আমি অপেক্ষায় ছিলাম
মোঃ রায়হান কাজী
----------------------
আমি অপেক্ষায় ছিলাম দুবাহু প্রসারিত করে,
কোনো এক মধ্যেরাতে বুকের কপাট খুলে নির্জনে
যেভাবে প্রকৃতি অপেক্ষা করে রুক্ষতা কাঁটাতে বৃষ্টির জন্য,
জনজীবনে মাঝে সজীবতার অনিন্দ্য পরশ ফিরাতে।

আমি অপেক্ষায় ছিলাম কোনো এক রমনীর স্পর্শ পেতে,
যার ছোঁয়াতে পাথরেও ফুলের হাসি ফুটে উঠবে।
বড়সড় কংক্রিটের ঘেরা উন্মুক্ত শহরতলিতে,
তোমার মায়াভরা চাহনির আবেগঘন আহ্বানে।

আমি অপেক্ষায় ছিলাম জনশূন্য গগনতলে,
দু'হাত পাখির মতো মেলে ধরে আকাশের প্রাণে চেয়ে।
বক্ষপিঞ্জরের সমস্ত আবেগ উৎসারিত করে,
জোনাকিপোকার আলোয় তোমাকে নিয়ে বিলীন হতে।

আমি অপেক্ষায় ছিলাম অচেনা মানুষের সঙ্গ পেতে,
মেঘহীন জমির ফাটলের আহাজারির মতো করে।
যেখানে একফোঁটা বৃষ্টির আবেশে বৃক্ষে প্রাণ ফিরে পাবে,
সোনার ফসল মতো করে কৃষকের চোখের খুশির রেখাতে।

আমি অপেক্ষায় ছিলাম ঝড়ের রাতে দুবাহু মেলে ধরে,
বুকের গহীনে টনটনে ব্যথা নিয়ে মাঝরাতে,
শুধুমাত্র এক পরিপূর্ণ নারীর সংস্পর্শে পেয়ে,
জীবনের গতিপথ পাল্টানো অক্ষেপ নিয়ে।

আমি অপেক্ষায় ছিলাম তার গৃহপ্রবেশের দৃশ্য নিয়ে,
সুদূর আকাশের উল্কাপিন্ডে মাঝে সংগোপনে চেয়ে।
আলোক ঝলকানি লেগে ঝলমলিয়ে উঠলে,
সারা দেহে উষ্ণতার পারদ কতটা প্রদর্শীত হবে?

দূরন্ত বাসরের ধূপগন্ধী গাঢ় অন্ধকারে নিতম্বের নিচে,
একরাশ রজনীগন্ধা কী হেসে উঠবে হিয়ার নিকুঞ্জে?
দীর্ঘদিন অযত্নে পড়ে থাকা অবহেলিত পঞ্চচূড়ায়,
আমার কটিগুচ্ছ কবিতার বইয়ের পৃষ্ঠা থেকে।

তবে কী অপেক্ষার অবসান ঘটবে ফুলের নির্যাসে?
গোলাপের পাপড়ির মতো চুম্বনরহিত ঠোঁটমেলাতে।
অবিরল ধারায় দুজনের পরম আলিঙ্গনের ক্ষণে,
অকথ্য অনিঃশেষ পঙক্তিমালার উপাখ্যানে।