বনজ্যোৎস্না!!!
ডাকটি শুনে চমকে উঠেছিলাম
এর আগে কেউ এই নামে ডাকেনি ।
ফিরে তাকালাম পিছনে ;
না, চিনতে পারিনি তোমায়
কোথায়ও দেখেছি বলেও মনে পড়েনা
যে নামে ডাকলে নামটি বড্ড চেনা,
খুব বেশি আপন,
তবে কি এ আমার পূর্বজন্মের নাম!!!
হয়তো হবে।
কিন্তু তুমিই বা জানলে কি করে ?
নিঃসংকোচে চিৎকার করে
সকলের সামনে কি করে ডাকলে এই নামে !!

আমি বরুণ, ভুলে গেছ!!!
তুমি হাসলে.....

এবার মনে পড়ল,  সমুদ্র দেবতা;
ঠিক চিনতে পারলাম।
তোমার উচ্ছ্বলতা, কলকল হাসি
আজও লেগে আছে চোখে মুখে-
এমন উচ্ছ্বল হাসি এই জীবনে
আমি কাউকেই হাসতে দেখিনি
রোজ আমাদের দেখা হতো জলের ধারে
প্রেমের কথা হতো, গান হতো
দুজনে হারিয়ে যেতাম
কখনো বনে কখনও গভীর সমুদ্রে ।

তুমিই ছিলে এখানের একমাত্র অধিপতি
আমাদের প্রবল অনুভূতি ছুটে চলতো
বন ও সমুদ্রের সীমানা ছাড়িয়ে অনেক দূরে
সুর্য ও জ্যোৎস্নার দেশে -
আলো মেখে ফিরে আসতাম ঘরে।

জলের মৃদু তরঙ্গে দুলে উঠতো আমার মন
উচ্ছসিত হাসি মিশে যেত ঢেউয়ের সাথে
দূরে পথ হারানো কোনো নাবিক
ছুটে আসতো হাসির শব্দে
আমার দুই চোখে জ্বলে উঠতো জ্যোৎস্না
সেই আলোয় পথ চিনে নাবিক
ফিরে আসে আপন গন্তব্যে।।

আজও সমুদ্র আমায় ভীষণ টানে
বারবার ছুটে যাই জলের কাছে
তীরে বসে থাকি আনমনে;
সমুদ্র গর্জণের সাথে গড়ে উঠে সখ্যতা।

এখন বুঝতে পারি হাজার বছর আগে
তোমার আমার সম্পর্ক
আজান্তেই টেনে আনে সমুদ্রে
দেহ পরে থাকে জলের কিনারে,
মন ছুটে চলে মহাসমুদ্রের মাঝখানে
ঢেউয়ের দোলায় হারিয়ে যাই দূরে
সূর্য দেবতার মহাকাশে;
আবারও ফিরে আসি
তীরে ফেলে যাওয়া
তোমার বনজ্যোৎস্নার
দেহের খোলসে.......

৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