ধাবনের মেঘ

মনের বিস্তৃত অংশ ধুলোবালিছাই হয়ে উড়ে গেছে
যেমনে হারিয়ে গেছে সুতো টানা ঘুড়ি গ্রামীণ বৈঠকে,
দেখিনা মনের সেই অতীত কাহিনী প্রাচীন ঐতিহ্য
আমাকে নিরস্ত করে প্রশান্ত যৌবন যেন ঘুরপাকে।
মনের অস্তিত্ব কভু বিলীন হয়েছে ফিরে ফিরে দেখি
সোনালী মুগ্ধ অতীত সোনার মতন  ডুবে গেছে ধারে,
মনেহয় চাপা গেছে খনিজ আকারে মাটির গভীরে
মনের সমৃদ্ধ অংশ করেনা আমাকে প্রফুল্ল আসরে।
মনেহয় কোনো জলে মজবুত ঢেউ এসে নিয়ে গেছে
মনের গাঁথুনি দেয়া মনের আত্নীয় পর হয়ে ঝরে,
বিশাল অর্থ সাগরে সাঁতার কাটতে নিয়েছে উদ্যোগ
আমাকে ফেলে দিয়েছে হয়তো-চোখের নিখোঁজ বন্দরে।
একটু নিরবতায় বুঝতে দেইনি আঁখির পলকে
নীচে কিছু কালো দাগ বুঝিয়ে দিয়েছে কষ্টের তীব্রতা,
যেমন গ্রামীণ ঢেঁকি মুছে ফেলা হলো কুঁড়েঘর থেকে
প্রযুক্তির ডাল যন্ত্রে তৃপ্তির উল্টোটা মেনেছে খরতা।
ধাবনের মেঘ এসে উড়িয়ে নিয়েছে নিংড়ানো উদ্যোগে
পর্যায়ে করে বিচূর্ণ বিস্তৃতি নেভায় সবার আবেগ,
অদৃষ্ট নিয়তি নাকি শ্রেণীর পার্থক্য তৈরি করে যায়
সবার মন ভাঙার খেলায় নেমেছে কল্পনার মেঘ।
দুঃখে খরস্রোতা নদী আমার তোমার ভাঙে দুই তীর
নিশ্চিহ্ন করায় যেন বেরিবাঁধ থেকে অস্তিত্ব নিবিড়,
দুঃখের বন্যায় যেন ডুবিয়ে রেখেছে নীচু তলা গুলো
মেঘের শত্রু রোদেও মনের মাটিকে করেছে চৌচির।
মনের সমৃদ্ধ অংশ দূরে নিয়ে যায় মেঘের ডানায়
আঁধার নামিয়ে দেয় প্রদীপ বিহীন ভাঙচুর ঘরে,
ধাবনের মেঘ এসে উড়িয়ে নিয়েছে সবুজ স্বপন
হৃদয়ে ফসলি জমি হীন নাঙ্গলের আবরণ ধরে।

প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ
কলঙ্ক মুক্ত হয়নি শীতের খাতিরে পেঁচিয়ে বেদনা
কোনঠাসা করা পাতলা চাদরে গরীবের বক্ষে,
শীতকে ঠেকাতে ব্যর্থ অভ্যুত্থানে চ্যুত একটি শ্রেণির
মার্জিত আকুলে প্রার্থনা করলো গরমের পক্ষে।
আমিও ভোট দিয়েছি গরীবের দলে একটি কাতারে
পাশ হয়ে গেছে গরমের গর্ভে মানবাধিকারে,
আবাক কাণ্ডে পূর্ণাঙ্গ দপ্তর শরীফে ইরশাদ হচ্ছে
গরমের বাচ্চা উৎখাত করতে যোগসূত্রে পারে।
শুরু হয়ে গেছে উষ্ণ গহ্বরে তলিয়ে যাওয়া আবার
প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ শরীরে ঘাম ঝরে পড়ে,
গরীব এবার ভাবে তবে খাল কেটে কুমির এনেছি
এখন আবার শীত প্রয়োজন দমচাপা ঘরে।
মেঘের হামলা দিয়ে বৃষ্টির চাক কে ছুড়ে দিয়ে যায়
ভাঙা ফুটো টিনে ছিদ্রের ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে জল,
ফুটো দিয়ে ওই ঈশ্বরের কাছে অভিযোগ ছাড়া
কোন লাভ নেই সোনা চান্দু আর ব্যাহত আক্কেল।
শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের সুবাস ছড়িয়ে যায়নি
অর্থে অভিমানে আত্মহত্যা করে ইলেকট্রনিক,
বিদ্যুৎ এর মৃত্যুতে ফ্যানের বাতাস বন্ধ হয়ে গেছে
নড়েচড়ে নাকি প্রাণ হীন পাখা অকাজো সৈনিক।

