তিনদিনের না খাওয়া ছেলেটা
প্রদীপের টিমটিমে আলোয় পড়ে চলেছে-
কোঁচকানো চুলের নীচে কালো হরিণ চোখ-
চোখে তার স্বপ্ন,
স্বপ্ন বড় হওয়ার ৷৷


বিধবা মা দিন আনে,দিন খায় ৷
খেতে দিতে না পেরে মা যখন বালিশে দুচোখ ভেজায়;
ছেলে বলে: ‘কাঁদিস নে মা,
বড় হয়ে তোকে এত্ত ভাত এনে দেবো’ ৷৷

নিভন্ত আলোয় ক্লান্ত ছেলেটা পড়ে চলেছে-
চারিদিকে অন্ধকার,ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ
সারাগায়ে মশা কামরানোর দাগ ৷৷

ক্লাসে প্রথম হয়
মাধ্যমিকে first ৷
না খেতে পাওয়া ছেলেটা
দুরন্ত বেগে পেরিয়ে চলেছে কেরিয়ার এর সিঁড়ি ৷৷

একদিকে টিউশন,নাইট এ কলেজ
সবশেষে শিক্ষক-
গাছতলায় তার পাঠশালা,
পড়িয়ে চলেছে বস্তির ছেলেদের ৷
চোখে তার স্বপ্ন,
স্বপ্ন বড় হওয়ার ৷৷

ধীরে ধীরে বড় হয়  সে
বস্তির ছেলেরা ডাকে-
‘মাষ্টারজী খিদে পেয়েছে,’
ঘরের মুড়ি,চিঁড়ে বিলিয়ে দেয়
ওদের মধ্যে ৷৷

দিন যায়,রাত যায়
আধপেটা যুবকটা পড়িয়ে চলেছে-
মা এখন নেই,
বস্তির ছেলেরা আছে ৷
ওরাই  এখনআসে মাষ্টারজীর কাছে ৷

চোখে ছানি,হাতে লাঠি
গাছতলায় বসে পড়িয়ে চলেছে
এক অশিতিপর বৃদ্ধ ৷৷

তোবড়ানো গাল,ভাঙা চোয়াল
ঝাপসা চোখ আর পোড়া কপালের
সেই বৃদ্ধটা আজও পড়িয়ে চলেছে৷৷

নিভন্ত চোখ,কম-জোড়ী হাত
কুঁজো হয়ে যাওয়া শরীর৷
তবু নিভন্ত চোখে আজও স্বপ্ন,
স্বপ্ন বড় হবার ৷৷