শুনো মাহবুবা!
তোমার আঁখিতে আঁখি রাখিয়া ভাব প্রকাশে নিশি কাটিবে, অপেক্ষা করিবে পথিক দুই যুগেরও অধিক ।
আঁখি জোড়া তোমার হরিণের বেশে
দেখিতে লাগে তোমায় হরিণয়না
তোমার রূপ দেখিয়া কবি কাব্য লিখিবে
নাম রাখিবে তোমার রাইহানা।
শুনো মাহবুবা!
তোমার ঐ মিষ্টি হাসি দেখিয়া ভুলে যাইবে হিমাংশুর কথা
জোৎস্না রাতের চাঁদকে না দেখিয়া কবি দেখিবে তোমার হাসি। নির্মলেন্দু গুণ তোমায় দেখিলে লিখিতেন আবার,
"তোমার ওষ্ঠে যখন হাসির ফুল ফোটে
অধর থাকে পাহারায়
তোমার একটি হাসিও যেন না হারায়,
আমার কী ভালো যে লাগে আমি মুগ্ধ হয়ে দেখি
তোমার অধরোষ্ঠের খেলা।
ভাবি আহা! কোন পাপে যে আমি জন্মেছিলাম আগে
তোমার ওষ্ঠফুল ফুটলো, যখন আমার সন্ধেবেলা।”
শুনো মাহবুবা!
শীতের সকালে শিশির ভেজা প্রান্তরে পূর্ব গগনে ভানুর কিরণে
তোমার হাতে হাত রাখিয়া কবি সূর্যস্নান নিবে।
কাননে কাননে হাঁটিয়া ফুল তুলিবে
গুঁজে দিবে তোমার কেশ বাঁধানো খোঁপায়;
কপোলে তোমার অধরোষ্ঠের ছোঁয়া দিবে
দিবানিশি কাটিবে তোমার, তাঁহার ভালোবাসায়।
শুনো মাহবুবা!
অপরাহ্নে পথিক দাঁড়িয়ে রবে সাদা পায়জামা-নীল পাঞ্জাবী পরে তুমি সাজগোজ করিয়া বোরকা-হিজাব পরিধানে করিবে দেরি, তোমার অপেক্ষায় আছে পথিক অভিমান করিবে বেশ।
তোমার মুচকি হাসি আর মায়াবী আঁখির নজরে
স্তম্ভিত পথিকের অভিমান কেটে হইবে মায়ার নহর;
তোমার সাথে রিকশায় ঘুরিয়া বেড়াইবে
দেখিবে দুজন কংক্রিটে ভরা সুরভিত সুন্দর শহর।
শুনো মাহবুবা!
চাঁদের আলোয় দক্ষিণা বাতাসে নীরব-নিস্তব্ধতায় নিশির অর্ধ সীমা কেটে যাবে; কবি তোমার দিকে তাকিয়ে রবে দীর্ঘ সময়।
রাত্রি তাহার শেষ সীমায় উপনীত হলে তোমার গুণ নিয়ে কবি বলিতে শুরু করিবেন;
“তুমি যেমনি সুন্দর তেমনি কোমল
হৃদয় যেন ডাবের শাঁস;
তুমি সূর্যের ছায়া এক মায়াবতী
ভালোবাসা আছে একরাশ।
তুমি বুদ্ধিমতী অপরূপা
তুমি তরঙ্গিনী শত চম্পা;
তুমি মৃণালিনী স্বরস্বতী
তুমি বিদ্যাপৃষ্ঠ অশ্রুদুতি।
তুমি বসন্ত-বর্ষা-শীত
তুমি যে মিমোসা লতা;
তুমি শিল্পীর গেয়ে যাওয়া গীত
তুমি ফাল্গুনে ঝরা পাতা।
তুমি শিউলি-বেলি-হাসনাহেনা
রজনীগন্ধার ঘ্রাণ;
তুমি নিশিতে ছোঁয়া চাঁদের আলো
অন্ধকারে অম্লান।
তুমি দূর আকাশে মেঘের খামে
ঘনঘটা নীলের হাতছানি;
তুমি আমার ঘরের সুরভিত
গোলাপ-জবার ফুলদানি।”
শুনো মাহবুবা!
কবি তোমার ঐ মিষ্টি হাসি দেখে কাটিয়ে দিবে ধরণীর সবগুলো দিন। দীঘল কেশধারী কন্যা তুমি রোজ সকালে রোদ্দুরে পাগল করিবে, ছড়িয়ে দিয়ে নতুন ঘ্রাণ;
তুমি এক মিষ্টি গোলাপ!
রোজ বিকেলে ফুটে উঠবে যার সৌন্দর্য,
তোমায় দেখে ভরে যাবে দূরে থাকা ঐ পথিকের প্রাণ।