আম্র গাছে পিকের কন্ঠ রূপ গীত শুনিয়া মনে হইল;প্রভাতে মিহিরের ক্ষীণ প্রভা উঠিয়াছে ৷
গোয়াল ঘরের গো'গুলি সব বাহির পানে যাইবার তরে,একে 'পরকে ডাকাডাকি করিয়া গোয়ালিনীকে জাগাইতেছে ৷
আঁখি মলিতে মলিতে গোয়ালিনী পালঙ্ক ত্যাগ করিয়া,ধেনুগুলিকে সবুজ ঘাসের রৌদ্রোজ্জ্বল মাঠে বাঁধিয়া আসিল ৷
অপরদিকে,মাঝিমাল্লারা পল্লিগীতি গাইতে গাইতে প্রবাহিত কল্লোলিনীর ঘাটে বাঁধা তরীর দিকে যাইতে উদ্যত হইতেছে ৷
নিদ্রাভঙ্গ হইতেই গ্রাম্য বালকেরা ছিপ হাতে লইয়া চলিতেছে,ভরা গাঙের জলে মাছ ধরিবার আশায় ৷
ইতোমধ্যে,জঙ্গলে প্রস্ফুটিত সুগন্ধি প্রসূনের সুবাসে দক্ষিণা বাতাস আস্ত গ্রামটিকে সুরভিত করিয়া মুগ্ধতা ছড়াইয়াছে ৷
জীমৃতরা অন্তরীক্ষের পাথারে,আত্ম-ভেলা বানাইয়া লইয়া,আত্ম-সুখে অতিথি বন্ধু মারুত সনে খেলিতেছে ৷
পল্লি বণিতারা শূন্য চরণে গাঙের জল কলসীতে ভরিয়া;নদী মাতাকে জানাইল,করজোড়ে শুভ বিদায় ৷
আর তাই দেখিয়া,যত সব চোরা কাঁটারা চুপিসারে বণিতাদের শাড়ির আঁচলে স্থান দখল করিল ৷
বেলা তখন জলকে পড়িয়া যাইতেছিল বৈকালের ওই ম্লান কাঁধে;তাই বুঝি দিগন্তরেখা নবরূপে সুসজ্জিত ৷
ঋতুরাজ বসন্তের শুভদৃষ্টিতে নম্র ফাল্গুনী পল্লি গহনে প্রবেশ করিবার সময়,ছিল কনে রূপে শ্রীলজ্জিত ৷
এমতাবস্থায়,স্বর্ণ রৌদ্রোজ্জ্বলময় বৈকাল,সায়াহ্নের আগমনীতে;অর্ককে ঘুম পাড়ানি গানের ছলে ঘুম পারাইতে লাগিল ৷
দিনমানও তখন নিতান্তই ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছে;আর,তাই হয়তো চন্দ্রমা একটু আগেভাগেই গগনে ফুটিয়াছে ৷
এরূপ প্রাকৃতিক সুদৃশ্যের সঙ্গে পল্লিসুলভ পরিবেশের আত্মিক সংযোগের বিরলতম দৃশ্য;সত্যিই আমাকে মুগ্ধ করিয়াছে ৷