ঘুমিয়ে পরার আগেও ভেবেছি আজ ঘর থেকে বের হলে
সহজে ঘরে ফিরবো না;
অফিস শেষে সোজা হাঁটা শুরু করবো
শহরের কোনো এক পথ ধরে।
যে বিন্দু মাত্রও উপলব্ধি করে না
আমার নিদারুণ কষ্ট, আমার ক্ষিপ্ত অভিমান
তাকে ভীষণ ভাবে শাস্তি দিবো,
অশান্ত করে ছাড়বো তার চারপাশ।
শহরের তেমন কিছুই আমি চিনিনা,
মনে মনে হারানোর ভয় তো থাকবেই,
তবুও এই ভয় আমায় কোনোভাবেই থামাতে পারবে না,
সহজেই আমায় টেনে ঘরে ফেরাতে পারবে না ।
পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া শতশত লোক
কেউ আমার বুকের পাথর ভাঙ্গার শব্দ শুনতে পাবে না,
জানবে না দীর্ঘনিশ্বাসের সাথে কতটা রক্তক্ষরণ হচ্ছে,
দেখবে না নীরবে কতটা জল গড়িয়ে পড়ছে দুইচোখ বেয়ে।
বিকেল গড়িয়ে আস্তে আস্তে সন্ধ্যার আঁধার ঘনিয়ে আসবে,
পা দুটো ক্লান্ত হয়ে পড়বে,
সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় চোখ দুটো আরও ঝাপসা হয়ে উঠবে,
তীক্ত অভিমান আর কষ্ট আমায় আরও বেশি অস্থির করে তুলবে;
তবু কোনোভাবেই থামা যাবে না।
সময় অনেক গড়িয়ে যাবে,
বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে থাকবে কপালে-
শহরের আধো চেনা পথ ধীরে ধীরে জনশূন্য হতে থাকবে
চারপাশের নীরবতায় মন শান্ত হলে ফেরার পথ ধরবো,
যদি পথ হারিয়ে না ফেলি গভীর রাতে ঘরে ফিরবো।
ততক্ষণে ঘরে থাকা মানুষটি আমার জন্য অস্থির হবে,
বুকে ব্যথা অনুভব করবে;
আমায় কষ্ট দেবার ফল তাকে এভাবেই ভোগ করতে হবে।
আজও আমার ঘরের বাহিরে যাওয়া হলো না;
শহরের পথে দুঃখের বীজ বোনা হলো না
কপালে তার হাতের স্পর্শে ঘুম ভাঙলো।
"উঠো, কিছু একটা খেয়ে তারপর জ্বরের ওষুধ খাও,
আজ আর অফিসে যাবার দরকার নেই।”
এই বলে সে কাজে বেরিয়ে গেল;
সংসারের কি যে মায়া, দিন শেষে আমায় টেনে আনে,
বেঁধে রাখে শত যন্ত্রণা, অপমান আর দীর্ঘনিশ্বাসের বেড়াফাঁদে।
আরো জ্বরে পুড়ে যাক শরীর,
ব্যথায় ব্যথায় মনে যাক শত সহস্র স্বপ্ন
ভীষণ দুঃখ আর অভিমান গলে গলে পরুক দুইচোখ বেয়ে;
শহর, তোমার কাছে আমি চিরকাল অজানা-অচেনাই রয়ে যাবো
আর দুঃখগুলো একাই বয়ে বেড়াবো অহর্নিশি।