সব সময় বাড়ির কাছের মানুষই ট্রেন ফেল করেনা, কখনো দূরের মানুষও করে । এই যেমন আমি । ধামরাই থেকে বাংলা একাডেমি । জ্যাম না থাকলে দেড় ঘন্টার পথ, কিন্তু আমার লাগল তিন ঘন্টার উপরে । অর্ধ বেলা অফিস করে নিতে হলো কিছু সত্য-মিথ্যার আশ্রয়, তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে অনেকটা তাড়াহুড়ো করে বের হয়েও মেলায় পৌছলাম সন্ধ্যা ৬টার পর ।
ততক্ষণে আসরের সমবেত কবি-বন্ধুরা সাক্ষাৎ শেষে অনেকেই যে যার গন্তব্যে । তবে আমার যাওয়া যে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে, সেকথা বলা যাবে না । কারন যে দু'জন কবি মানুষকে খুব কাছ থেকে দেখার জন্য মনের মধ্যে একটা বাড়তি আগ্রহ নিয়ে গিয়েছিলাম, সে দু'জনকে অবশ্য পেয়ে গেলাম আরো ১০/১২ জন কবি বন্ধুর সাথে । তাদের একজন হলেন আসরের সবার প্রিয় এডমিন মহাশয় মানে পল্লব ভাই । ছবিতে যাকে আমার বাম পাশে দেখছেন । আর আরেক জন হলেন শ্রদ্ধেয় কবি জালাল উদ্দিন মুহম্মদ, যাঁর কবিতা আমাকে সব সময় মোহাবিষ্ট করে রাখে ।
এরপর আসি কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল ভাইয়ের কথায়, যাকে আমি আগেই ফোনে জানিয়েছিলাম বই মেলায় যাবার কথা । বুলবুল ভাই শুধু আসরের একজন কবি বন্ধুই না, তাঁর সাথে আমার আত্মিক সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের । ছিলেন কবীর হুমায়ুন ভাই, যাকে একজন সফল উদ্যোক্তা বলা যায় ; এ পর্যন্ত বাংলাদেশে কবিতার আসরকে ঘিরে যতগুলো ছোট-খাটো সম্মেলন হয়েছে তার সব গুলোই তিনি নিজ দায়িত্বে সফলভাবে আয়োজন করেছেন । সেই সুবাদে উনার সাথে আমার পরিচিতির পর্বটা বেশ দীর্ঘ দিনের ।
শেষ মুহূর্তে আমি নজরুল মঞ্চে গিয়ে যে কয়জন কবি বন্ধুকে পেয়েছি তাদের সবার নামও ঠিকমত জানার সুযোগ হয়নি, তবু যাদের নাম মনে আছে তারা হলেন কবি শ.ম. শহীদ, কবি মামুন, তরুণ কবি ফাহাত আলী এবং রুনা লায়লা । ছবিতে যাকে ডান পাশ থেকে প্রথমে দেখছেন ।
এবার আসি আসরের বিমোহিত কবি গোলাম রহমানের সাহেবের কথায় । যাকে দেখে এক দিকে যেমন আমি অবাক হয়েছি অন্যদিকে নিজেই বিমোহিত হয়েছি । ষাট উর্দ্ধ এই কবির সাথে না মিশলে বোঝা যাবে না যে বয়সটাকে কিভাবে উনি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মনের যৌবনকে এখনো ধরে রেখেছেন । ছবিতে উনি বাম পাশ থেকে প্রথমে । শ্রদ্ধেয় এবং প্রাণবন্ত এই কবিকে নিয়ে পুরো মেলায় ঘুরেছি । শেষ পর্যন্ত সাথে ছিলেন প্রিয় কবি জালাল উদ্দিন মুহম্মদ । এখানে বলে রাখা ভাল যে, ওপার বাংলার শ্রদ্ধেয় ও প্রিয় কবি প্রনব দা, কবি গোলাম রহমানকে কি নামে অবিভিত করেছিলেন, মনে নেই । তবে উনাকে আমি বিমোহিত কবি কেন বললাম তা পাঠক কবি বন্ধুদের কাছে একটা ধাঁ ধা হয়েই থাক ।
যে কোন লেখায়'ই দীর্ঘ করা আমার একদম অপছন্দ, কিন্তু শেষ কথাটা তো রেখে দিয়েছি, সেটা না বললে হবে কি করে ? আমি নজরুল মঞ্চে পৌছানোর পর যখন পল্লব ভাইয়ের সাথে পরিচিত হলাম তখন পাশে দাঁড়ানো কবি রুনা লায়লা বললেন, ইনি হচ্ছেন মিসেস পল্লব । উভয়ে পরিচিত হলাম । দেখলাম দীঘির জলের মতো ঠান্ডা দৃষ্টি যেন চেয়ে আছে শুভ্র মেঘের দিকে । খুব বেশি সুন্দরের দিকে আমি অনেকক্ষণ চেয়ে থাকতে পারিনা । তবে পল্লব ভাই নিশ্চয় পারে, তা না হলে এ দৃষ্টিকে তো চিনতে পারার কথা না । পল্লব ভাই, শুভ কামনা আপনাদের জন্যে, শুভ কামনা বাংলা কবিতা আসরের সকল কবি বন্ধুদের জন্যে । সময় পেলে আবার নিশ্চয় দেখা হবে আগামী ২০ তারিখে ।