মনের জমি
বিধ্বস্ত মনের জমি বহুদিন ধরে ফসল হয়নি
হৃদয়ে প্রাচীর ভেঙে ফুটে ওঠে নাই একটি নির্যাস,
বহুদিন চাষ হীন নাঙ্গলের চড়া কৃষক শ্রমিক
কেউ দিয়ে যায় নাই উৎসব মুখর চাষের আশ্বাস।
রোদের তীব্রতা বেড়ে চৈত্রের খরায় ফাটল ধরেছে
আমার বুকের জমি বহুদিন ধরে বৃষ্টির অভাব,
কোন পথিক জমিতে তাকিয়ে দেখনি বিবর্ণ বৈচিত্র্য
হৃদয়ে আত্নীয় আজ হলো ছিন্নমূল স্বার্থের প্রভাব।

আমার বুকে সবুজ চোখের বিস্তৃতি ঘাস খসখসে
শুকনো পাতার মত, উধাও হয়েছে চোখের গভীরে,
কেউ আসেনি দুয়ারে একফোঁটা জল ঢেলে দেব-
আগামী দিনের কোন বসন্তের গান শোনায় নি ধীরে

পাশে তাকিয়ে দেখছি পরিত্যক্ত জমি মনের উদ্যোগে,
ফুলে ফুলে ভরে গেছে ঋতুর চক্করে প্রজাপতি উড়ে,
প্রশান্ত বৈঠক নিয়ে সারাটা বিকেল হরেক ডানায়
আমার মনের জমি আবাদ বিহীন ফেটেছে চৌচিরে।

তোমার সন্তান মা

পাতার কাছে মেশায় সবুজ গাছের পাতা
নয়তো তোমার চোখের পাতা,
ফুল ফুটেছে একটি মুঠো বীজের জন্য
পাতার কাছে এই পৃথিবীর বিশ্ব মাতা।

চোখের পাতার নিচে একটা জগৎ আছে
সৃষ্টির কাছে যায় রে নিয়ে পথকে ধরে,
এই জগতে সুন্দর করে দেখলে সবি
সেখান থেকে বুকের ভেতর মনটা নড়ে।
মন নড়লে হাত নড়েছে  নড়েছে পা,
বিশ্ব লোকের কাছে চলি আমি তুমি,
স্মৃতির মত ভাণ্ডারে আজ হচ্ছে জমা
সেই স্মৃতিতে শ্রেষ্ঠ লাগে চরণ চুমি।
এই শরীরে মেশে আছে দেশের বায়ু
বৃক্ষ লতার অক্সিজেন খাই উঠছি বেড়ে,
অঙ্গ জুড়ে বাঙালি জাত ছাপিয়ে উঠে
চরণ তলে নিজকে ঠকাই পরের জেরে।
অবাক করা কাণ্ড হীন এক সাক্ষী হলাম
নিজের দেশের জল খেয়ে তার রক্তে দুলে,
ক্রিকেট খেলার মাঠে থেকে বঙ্গের জাতি
পর দেশের ঐ পতাকা কেন হাতে তুলে?


মনের নির্বাচন
অযোগ্য প্রার্থী যখন মন নির্বাচনে
আমি শুধু ভোট খুঁজি তোমারই পাশে,
জয়ীর দীর্ঘ চেষ্টায় অত্র ফলাফলে
বেদনার চিঠি হয়ে পরাজয় আসে।
তোমাকে পাবার প্রার্থী দাবিতে বিক্ষোভ
তোমার পোস্ট দেয়ালে করি অভিযোগ,
খবর পৌঁছে যায়না, মন কমিশনে
পৌঁছে না যে অতদূর ,শুধু গোলযোগ।

এই নির্বাচন সত্যি বহুবার নয়
একবারে হয়ে গেলে চির প্রতিনিধি,
সমাজ সংসারে যিনি চালকের স্থান
অনন্ত কাল পর্যন্ত দেয় টেনে প্রীতি।

