কবিতা: আমার নাম বাংলাদেশ
এত রক্তনিঃসরণেও মা সেদিন আর্তনাদ করেনি
ম্লান হয়নি তার মুখের এতটুকু হাসি
কেবল গর্ভে বেড়ে উঠা এই আমারই মুখ চেয়ে
পার করেছে রৌদ্র দিন-কত রোদ্ধনিশি ।।
বারবার নড়ে উঠেছে আমার নরম তুলতুলে দেহ
যখন আর্তচিৎকারে ফেটে পরেছে চারিদিক
যুদ্ধের বিভীষিকায় নাকে আসে বারুদের গন্ধ
তখনও দেখি আমার মা একেবারেই ঠিক ।।
মায়ের গভীরে ঘুমিয়েছি কত শান্ত নিবিরে-আদরে
ঘুম ভাঙলেও দেখেছি মায়ের স্বপ্নীল চোখ
বিজয়ের উল্লাসে খুশির জোৎস্না ঝরে তার আঁচলে
তাই দেখে দেখে আমার ভরে উঠেছে বুক।।
কত রক্তে ভেজা পিচ্ছিল পথে মা হেটে গেছে বহুদূর
হানাদারের তীব্র থাবায় ছিড়েছে মায়ের বস্ত্র
আমি ভিতর থেকে বারবার চিৎকার করেছি
মা বলেছে, ওরে সোনা, তুই আমার বিজয়ের অস্ত্র ।।
আমি সেই থেকে বেড়ে উঠছি মায়ের সবুজ তলদেশে
কতবার ভিজেছি মায়ের প্রাণে গোপন-রক্তক্ষরণে
আতঙ্কে-ভারি নিঃশ্বাসে আমার কেটেছে নয়টি মাস
কতবার কেঁপেকেঁপে উঠেছি অস্ত্রের ভারি গর্জনে ।।
অবশেষে, মুখ থুবরে পড়লো হায়েনারা, জন্ম হলো আমার
ভোরের সোনালী সূর্য হেসে উঠলো মায়ের কপোল জুড়ে
লাল সবুজে ঢেকে দিলো নতুন তুলতুলে মাটির দেহ
আমার নাম রেখেছে “বাংলাদেশ” কবিতার অক্ষরে ।।
(বিজয়ের মাসে আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস)
১ ডিসেম্বর ২০১৬।