লক্ষ্মীটি,
অনেক রাত হয়েছে এবার ঘুমিয়ে পড়
কতদিন হল তোমার চোখে ঘুম নেই
রাতের স্বপ্ন নেই, নেই স্পর্শের বিলাসিত ;
আমি সইতে পারিনা তোমার নিরব কষ্ট
একলা থাকার কি যে যন্ত্রণা সে আমিও জানি
তাইতো কবর থেকে রোজ ছুটে আসি এই ঘরে।।

আমি জানিনা এমনি করে আর কতদিন
তাঁর কঠিন চোখকে ফাকি দিয়ে
তোমার কাছে আসতে পারবো
দুচোখ ভরে তোমায় দেখতে পাবো
দুহাতে তোমায় ছুঁয়ে যেতে পারবো ।।

সে পাষাণ কি আর জানে একটি মুহূর্ত
আমরা কাউকে ছেড়ে থাকতে পারি না !!
চোখের আড়াল হলেই কান্নায় বুক ভাসে
ছুঁতে না পেরে নিঃশ্বাস ভারি হয়ে যায় ।

আমায় সেদিন তুলে নেবার সময়
তোমার বুকফাটা আর্ত চিৎকার
তাঁর কঠিন মনকে গলাতে পারেনি এতটুকু
নিমেষেই শেষ করে দিল আমার নিঃশ্বাস !!

আমার কপালের সিঁদুর মুছতে গিয়ে
তোমার দুইহাত রক্তাক্ত হয়েছে।
চিতার আগুনের সবটুকু তাপ
দগ্ধ করেছে তোমার শরীর মন দুটোই।

জানি এখনও তোমার যন্ত্রনা আর
বুকফাটা কান্নায় পাহাড় নড়ে উঠছে
কষ্টের লোনাজলে তোমার দুইচোখ এখন
আগ্নেয়গিরি জ্বালামুখ হয়ে উঠেছে।

আমি আগেও তোমার কষ্ট সইতে পারিনি,
এখনও পারিনা। আমারও কষ্ট হয়।
জানোতো, এখানে নাকি সুখ আর সুখ
কাঁদতে হয়না, কষ্ট পেতে হয়না ।

তারা তো জানেনা তোমায় ছাড়া
এই স্বর্গসুখ আজ আমার
নরকে পরিণত হয়েছে।
বিশ্বাস কর, তোমার কষ্ট দেখে
আমারও ভীষণ কষ্ট হয়, কিন্তু
এখন আমি আর কাঁদতে পারিনা ।

আমার নিরব কান্না আর যন্ত্রণায়
আকাশের সব মেঘ
কেঁপেকেঁপে উঠে, বৃষ্টি ঝরে।
দেখ আজ আমি বৃষ্টি নিয়ে এসেছি;
আমার চিতার আগুনে পুড়ে যাওয়া
তোমার দগ্ধ শরীর ও হৃদয়
আজ সারারাত বৃষ্টিতে ভিজবে
নিভে যাবে তোমার সমস্ত যন্ত্রণা।

লক্ষ্মিটি, দেখ প্রতিদিনের মত আজও
আমি বৃষ্টি মেখে তোমায় জড়িয়ে রাখছি
সারা শরীরে হাত বুলিয়ে দিচ্ছি,
জ্বালাময় চোখে স্বপ্ন ছুঁয়ে দিচ্ছি..
আজ কতদিন হলো তুমি ঘুমাওনি
এসো, এবার বৃষ্টি মেখে ঘুমাও...

২০ মার্চ, ২০১৭
ঢাকা, বাংলাদেশ।