জিমূত,কনীনিকার অনুলোম বিবাহ সম্পন্ন হল ৷
ত্রহস্পর্শে তারা দু'জন একে 'পরেতে হারাল ৷
হাজার বছরের সুপ্ত সাধনা পূর্ণ হল উভয়ের ৷
যেন ফসল ফলল প্রথম পৌরাণিক ঊষরের ৷
দেবীর নিমিত্তে দিচ্ছে ভোগ,শঙ্খে কনীনিকা ৷
সন্তান লাভের মনস্কামনায় স্নিগ্ধা আলোলিকা ৷
অপাঙ্গে অশ্রু আনিয়া জিমূত বলিল কানে-কানে ৷
তোমার ক্রোড়ে দেখেছি সন্তান ভোরের স্বপনে ৷
অবশেষে স্বপ্ন হইল সত্যি দশটি মাস পরে ৷
পুত্র সন্তান জন্ম নিল কোলটি আলো করে ৷
নিযুপ্ত সুত লয়ে প্রসূতি শুয়েছিল পালঙ্কে ৷
তিমির রাতের ঘন আঁধার ঘুচল মৃগাঙ্কে ৷
কিছু দিন কাটতেই শিশুর মুখে ফুটে কথা ৷
'বাবা-মা' বলতে পারে,কিন্তু আধা-আধা ৷
একদিকে পতির চিন্তা;অন্য দিকে নন্দনের ৷
এমতাবস্থায় স্মরণ হইল পূর্ব মানসিক মনের ৷
জিমূতকে কনীনিকা কহে আত্ম-মনের কথা ৷
এতদিনেও যাহা কভু হয়নি কোনো বৃথা ৷
অতঃপর যাত্রা ধরল জাহ্নবীর পুণ্য-স্নানে ৷
পতির দ্ব্যর্থক কথার ছলে বুঝল ভুল মনে ৷
কনীনিকা রেগে গিয়ে বলল অভিমানে ৷
সুত,পতি উভয়কেই উত্সর্গ করবো বিসর্জনে ৷
অতঃপর মানসিক জাহ্নবী দেবীর পুজো মিটিয়ে ৷
আসিতেছিল জলপথে তারা,নৌকা পাড়ি দিয়ে ৷
মাঝ গঙ্গায় আসিবা মাত্র নৌকা ডুবে ডুবে ৷
অপ্রত্যাশিত এমন ঘটনায় চমকে উঠল সবে ৷
খানিক বাদে নৌকায় জল উঠতে লাগল রেগে ৷
উপস্থিত ধ্যানমগ্ন বাবা,বলল এবার জেগে ৷
কে হেথায় আছো বলো;যার সুত,পতি উত্সর্গিত ৷
নইলে মোদের সবার মৃত্যু,জেনে রেখো মাতৃভক্ত ৷
আকস্মিক নীরবতার মাঝে,কনীনিকা উঠল বলে ৷
নিজের অজান্তেই মুখ ফস্কে সব,বলেছিলাম আমি ভুলে ৷
উপায়হীন যাত্রীরা সবে পতি-পুত্রকে চিনল ৷
আত্ম-প্রাণ রক্ষার্থে তাঁদের গঙ্গায় বিসর্জন দিল ৷
আত্ম-রাগের ভুলের বশে;সুত,পতি হারিয়ে ৷
চিরকাল রইল দুঃখিনী,কনীনিকা নিঃস্ব হয়ে ৷