আমরা সকলে আতঙ্কে কাঁপতে লাগি। কে হতে পারে? এই বলে আমরা সকলে দৌড়ে বাহিরে গিয়ে আসে পাশে থাকাই। কিন্তু কেউ সেখানে নেই‌। হয়তোবা সে খুনি ছিলো। এই বলে আমরা যখন হামিদকে লাশের পাশে যাওয়ার জন্য কামরায় প্রবেশ করি। কি আশ্চর্য লাশ কোথায়। দরজা তো বন্ধ ছিলো। আর আমরা সবাই তো হামিদকে একা রেখে বাহির হয়েছি। লাশ তো আর একা উঠে চলে যেতে পারে না। এই চিন্তা করতে করতে আমাদের মাথায় প্রচুর ব্যথা ও যন্ত্রনা শুরু করতে লাগলো। কি জবাব দিবো হামিদের পরিবার কে। সে কোথায় তার লাশ কেমনে উধাও হয়ে যায়। তখন শারমিন বলে উঠে, আমি আর এক মুহূর্তের জন্য ও এখানে থাকবো না। আমরা তখন তাকে বুঝাতে লাগি কোথায় যাবি কেমনে যাবি। কোনো গাড়ি নেই। রাস্তার পথ ও জানা নেই। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতে লাগলো। তখন কেয়ারটেকার বাবু বলে, চিন্তে নেই বাপু কাল সকালে আমি ভেনওলা কে নিয়ে আসবো এর তোমরা ভোর সকালে চলে যেতে পারবা। এই কথা শুনে আমরা একরাত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম। রাত তখন খুব গভীর। কেয়ারটেকার বাপু হাতে হারিকেন নিয়ে এদিক ওদিক পাহাড়া দিতে থাকে। আমি জিজ্ঞেস হয়ে বলি, কেয়ারটেকার মশাই ঘুম যাবেন না। কেয়ারটেকার বলে, না বাপু আপনাদের পাহারা দিচ্ছি। যদি কোনো দুর্ঘটনা না হয়। এই শুনে আমি আবার ঘরে প্রবেশ করলাম। কিন্তু আমার মাথায় তখন ও হামিদের কথা বেশ মনে পড়ছে। কোথায় তার লাশ। তখন জানালার পাশে হালকা একখানা আলো ভেসে এলো গ্লাসে। আমি তখন উঠে তাকাতে শুরু করলাম। তখন হঠাৎ পিছন থেকেঠ আমার ঘাড়ে হাত দিতে আমি কে কে বলে আঁতকে উঠি। পিছনে ঘুরতে দেখি নাজিরা। আমার দিকে কান্না কান্না মুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আর কিছু যেন বলতে চাচ্ছে। আমি তখন তাকে বলি কিছু কি বলবি। সে আমার দিকে আতঙ্কের মতো বড় বড় ডাগর ডাগর চোখ করে তাকিয়ে রয়েছে। আমি যখন ঘুম যেতে কামরায় যেতে লাগি তখন সে আমার হাত ধরে ফেলে। আমি তখন আবার দাঁড়িয়ে গেলাম। তখন দেখি নাজিরা  মুখ খুলে রেখেছে। আমি তার মুখের ভিতর দেখতে অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রয়েছি। তার জিহ্বা নেই। তার জিহ্বা কে কেটে দিয়েছে। আমি তখন বলি কে করেছে তোর এই অবস্থা। আমার তখন মাথা কাজ করছে না। তখন সে ইশারায় বুঝাতে চেষ্টা করে। তার মাধ্যমে আমি কিছু আন্দাজ করি হামিদকে যে হত্যা করেছে। তার প্রমাণ বলতে না পারার জন্য নাজিরার জিহ্বা কেটে দিয়েছে। সে আরো ইশারায় বলতে থাকে তার হাতে চুরি ছিলো এটি দিয়ে সে হামিদকে হত্যা করে নি। সে চুরি দিয়ে হত্যাকারি হামিদকে প্রথমে হত্যা করার পর। নাজিরার হাতে চুরি ধরিয়ে দিয়ে। নাজিরার হাতকে জোর করি ধরে তার জিহ্বা কেটে দিয়েছে। যখন সে এইগুলো অভিনয় করে আমাকে বুঝাচ্ছে আমার তখন আর মাটির উপর পা আছে নাকি বিশ্বাস হচ্ছে না। তখনি নাজিরা আরো বড় বড় চোখ করে আমার পেছনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি তখন পেছনে তাকিয়ে দেখি শরিফ কে টানতে টানতে কালো কাপড় পড়া দানব আকারের ব্যক্তি তাকে মাটিতে ফেলে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা তখন হতবাক হয়ে দৃশ্যে দিকে তাকিয়ে রয়েছি। আমি তখন নাজিরার হাত টান দিয়ে রুমের দরজার সামনে গিয়ে দেখি সম্পূর্ণ খাটে রক্ত। কেউ নেই সেখানে। আমি আর নাজিরা পাগলের মতো রক্তের দাগ অনুসরণ করতে করতে নিচের তলায় গেলাম। আর দেখি রক্তের দাগ রাজবাড়ীর বাহির পর্যন্ত চলে গিয়েছে। আমার তখন আর সাহস হচ্ছিল না বাহিরে যাওয়ার। কিন্তু আমার মন ও আর মেনে নিতে পারছে না হামিদের মতো তাদের এই অবস্থা হতে দেখে। আমি নাজিরা কে সঙ্গে করে নিয়ে রক্তের দাগ অনুসরণ করতে করতে একটি আলাদা বাড়ির মতো ছোট একখানা খুঁটির ঘরে দাঁড়ালাম। কিন্তু প্রবেশ করি নি। আশেপাশে কোনো কিছু দেখা যায় কিনা খুঁজতে থাকি। তখন জানালা একখানা দেখতে পাই। তার নিচে ফুটো ছিল সেখানে চোখ দিয়ে দেখতে আমার হাত পা নিস্তেজ হয়ে রয়েছে। একি দেখলাম আমি। আমার সকল বন্ধুদের গলা অর্ধেক করে কাটা আর পায়ের সাথে লোহার শিকল দিয়ে উপরের দিকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখেছে। আর তাদের সামনে একজন দানব আকৃতির বুক উঁচু করা ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে। আর তার পাশে হারিকেন নিয়ে কেয়ারটেকার। আর আমার সাথীদের শরীর থেকে সকল প্রকার জিনিস চুরি দিয়ে বের করে নিচ্ছে। আর কেয়ারটেকার বলতে লাগে কোটি টাকার জিনিস। আরো বলে উস্তাদ আরো দু জন রয়েছে। দানব আকারের ব্যক্তি বলে তারা আমাদের পেছনে রয়েছে। এই বলতে দানব আকারের ব্যক্তি জানালার ফুটোর দিকে তাকিয়ে অট্ট ভাবে হাসতে লাগলো।

                       (সমাপ্ত)