জুলাইয়ে যারা প্রাণ দিয়েছে
তাঁরা বাংলার বীর সেনা,
তাঁরা বাহান্ন'র বাহক,
তাঁরা একাত্তরে দেশ প্রেমিকদের উত্তরসূরি।
যারা প্রাণ দিয়েছে বাংলায়;
চব্বিশের জুলাই বিপ্লবে রক্তে রঞ্জিত পিচ ঢালা খোলা ময়দানে।
তাঁরা পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য লড়েছে,
তাঁরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়েছে,
তাঁরা বাংলায় ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়েছে।
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে কেউ হারিয়েছে ভাই,
কেউ হারিয়েছে বাবা,
কেউ হারিয়েছে তাঁর বোন,
কেউ বা হারিয়েছে নয়নের মণি ছোট্ট শিশুটি কিংবা হৃদয়ের আঙ্গিনায় আগলে রাখা প্রেয়সী ছিল যে জন।
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে,
বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব কিংবা পশ্চিম প্রান্তে।
প্রাণ দিয়েছে সেই পার্ক মোড়ে,
সিনা টান টান করে শৌর্য বিত্ত দেখিয়ে বাংলার জনতার বুকে সাহস জোগানো চব্বিশের অগ্র নায়ক আবু সাঈদ।
প্রাণ দিয়েছে মুরাদপুরের উত্তপ্ত ব্যারিকেডে ফারুক নামে আসবাবের সেই কর্মচারী।
প্রাণ দিয়েছে ওয়াসিম, ফয়সাল, আসিফ, রিদোয়ান, ইয়ামিন, জিল্লু ও মীর মুগ্ধ।
মাত্র আঠারো বছর বয়সেই যে ছেলেটি পরিবারের হাল ধরেছিল, প্রাণ দিয়েছে হানিফ ফ্লাইওভারের সংঘর্ষে গুলিস্তানের ব্যাটারি দোকানের সেই সিয়াম।
ওরা প্রাণ দিয়েছে ওখানে;
রামপুরায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখে― ছাত্র, শিক্ষক, ডাক্তার, সাংবাদিক, রিকশাচালক।
পুলিশের গুলিতে মাথার খুলি উড়ে যাওয়া ট্রাকের সেই হেল্পার।
প্রাণ দিয়েছে মায়ের আদর-স্নেহে লালিত হওয়া আইজিটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
তার মায়ের কাকুতি শুনে হৃদয় বিদীর্ণ হয়েছিল সেদিন–“ছেলে হত্যার মামলা কার বিরুদ্ধে করবো আমি? বিচার চাইবো কার কাছে?” মাত্র বারো বছর বয়সেই প্রাণ দিতে হলো রাকিব নামের ছেলেটিকে।
ওরা প্রাণ দিয়েছে ওখানে,
উত্তরার নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে;
দেখেছিলাম সেদিন কোটিপতি মায়ের যত্নে গড়া ছেলের মুত্যুর সংবাদে আহাজারি― শহীদ হয়েছে মেধাবী ছাত্র আসিফ ও শাকিল।
প্রাণ দিয়েছে, নাঈমা সুলতানা, রিয়াসহ সত্তরেরও অধিক শিশু, কিশোর-কিশোরী;
জানালার পাশে গুলির আঘাতে মৃত্যু হওয়া আদরের সেই কন্যাটি।
জুলাই-আগস্টে প্রাণ দিয়েছে নয়শত কিংবা আরো বেশি,
আহত হয়েছে ত্রিশ হাজারেরও অধিক;
৫ই আগস্ট বিজয় উদযাপন হয়েছে
স্বাধীন করেছে তাঁরা সোনার এ বাংলা,
পালিয়ে গিয়েছে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার।
যারা প্রাণ দিয়েছে চব্বিশের বাংলায়,
আমরা তাঁদের দোসর,
আমরা হলাম জেন-জে
রুখে দিবো আছে যত কালো হাত, তৈরি করেছি মূলমন্ত্র
বাংলাদেশে বৈষম্য নিরসন করে প্রতিষ্ঠা করবো গণতন্ত্র।