বাস্তবতার মুখোমুখি কারো মুখে মা ডাক শুনলেই
শুন্য এ বুকের ভেতরে ঘুমন্ত কষ্টগুলো জেগে ওঠে
মা তুমি এখন দূরাকাশের ধ্রুবতারা আমি নির্ঘুম রাত
তোমার স্বর্গীয় স্পর্শ আমার চোখে দুরাশার স্বপ্ন শুধু।
দুষ্টুমিতে মুক্ত মাঠের খেলায় আমি রোদ্দুরে পুড়ে
কখনও সখনও উলঙ্গ উল্লাসে বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজে
সর্বাঙ্গে ঘোলাজল কাদা মাটি মেখে সাঁঝের মায়ায়
দুরু দুরু কম্পিত বুকে নীরবে যখন বাড়ি ফিরতাম
তখন তোমার মুখে কষ্টের কালো মেঘ জমে উঠতো।
অনলবর্ষী বক্তার মতো অগণিত বকা দেওয়ার শেষে
মৃদু হেসে বলতে লক্ষী ছেলে তুমি পুকুর ঘাটে যাও
পরিষ্কার—পরিচ্ছন্ন হয়ে এসে পড়ার টেবিলে বসো
সদ্য কারোমুক্ত আসামির মতো অনাবিল আনন্দে
পাঠ্য—পুস্তকের পাতায় সতত যেন বিলিন হয়ে যেতাম।
শরীরে কিছুটা ক্লান্তির ঝড় বয়ে গেলে পিছনে তাকাতেই
দেখতাম দুধের গ্লাস হাতে নিরবে তুমি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছো
চোখে চোখ পড়তেই মাথায় হাত বুলিয়ে খুব কোমলকণ্ঠে
আস্তে করে তুমি বলতে—লক্ষী ছেলে দুধটুকু খেয়ে নাও
বাঁধভাঙা খুশিতে ছোট্ট ঘরে শান্তির সুধা নেমে আসতো।
এখন ক্ষুধার্ত কুকুরের মতো শূন্য উদরে অদৃশ্য আগুন নিয়ে
জীবন জীবিকার তীব্র তাগিদে উদয়—অস্ত অবিরাম রাজপথে
হন্যে হয়ে ছুটে চলি তুমুল রোদ্দুরে পুড়ি বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজি
অবশ্য এসব নিয়ে আজ আর কারো কোনো অনুশোচনা নেই।
আমার ঘরে না ফেরা নিয়ে প্রতীক্ষার প্রহর গোনে না কেউ
অথচ, পকেটের নগদ খোঁজখবর নিতে মুঠোফোনের ডাক আসে।
কবি মাসুদ মুহছি’কে কবিতাটি উৎসর্গ করা হলো