সোনার কাঁকন
মাকে আমি দেওয়ার কথা এক জোড়া সোনার কাঁকন
সেই সুযোগে চেয়েছিলাম নিতে দোয়া যে অগনন।
সাধ-আশা যত, বাইরে ছিল সাধ্যে নাহি কুলোয়
দিন গেছে মার উঠান বারান্দা আর হাঁড়ি-চুলোয়।
সকাল-সাঁেঝ ফুরসত ছিল না মায়ের একটু খানি,
চব্বিশ ঘন্টার বেশির ভাগ বাইরে থাকত তার স্বামী।
ছেলে-পুলে মানুষ করার ছিল তার তীব্র বাসনা
বড় হয়ে ছেলেরা কেউ তার খোঁজ-খবর নেয় না!
আমার মায়ের এত দুঃখ-কষ্ট সহজে ভুল পারি না
দু’চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রুধারা আর কান্না।
এ পৃথিবী ছেড়ে গেল একদিন তার প্রাণ প্রিয় স্বামী
প্রাণের চেয়ে প্রিয় ছিল যে, সোনার চেয়েও দামী
সকাল বেলা ঘুম থেকে দেখি হাতে বাসন-কোসন
এমনি তরো চলছিল তার দৈনন্দিন জীবন যাপন।
ছেলে-মেয়েদের সুখ দেখাতে পিতা-মাতার সুখ
বিপদ-আপদে তারা পেতে দেয় অসীম সাহসে বুক।
মাকে আমি কখন দেবো এক জোড়া সোনার কাঁকন,
সেই ভাবনায় ঘুম আসে না দু’চোখে আর এখন।
অসুখ-বিসুখ যখন হত, তখন কার কথা স্মরি,
কোলে কাঁধে করে নিয়ে যেত তখন ডাক্তারের বাড়ি।
সোনা-যাদু মনি ভাল হোক এই কামনা ছিল তার
বাড়ি ফিরতে তাড়াতাড়ি বাপেরে তাগিদ বারবার।
মায়ের হাসি মুখখানি আমি কেমনে দেখি বলো
সেই চিন্তায় আমার সবই হয়ে যায় এলোমেলো।
খোদার কাছে দোয়া মাগি ওগো আল্লাহ আমার
মায়েরে আমার সুস্থ রেখো প্রার্থনা কাছে তোমার
মাকে ছাড়া আমি এখন তো আর কিছু বুঝি না,
বন্ধুদের বলি মাকে কখনো দুঃখ দিও না।
সোনার কাঁকন কবে কিনে দেবো মাকে আমি
অর্থ-বিত্ত, শক্তি-সাহস দাও গো অন্তর্যামী
যদি না পারি সোনার কাঁকন মাকে দিতে কিনি
আমার অপরাধ ক্ষমা করে দিও ওগো মা-জননী।