বহু দেরী আছে সন্ধ্যা নামিতে
এখনও রয়েছে বেলা,
দুপুরের রোদ বদলেছে রঙ
আকাশে ছায়ারই খেলা।
ইট-জর্জর শহুরে বাগানে
নয়নতারার ফুল,
কাঁপিতেছে আজি মন্দ হাওয়াতে
উচ্ছল উৎফুল।
ফুটিয়াছে আজি নীলমণিলতা
স্তম্ভ আঁকড়ি ধরি,
বাগানবিলাস নামিয়া গিয়াছে
ভবনের সিঁড়ি ভরি।
আরও ফুটিয়াছে অলকানন্দা
পিংলাবরণী ফুল,
ফুটিয়াছে আজি রঙ্গনরাজি
ঝুমকো জবার দুল।
আরও ফুটিতেছে সন্ধ্যামালতী
সন্ধ্যা নামাবে বলি,
কিছু পরে তারা গন্ধ ঢালিবে
খুলিবে গোলাপী কলি।
ছাদবাগানের শাখাতে শাখাতে
উড়িতেছে প্রজাপতি,
শুভ্র বরণ ডানা দুটি তার
চঞ্চল তার গতি।
একটি-দুইটি শালিক আসিয়া
বসিছে খেলার ছলে,
কিচিমিচি ডাকি খুনসুটি করে
বৃষ্টির জমা জলে।
ছাদবাগানের প্রাচীরের পরে
বুলবুলি আসি বসে,
বাগানবিলাসে এলোমেলো উড়ে
চলে যায় অবশেষে।
অদূরে কোথাও নগরবীথিতে
দোয়েল বাজায় শিস,
আকাশে-বাতাসে সন্ধ্যারও গান
বাজিছে নির্নিমিষ।
অনেক উপরে চিলেকোঠা পরে
কাকেদের সভা হয়,
শূন্যেরও পরে চিলেদের দল
ঘুরে-ঘুরে হয় ক্ষয়।
ছাদবাগানের মাচানের পরে
পায়রারা এসে ফেরে,
শেষ বিকেলের মায়ামাখা রোদ
ঘুরে-ফেরে চারিধারে।
চপল চরণ দুটি খঞ্জন
বেড়ায় খাবার খুঁজি,
আজানের সুর ভেসে আসে ধীরে
সন্ধ্যা নামিবে বুঝি।
সিঁদুরের রঙ ছড়ায়ে পড়েছে
সারাটি আকাশ জুড়ে,
অনাদিকালের সন্ধ্যা নামিছে
আজি এ ধরণী পরে।