মেঘমাঠেদের বিজন প্রান্তরে অগুনিত তারা আজ
মাঝ কপোলে একটি মাত্র চাঁদফুল-
ফুটিবে বলে কত কেঁদেছে ভাদরের রাত!
তবুও ফোটেনি বিজন প্রান্তরে একটি ফুল, চাঁদফুল।
অন্ধকার উপত্যকায় বিষণ্ণ সায়রে-
যখন কালপুরুষের দেশে শুরু হল কানাকানি, ফিসফাস
ওই বুঝি নধর ভাদরের ভরা যৌবন শেষ?
তখন একাদশীর রাতে শুধু ঝরেছিল কতগুলো ম্লান নিহড়।
ওইসব হারানোর উৎসব বুকে নিয়ে
কাঙালিনী ভাদর মড়া শ্যাওড়ার ডাল হতে নেমে
গোমড়া পেঁচার পায়ে কেঁদে মরে;
“ হে নীরব পেঁচা, বিষন্নতার নির্বাক দেবী!
ওই মেঘমাঠেদের কপোলে একটি চাঁদফুল দাও।
-বিগত বর্ষায় যে কান্না হেনেছিলে
তার দেনা-পাওনার কিঞ্চিৎ ঋণে চারদিকে গভীর আঁধার।
মেটাও সে ঋণ, দাও চাঁদফুল অনিবার।”
তমসা মাসীর মন গলে না, গলে না, গলে না।
মেটায় না সে আঁধারের ঋণ।
চারদিকে উঠে রব, স্বপ্তর্ষিমণ্ডলে কানাকানি, ফিসফাস
ওই বুঝি নধর ভাদরের ভরা যৌবন শেষ?
এই সব শুনে বেগুনী ল্যাভেন্ডারের বনে
ঝোনাকির পথ ধরে হেঁটে চলে ইঁদুরের গভীর মিছিল।
কিছুদুর পরে খরগোশের পাল, বেড়ালের ঝাক একে একে হয় শামিল।
ধীর পায়ে হেঁটে চলে, হেঁটে চলে ঝিনাই নদীর বাকে;
যেখানে গত শতাব্দীর শেষ চাঁদ ডুবেছিল,
মরেছিল নীরব পেঁচাকে ভালবেসে।
আরতির পরে শেষ অর্ঘ্যখানি ঝিনাইয়ের জলে ভাসিয়ে
গভীর মিছিল ফিরে আসে বুড়ো পেঁচার দরবারে;
হেথায় কাঙালিনী ভাদর ভিখ মেঙ্গে কাদিছে অঝোরে।
ইঁদুরের পাল হয় শামিল, প্রার্থনায় নুয়ে পড়ে-
“হে নীরব পেঁচা, বিষণ্ণতার নির্বাক দেবী
ওই মেঘমাঠেদের কপোলে একটি চাঁদফুল দাও;
মেটাও সে ঋণ, হঠাও গভীর আঁধার
দাও চাঁদফুল অনিবার।”
০৮.০৪.২০১৮
-ক্যারূ মানদল-
লাবাক, টেক্সাস