ডাক এসেছে মহানায়কের পক্ষ থেকে
মহাসমরের আমন্ত্রণ! বজ্রকন্ঠে উদাত্ত আহ্বান।
“যার যা আছে তা-ই নিয়ে প্রস্তুত থেকো..”
শত্রুসেনা ঘাড়ের কাছে হানা দেবে যেকোন সময়।
বন্দরে অগোচরে অলক্ষ্যে সোয়াতের আগমন
খালাস করছে অস্ত্র, ঝাঁপিয়ে পড়বে নিরস্ত্র মানুষের উপর
ভয়াল সেই রাত, দানবীয় অপারেশন সার্চ লাইট
সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছার-খার করেছে হানাদাররা
বিক্ষিপ্ত বাড়ি-ঘর, ক্ষত-বিক্ষত লাশের স্তুপ,
রক্তাক্ত মুখচ্ছবি, দানবীয় বীভৎসতা!
কেউ কেউ পালিয়ে বেঁচে আছে কোন মতে।
ও পাড়ার সহপাঠিরা চলে গেছে যুদ্ধে
ভীরু-কাপুরুষের ন্যায় জীবনপাত করার মানে কী হয়!
ডাক এসেছে মহানায়কের পক্ষ থেকে আবারো
নাও প্রশিক্ষণ, হাতে তুলে নাও শত্রু বিনাশী মারণাস্ত্র
বাবা চলে গেছে বিদায় নিয়ে সাজানো সংসার থেকে
দাদা-দাদী, মা এবং আমরা তার ক’জন অবুঝ সন্তান
যদি বেঁচে থাকি তবে দেখা হবে দুনিয়াতে
নয়তো হবে দেখা চিরসুখের জান্নাতে।
একটি সবুজ পতাকা এবং জন্মভুমিকে হায়েনার হাত থেকে
ইস্পাত কঠিন শপথ নিয়ে চলছে মরণপণ সংগ্রাম।
যুদ্ধ শেষে বিজয়ী বীরসেনানী, মুক্ত স্বদেশ
লক্ষ শহীদের রক্তের উপর ভাসছে পবিত্র মাটি
বিধ্বস্ত দেশকে গঠন করতে হবে, আরেক মহাসমর
অর্থনৈতিক মুক্তিই লক্ষ্য, সুকঠিন সেই মনযিল।
ঘরে বৃদ্ধ বাবা, অশীতিপর পরপারের ডাকের অপেক্ষায়
কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি এখনো।
অদৃশ্য শত্রুর হাতে বন্দী, আষ্টে পৃষ্ঠে অক্টোপাসের ন্যায়।
বাবা যেভাবে মহভনায়কের ডাকে সাড়া দিয়ে
শত্রুমুক্ত স্বাধীন দেশ গড়তে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
ভাবি আজ, বাবার মতো হতে পারলাম কই?