তোমার মৌন এলাকা নির্বাচন প্রার্থী
পরাজয় সহ্য করে ঘুরি আশপাশ,
একপা দুপা ফেলেই হাঁটি এলাকায়
হারের ঠুকরে বসি ভ্রষ্ট অভিলাষ।


অন্ধ সমাজ
সীমানা ছাড়িয়ে গেছে দুষ্ট আচরণ
বিকৃত  মস্তিষ্ক গুলো - খাচ্ছে গিলে ঢোক,
কোথায় নালিশ দেই দিয়ে লাভ নাই
মনের ফসল গুলো হয়ে গেছে শোক।

স্বাভাবিক চলা যদি ব্যাঘাত ঘটায়
আপনার শান্তি লয়ে ঘুমাচ্ছে বালিশ,
পর সর্বনাশা করে, শুদ্ধ বসবাসে
মহল্লায় তাবলীগে কুটুমে হদিস।

সীমানা ছাড়িয়ে গেছে তিষ্ট আচরণ
ভাগ্য থেকে কেড়ে নেয় ভাতেরও থালা,
অসহ্য হয়ে গিয়েছে তার কুপ্রভাব!
অধৈর্য হয়ে উঠেছি হুতাশন জ্বালা।

সামনে এগিয়ে দেখি বিচার শালিশ
শিয়াল খেয়ে ফেলেছে মুরগির মত,
আইন ইউজ করে নাটকের মতো
শুনে শুধু খেয়ে আসি নাক মুখে থেঁতো।

সকলের কাছে যেনো হুজুর হুজুর
ক্ষীণ এর পিঠে শুধু- মারছে চাবুক,
এরা কি ঈমানি কেউ? না-বক ধার্মিক
সমাজের শুদ্ধ চোখ?, চুপ কেনো মুখ??

বসন্ত কন্যা

হারিয়ে কন্যা বসন্ত সুর
কেঁদেছ গোপনে তুমি কতদূর?
বসন্ত আসে চারার জন্য নয়,
বৃক্ষের দিনে হবে সুমধুর।

বসন্তে ফোঁটা বালক কুকিলে
ঠোঁটে উপদ্রব চুষেছে শিমুল,
মধু খেয়ে খেয়ে লুকায় কুকিল
চির বসন্ত মুছে দেয় কূল।

অকালে চারার যদি ফুটে ফুল
কুকিলের ঠোঁটে বিলিয়ে শরীর,
শিমুল কন্যা মাটিতে লুটায়
আসেনা কন্যা সেই দিন ফির।


ভাতের দাবি

আমার ঘরে ভাতের পাতিল ফুরিয়ে গেলো
এখন আমার ঘরে উঠল ভাতের দাবি,
ভাতের জন্য কাজের খোঁজে বেরিয়ে গেলাম
ভাত নাহলে আগামী কাল পেটকি খাবি?
ভাতের সাথে কাজের মাঝে গভীর চুম্বন
কাজ না হলে ভাত জোটে না কারো ঘরে,
কাজের জন্য খবর দিলাম নোটিশ বোর্ডে
বন্ধু কাছে টেলিফোনে বারে বারে।

ভাতের সাথে পরিবেশন থমকে গেছে
টানাহেঁচড়া কম খেয়েছি দম চেপেছি,
একটুখানি ভাতের সাথে অভিমানে
নিজ সংসদে দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি।

এবার কোন নতুন করে বাজেট এলে
প্রকল্পের ঐ খাটনি খেটে লড়াই মনে
একমুঠো ভাত ভরপুরে ঐ খেতে ইচ্ছে!
জোড়ালো ঐ দাবি তুলবো উত্থাপনে।


অবুঝ মনের টুকরো হাওয়া
-
তোমার মুখেই ছাপ এঁকে উঠে দুধের মতন সাদা,
আমার চোখের অঙ্কিত স্বপ্ন লুটিয়ে পড়ছে পায়।
শৈশব থেকে কাঁটাবন থেকে যেমন খেয়ালি চড়ায়
একটি ছবির পলকে তাকিয়ে খেলে গেল ইশারায়।

