বিবেকহীন

মৃন্ময়

সোশ্যাল মিডিয়াতে জমিয়ে
আবেগ ঘন প্রচার।
শিশুশ্রম, অনাহারে মৃতপ্রায় শিশু
কিংবা বৃদ্ধ মা-বাবার সায়াহ্নের অন্ধকার।

আহা! কতই না কষ্ট , কত্ত কান্না!
নীলচে আলোয় হাতড়ে বেড়ায় লাইক।
সকালের পোস্ট করা বেদনাতুর অভিনয়,
রাতের দুর্ভাষে শব্দ যোগে স্ট্রাইক!

এ যেন পাপস্খলনের মানসিক বিপর্যয়!
নিজে যা নয় সেটাই জাহির করার প্রচেষ্টা।
অন্যের দুঃখে সামিল হওয়ার অভিনয়।
উদারতার ডিজিটাল পরাকাষ্ঠা!

সমস্ত বিপ্লব,আন্দোলন ওই নীলচে আলোয়।
দিনের আলোকে স্রেফ ছায়াহীন কায়া।
পোশাক আশাক, গাঢ় মেকাপের আস্তরণ....
অথচ কাজের মেয়েটার জন্য বিলুপ্ত মায়া।

রেস্তোরাঁর বাইরে দাঁড়িয়ে ওই যে বাচ্চাটা
কেঁদে চলেছে একটু খাবারের জন্য,
রেস্তোরাঁয় অপেক্ষারতরা ফেসবুক কিংবা টুইটারে
কমেন্ট পোস্টের লাইকে ধন্য।

আবেগ তুলে ধরার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া।
মন কোনো মাধ্যমই নয়!
যান্ত্রিক হতে হতে মানুষরা আজ রোবট।
সত্যিই আজ ভয় হয়, ভীষণ ভয়!

যে মানুষটির বৃদ্ধ মা বাবার জন্য এত ব্যাথা ব্রোকেন হার্ট চিহ্নে,
কই, সে তো দিব্যি আছে নির্ঝঞ্ঝাট
একলা স্বামী সন্তানের সান্নিধ্যে!
বৃদ্ধরা একলা জীবনের সায়াহ্নে।

বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে লেখালিখি
কেবল মোবাইলের স্ক্রিনে অঙুলির নৃত্য।
সামাজিক হওয়ার লেটেস্ট টেকনোলজি।
মনের ভাষা আর লেখার মাঝে -
আলোকবর্ষের দূরত্ব!

সকাল হতে সন্ধ্যে অন লাইন,
P-N-P-C, মানবদরদী পোস্ট, মার্কেটিং।
বোকা বাক্সে কু-রুচিকর মেগা সিরিয়াল,
আরে নৈশলোকে পোস্টগুলির
গ্রহণ যোগ্যতার রেটিং ।

চায়ের কাপে এরাই তোলে ঝড়,
সমাজ পাল্টানোর কপচায়  বুলি,
এই নাটুকে সংলাপে কান পাতলে বোঝায়
মানুষের চামড়ায় মোড়া এরা সব
বিবেকহীন নর খুলি।