছাপাখানায় সাদাকালো ছাড়া অন্যকোনো রঙ ছিলো না, তোমাকে বেশ সহজেই চেনা যেতো।
পায়ে হেটে হেটে চলে যেতাম সিদ্ধির গাছতলা।
মিছিলের ঠ্যাসা ভীড়েও এতোটুকু অনুমান লাগতো না-
শুধুমাত্র পারফিউম শুঁকেই নির্ণয় করে নিতাম তোমার অবস্থান।
খেয়ালের সময়ে অসময়ে যখনি ডেকেছি তুমি নেমে এসেছো দড়দড় করে নগ্ন পায়ে।
মনের অজান্তে দারুণ খেয়ালে কখন যে দুটো হাত এক হাতে মিলেছিলো দুজনের কেউ জানিনা।
সেই শক্ত হাতের ভরসা নিতে ছুটে এসেছে কতো মুক্তিকামী স্বপ্নদেখা মানুষ।
যার তার হাতে খেলে তখন তোমার জাত যেতো না।
ছিলোনা আচার, কোন বিচারের পাল্লা;
যেনো প্রথম রবির সদ্য ফোঁটা কয়েকটা কাঁচা ফুল- এক সূতোয় গাঁথা।
দীর্ঘপথ ক্লান্তির পথ হেঁটে যখনই চোখদুটো বিশ্রামের অবসর খুঁজতে ছোট্ট একটা নির্জন আস্তাঘর চাইল;
ঠিক তখনি পাশ ফিরে দেখি কোন এক মুহনীর বাঁকে জোয়ারের উল্টো টানে তোমার রাস্তা বদলে গেছে...।
আজ তুমি বড় আল্ট্রানশিন, মাখো রং ফর্শা করা পশ্চিমা ক্রিম।
কথা সত্য; তোমাকে মানায় বেশ!
তবে নাক জ্বলে যায়; গন্ধটা ইরানী আতরে ঢাকা।
রপ্তকরা ক্যটোয়াকি লৌহ হিলের সূচাগ্রে পাতাল ফুঁড়ে মুষড়ে দেয় চৌদ্দ পুরুষের বাস্তুক।
সেই ভালো ছিলে!
যখন শুধু এক পৃষ্ঠ সাদা মলাটে ছিলে রঙবিহীন।
ছিলে নিতান্তই ছড়ানো সহজ সরল বর্ণমালায় এই বুক জুড়ে এক সাদামাটা কবিতা-
তখন তোমাকে চেনা যেতো বেশ সহজেই।
আজ আমার ক্লান্তিত পা কেনো..?
শত সহস্র পতঙ্গ বা প্রজাপতি কোনটাই সারা শহর ঘুরে শুনতে পাবে না তোমার সেই আহবাণী বীণ।
--------মিটুল কুমার বোস:17/01/17