বুকের মরূতে জলহীন ধুলো তৃষ্ণা খোঁজার বুকে
নেই অভিমান জলের সাধন মেনে নেয়া কঙ্কাল,
রাত হীনা রাত অতটা বিষাদ পোষণ করিনা
পাব কি পাবনা তুমি সাক্ষাৎ নয় আমি জঞ্জাল।

আমার প্রথম রংধনু চোখে নজর পড়ানো তুমি
গোলাপের মত নজরবন্দি বুকের পোষণ করা
প্রথম প্রেমের প্রথম চিঠিটি লিখেছি খামের গায়
অবুঝ মনের সবুজ প্রেমের আমার টুকরো ছড়া।


ভুলতে যাহা লাগে
তোমায় এবার ভুলতে যাহা লাগে
তোমার থেকে তাহা বুঝি পেলাম,
এবার কিছু চাইনা মনে পরুক
হিসাব নিকাশ তাই মিলিয়ে এলাম।

দেখছি তুমি কোনো নদীর জলে,
উদাস হয়ে করছ ডুবা ডুবি,
আমি শুধু দর্শক হয়ে ছিলাম
দেখে দেখে কষ্ট পেলাম খুবই।

কেনো আমি লেখি দুঃখ নদী
চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে- জল,
আমি যে ভাই অযোগ্য এক ঢেঁকি
তোমার চোখে হয়েছি যে অচল।

তবুও যে, যা কিছু ঐ দেখছি চোখের কাছে
হয়ে গেছে দলিল হয়ে যা কিছু ঐ ছিলো,
এতটুকু বলতে পারি এখন
এতটুকু যথেষ্ট আজ ভোলার উপকরণ।


বেদনার পরিবেশ
গরমে ডুবে রয়েছি দুই মাস ধরে
বায়ুর ধরছি হাত, থাক চারিধার!
ভালো লাগেনা এমন তিষ্ঠ আচরণ
প্রকৃতি মেরেছে লাথি দুহাতে চোপার।
গগণ থেকে ধরাচ্ছে বেহুদায় রোদ
রোদতো নয়তো এক স্ফুলিঙ্গ বারুদ,
ঘাসের মাথার ফুল করে খসখসে
প্রকৃতি নিতাছে এক দৃঢ় প্রতিশোধ।
যেখানে সেখানে ফেলে দেয় আবর্জনা
প্রকৃতি হারিয়ে ফেলে নেই তার দিশে,
বড় বড় গাছ পালা তরুলতা জীব
উজাড় করে ছাড়ছে দিনকে দিন সে।
একটু স্বস্তির বায়ু ধরেছি প্রার্থনা
বায়ু বলে ক্ষমা করো আছে মোর মানা,
ওখানে ময়লা গন্ধ কারখানা ছাই
আসলেই হয়ে যাবো আমি বড়ো কানা।
খালিঘর
কূলের প্রচুর রত্ন নিয়ে গেছে স্রোতে
ভেসে যায় হৃদয়ের যত খরকুটো ,
দর্শক কাতারে এসে হয়েছি শামিল
লইতে পারি না ফুল , হাতে একমুঠো।
কেড়ে নিয়ে যায় কেউ হৃদয়ে অনিন্দ্য
নিরুপায় হয়ে গেছে আগলেই রাখা ,
ধুলিসাৎ হয়ে দাঁড়ায় মনের মিছিল
মুছে যায় যত ছবি আমার যা আঁকা।

রহস্যময় অরণ্যে
এই অরণ্যে বিষাক্ত কোনো সাপ নেই
বিষাক্ত মানুষ আছে,
যারা লুকিয়ে রয়েছে অদৃশ্য ছায়ায়
ছোবল দাঁত আক্রোশে।
এই অরণ্যে হিংস্রের পদচিহ্ন নেই
হিংস্রের মানুষ আছে
যাদের হুংকারে কাঁপে নিরীহ মানুষ
মুখ চেপে ধরে বাঁচে।
এই অরণ্যে প্রত্যেক উঠছে প্রভাতী
দেখার নেইতো সাধ্য,
এই অরণ্যে ফুটেছে ফুলের সৌরভ
সব ছাগলের খাদ্য।
এই অরণ্যে বাঘের গর্জন আসে না
মানুষে করে গর্জন,
নিজের ভালো চাইলে কঠিন বিপদ
ভালোকে করে বর্জন।
এই অরণ্যে বিষাক্ত কুকুর যে নেই
বিষাক্ত মানুষ আছে,
যারা হঠাৎ চেতে যায় ,ছোড়ে বিষ দাঁত
চিকিৎসা করে বাঁচে।

