এইখানে সেই ডালিম গাছটি, কবেই মরে গেছে
মাটির নিচের কবরখানি, আজো বেঁচে আছে ।।
কবি তুমি কেমনে তারে, বাসলে এতই ভালো
সোনামুখটি হাসছে আজও, কবর করে আলো।।
তিরিশ বছর পরেও তোমার, দুচোখ ভাসে জলে
এত প্রেম, সোহাগ ও প্রীতি, বলো কোথায় পেলে !!
চোখের আড়াল হলে তোমার, বিরহে পুড়তো মন
এই জগতে ক'জন নারী, পায় গো এমন জীবন !!
ঘুমিয়ে আছে মণিমালা আজ, তোমায় ভালবেসে
স্মৃতিরা সব রয়েছে তেমন, ভাঙ্গা সংসারে মিশে ।।
তোমার মত দরদী স্বামী, পাবে কী অন্য লোকে ?
কবর তলে ফিরিয়ে দিয়েও, রেখেছিলে বেঁধে বুকে।।
পল্লীবালার ছিল কত রূপ, ছিল দুই চোখে মায়া
এত প্রেম বুকে কেমনে ধরে, রয়ে গেল হয়ে ছায়া ।।
এইটুকু মেয়ে উঠোন জুড়ে, খেলেছে পুতুল খেলা
আজো সেই স্মৃতি ভাবতে কবি, যায় বয়ে সব বেলা !!
এত প্রেম দিয়ে ভরিয়েও তারে, পারনি রাখতে বেঁধে
আজও তোমার মর্ম বেদনা, সংসারে মরে কেঁদে ।।
কবরের পরে কত ফুল ঝরে, কত ব্যথা যায় সয়ে
কবরের মানুষ থাকুক সুখে, বেহেস্তের গান গেয়ে ।।
সহসা যেদিন সোনার প্রতিমা, চলে গেল কবরদেশে
তার কথা ভেবে তুমিও কবি, চলে গেলে পরমবাসে !!
সেখানেতে থেকো দুইজনে, সোনার সংসার গড়ি
জনম জনম রবে একসাথে, হবে নাকো ছাড়াছাড়ি ।।
আজও সংসারে বইছে বেদন, কত যে পল্লীবালা
কেউ কী আজো পেরেছে হতে, সোনামুখ মণিমালা ?
অকালে ঝরছে কতশত নারী, সংসার পাতা কবরে
শত জনম পাও জসীমউদ্দীন, বাঁচাও পল্লীবালারে ।।
(পল্লীকবি জসীম উদ্দীন এর “কবর’ কবিতা অবলম্বনে রচিত।)
১১ নভেম্বর, ২০১৭।
ঢাকা বাংলাদেশ