নিভৃতচারী অগ্রজ কবি বাশার মাহমুদকে

এই আলোকিত পথে প্রথম যখন আমার পদযাত্রা শুরু
দীর্ঘপথ পরিক্রমায় তোমরা তখন পৌঁছে গেছো গন্তব্যে
হয়তো কষ্টার্জিত আনন্দে ছুঁয়েছো ওই অসীম আকাশ
কতোটা দুর্ভেদ্য পথ পেরুলে তোমাদের স্বর্ণালি প্রান্তর?

মাইকেল, রবি, নজরুল, জসীম, জীবনানন্দ, সুকান্ত—
তোমরা সবাই কী এখন সমন্বিত কবিতার আড্ডায় ব্যস্ত
ধর্ম—বর্ণ বৈষম্যের বিভেদ পদদলিত করে মানুষের মহোৎসবে
মুক্তকন্ঠে সম্মিলিত সুরে অনাবিল আনন্দে গাও সাম্যের গান?

আমরা সবাই চেয়েছিলাম সুকান্তের বাসযোগ্য এক পৃথিবী
ওরা ক’জন চেয়েছিল আকাশস্পর্শী অট্টলিকা, সুখের—স্বর্গ
চাওয়া পাওয়ার এই বিস্তর ব্যবধানে নবনির্মিত নরকুন্ডে—
ফিনিক্স পাখির মতন মরে মরে আমরা আবার বেঁচে উঠি।

দীর্ঘদিন বহুমাত্রিক দূষণবৃত্তে বন্ধি আমাদের নগরীক জীবন
পল্লির মেঠোপথেও জমেছে আবক্ষ পাথর, কষ্টের কংক্রিট
শহরের অলিতে গলিতে বাসা বেঁধেছে বকসাদা অন্ধকার—
মাঝে মাঝেই মুখোশধারী মানুষের ভিড়ে হুমরি খেয়ে পড়ি।

নিঃশ্বাসে জড়িয়ে যায় নাভিমূল থেকে উঠে আসা দীর্ঘশ্বাস
‘শহীদের পত্রালাপ’ কবিতা পাঠ শোনার কোথাও কেউ নেই
ইদানিং এম. এম. হাফিজ মেমোরিয়াল পাবলিক লাইব্রেরিতে
স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পৌরাণিক পুস্তকের সান্নিধ্যে ছুটে যাই।

তোমার প্রস্থানের পদচিহ্ন নবায়ন করি অপ্রতিরোধ্য আঁখিজলে
দুঃসহ—যাপিত জীবন এখানে কারো কান্নার নেই কোনো অবসর
বেদনার মহাসমুদ্র সৈকতে জীবন যেন অবহেলিত পাথরের নুড়ি
যদি নন্দিত নরক থেকে পরিত্রাণ পাই আবার দু’জনার দেখা হবে।