ঝড়ের তাণ্ডব
এই দুপুরে খেই হারানো ওই আকাশে,
হঠাৎ করে মেঘের পাশে রোদ্র ভাসে।
দামকা হয়ে আসতে পারে থমকে থাকা
ছুটবে পরে মাঠটি লয়ে গাছের শাখা।
ছুটবে লয়ে অনেক কিছু আমার গায়ের,
ভাঙবে যেন ঘরের চালা গরিব মায়ের।
উড়িয়ে নেবে ঘর শালিকের ছোট্ট বাসা,
ডুবিয়ে দেবে ফসলের মাঠ দেখবে চাষা।
এভাবে আর ভাঙবি কত দুঃখীর চালা,
বুঝিস কি আর গরিব মায়ের পেটের জ্বালা?
দিন এনে খায় দুঃখী ভায়ের দুঃখ হলে,
ঝড়ের চোটে আরো দুঃখে যায় তলিয়ে।
এমনি দেশে ওই করোনার ধ্বংস শানে,
বন্ধ আছে কর্ম দুয়ার লক ডাউনে।
এমন সময় উড়িয়ে নেবে ঘরের ছাউনি
বলে দে তুই জোড়া দেওয়ার উপায় খানি।।
অনেক হলো ভাঙচুরে আর নিভিয়ে বাতি,
এবার হছ না গরিব ভায়ের দুঃখের সাথী,
এই প্রকৃতি না ভেঙে তুই গড়ে দে না,
এই অভাবীর দুঃখের বোঝার ভাগি হ না।

বেরিবাঁধ
বেরিবাঁধ কূলে ঘরবাড়ি ছিলো কোথায় আমার বাড়ি,
নদীর গর্ভে চলছে সেখানে জেলে নৌকার সাড়ি
কূল হারা এই মানুষ এখন আমি পথে পথে ঘুরি
খোলা আকাশের আশ্রয়ে আজ হয়েছি যে যাযাবর
পরের জায়গা উকরাত থাকি আজ খাই লাথি চড়
আপন মানুষ চেনেনা এখন দুঃখেই-খেলে তুরি
যেখানে আমার ফসলের মাঠ সেখানে নদীর মাঝ
দুঃখের বোঝা বইতে বইতে কপালে পরছে ভাঁজ
যেখানে আমার পার সীমারেখা সেখানে নদীর চিহ্ন
সেখানেই আজ জল খেলা করে ব্যবধান যেন ভিন্ন
কূল হারা এই মানুষ এখন আমি পথে পথে ঘুরি।

জলের শাসন
মাটির প্রাচীর এই ভেঙে পরে বাদলের আগমনে,
ঢিলা চাক গুলো গলে গলে গেলো
চলে জলঘোলা
পথে ক্ষণে ক্ষণে।
একি কান্নার সুর মনেহয়
মারামারি লেগে গেলো বৃষ্টির গায়,
টিনের চালের রুনু ঝুনু আহা দুপুর
শোনায়!
ব্যাঙের ঘুমিয়ে থাকা আর নয়
হিমেল হাওয়া চুপ-চাপি আর নয়,
মাঠ ভারী জলে শেওলার ক্ষুধা
নেই নয়ছয়।
জলের তলাতে ডুবেই গিয়েছে
মাটির দেয়ালে এপিঠের দেহ,
দখল করেছে জলের শাসন
বর্ষার দিনে বর্ষাকে গেয়ো।
জলের শাসনে অবরোধ হলো
এই চলা দিক আর পথেঘাটে,
ক্ষণে ক্ষণে ওই জল ছিটিয়েই
তাড়িয়ে দিচ্ছে পথে আর মাঠে।
জলের ক্ষমতা আকাশের কাছে
ইজারা নিয়েছে যত নদী নালা ,
জলের শাসন নেই প্রতিরোধ
এই প্রকৃতির নতুন শাসনে ।

মানুষ কেমন
বলার ভাষণ মাটির ময়লা যেনো মনে হলো
মাঝে মাঝে ভাবি চৈত্রের খরা কে আছে জমাট,
টাকার মতোই বিশ্বাসী দের ভীষণ অভাব
সত্য কথাটা জীবন্ত এক পুস্তক পাঠ।
দুর্বল যেন সস্তা পানিতে যেন কোলা ব্যাঙ
একদল ছেলে স্বাধীন সুখেই মারে ঢিলা চাক,
নিজের ভেতরে দেখছে সচ্ছ ঝকঝকে টিভি
সুযোগ পেলেই মাঠে বল ভেবে খেলে ফুটবল।।
বিশ্বাস যেন ডুবে গেছে তলা মাটির তলায়
সত্যের গায়ে ভীষণই জ্বর কোনো কথা নেই,
বিবেক সত্যি হারিয়ে যাওয়া যেনো অচেতন
চুপচাপ দেখি মানুষ কেমন মানুষটা সেই।

পল্লীগ্রামের ছোট ঘর
স্বপন দেখি তোমারে কুলে
চড়ন করি পায়ের দুল,
বিভর থাকি অথই মুলে।
স্নেহ দেও আমার কুল।
মিশছি আমি ভাটির তট
গন্ধ নিছি  বনের ফুল,
যেথায় আছে নদীর জট
মন ভরাতে হয়না ভুল।
পাখির ডাক দাও ভরিয়ে
অবুঝ মনে দাও অতুল,
গাছের কাছে ছায়া ভরিয়ে
দিতে তোমার হয়না ভুল।
কোনসে বনে মাতাল বায়ু
জুড়িয়ে দিছে আকুল প্রাণ,
কোথায় আছে খন্দ ভরে
আম বাগানে মধুর ঘ্রাণ।
আর কি কোথা ফুটল হেসে
চলন বিলে বনের দুল,
শাপলা ফোঁটা কদম ফোঁটা
শিউলি ফোঁটা বনের ফুল।
ওগো আমার জন্মভূমি
চড়ন করি পায়ের দুল,
আলো বাতাস অটবি চুমি
প্রাণের ভরি দাও ব্যাকুল।
ওরে আমার পল্লী মাখা
কোন বেদনা কোনসে জেদ,
ভাংবি কেনে সবুজ ছবি
কিসের তরে যে ভেদাভেদ।
মেঘের কোলো ঝড় বয়েছে
আনবে বুঝে দমকা ঝড়,
ভাঙছে কেন ছাউনী পাতা
আমার যেনো ছোট্ট ঘর।

পাকা ফলের মধুর মাস
বাগান থেকে গন্ধ এসে ভাঙায় কে রে ঘুম,
পাকছে কাঁঠাল মজ মজিয়ে গ্রীষ্মের মৌসুম।
গাছের ধারে গিয়ে দেখি পাখি করছে ভাগ,
বাড়ির কাছে কিছু ছেলে মারছে ঘুরাই চাক।
আসার পথে গাছের তলায় পরছে দেখি আম,
রাত্রি ভরে খাইছে বাদুড় করে যে ধুমধাম।,
জাম গাছে তে জামের আঁটি ভুরে ভুরে নীচে
খাইতে আছে কত পাখি একটার পিছে পিছে।
ঘরের লগে আমরুজ পাকা নিলাম কিছু তুলে
সাথে আছে লিচু পাকা থোকা থোকা ঝুঁলে।
বাড়ি ভর্তি মানুষ ছিলো এখন আছি দুই,
পানির তালে ভাগ পেতাম না কার আগে কে ছুঁই।
এখন আছি দুজন মানুষ আমি আমার বাবা,
কেমনে তাড়াই পাখপাখালি করে যখন থাবা।
মধুর মাসের পাকা পাকা ফলের ছড়াছড়ি
নাইরে কোনো বনের পাখি নাইরে অনাহারী,
রসে ভরা মধুর রসে মধু ফলের ঘ্রাণ ,
নেয়রে আমায় বাগান বাড়ি মনে আনে টান।

আমাদের দেশ
আমাদের আছে নদী মাঠ ক্ষেত
আছে পাখিদের গান,
আছে কৃষাণির গোয়ালেতে গরু
আছে গোলা ভরা ধান।
দেখেছো কি ভাই ফুল ফল গাছে
পুকুরেই ভরা মাছে,
প্রকৃতির সাথে নিবিড় জ্ঞাতিতে
থাকে যেন পাশে পাশে।
আমাদের আছে নদী আর নদী
তাতে আছে মিঠা জল,
বিশাল সাগরে গহীনে তাকালে
চোখে করে ছলছল।
আছে ছয় ঋতু ঋতুর উঠুনে
হরেক রকম করে সাজ সাজ,
গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ হেমন্ত
শীত বাসন্তী এর কারুকাজ।
আছে আমাদের এক পরিচয়
আছে এক ইতিহাস,
আছে অশ্রুতে করুন কাহিনী
একাত্তরের করুণ রুদ্বশ্বাস।
আছে পাহাড়ের শীতল পানির
ঝরঝরে নাচে ঝর্ণা,
আঁকাবাঁকা পথে বৈকালি গায়
প্রজাপতিরই বন্যা।
আমরা বুনেছি চেতনার বীজ
চেতনা আমার দেশ,
ভালো লাগে মাঠ সবুজ শ্যামল
ভালো লাগে পরিবেশ।

পরজীবীর যন্ত্রণা
উইপোকি দুটো পাখনা গজেছে
রওনা দিয়েছে মক্কা,
পাইছে যখন বনের পাখিটি
খেতে করেনি তোয়াক্কা।
আমার বাড়ির কাঠ খড়কুটো
খেয়ে করেছে সাবার,
আমরা পারিনি মক্কা যাইতে
মক্কা য়ায় আবার।
তাদের সাথেই আরেক গোষ্ঠী
মাথার চুলে উকুন,
আরেক গোষ্ঠী কাঠপালা চুষে
খাইতে আছে- ঘুণ।
আরেক গোষ্ঠী রাতে দেখা হয়
করছে বারোর দশা,
এক থাপ্পরে দশটি মারছি
নাম খানি তার মশা।
এইবার বলি আরেক গোষ্ঠী
পেটে রাক্ষুসে ভোগ,
নাকের ডগায় চলছে শুষক
নামকরা সেই জোঁক।
এইভাবে খায় আজ পরজীবী
খায় মাথা গোঁজা ঠাঁই,
হয় মোটাতাজা হয়েছে হুজুর
এই সমাজের ভাই।

আমি না হয় মিথ্যা ছিলাম
তোমার কাছে ঠুনকো হয়ে গেছি,
আমি না হয় অযোগ্য এক ছেলে,
তোমার পাশে সুদর্শনের দেখি না তো কেউ
আমি না হয় হোঁচট খেলাম তুমি কেনে খেলে।
তোমার ও তো ভালো থাকার কথা
মুখটি কেনে শুকনো শুকনো লাগে,
শুকনো তবে আমার থাকার কথা
আমি না হয় পিছলে গেছি তবে
তুমি কেনে হেঁটেছ সেই দাগে।
তোমার কাছে মিথ্যা হলাম আমি
আমি না হয় মনের বাইরে থাকি,
তোমার মনের ভেতর যে বা ছিলো
কেনে তোমায় দিয়ে গেছে ফাঁকি।
তোমার কাছে প্রিয় হলাম নহে
তাতে একটু কষ্ট না আর ধরে ,
তোমার যখন প্রিয় মানুষ তবে
ছেড়ে যেতে হলাম অবাক পরে।

আলো
আলোর পেটে ডুবে আছি দেখা থেকে দূরে
দেখে আলো খিলখিলিয়ে হাসতে থাকে মুখ,
আমি যখন শব্দ শুনে ঘুম থেকে ঐ জাগি
হঠাৎ এসে সুইচ বন্ধ করেছে উজবুক।
চোখের কাছে হলুদ বাতি লাল সবুজের রং
দেখতে গেলে যাচ্ছে নিভে ভাগ্যের নাকি তালা,
পথ চলাতে পাচ্ছে যারা হাতে হারিকেন
তারা নাকি উচ্চ সিঁড়ির ফুলের তোড়ার মালা।
আলো পেটে ডুবে আমি পাইনা খুঁজে আলো
যেই আলোতে বহুদূরে হাঁটতে পারা যায়,
মনের ভেতর একটু শান্তির ঘন্টা বাজিয়ে
নিজের মত চলতে চলতে শক্তি আসে পায়।
এই আলোতে জন্ম আমার জন্ম সকলের
এই আলোতে হচ্ছে বড় হচ্ছি আমি ভাই,
ধরতে গেছি নিজের করতে নিজের ঘরে দেব
সবাই বুঝি ভাগ করে নেয় আমার বুঝি নাই।
এই আলোটি টাকার আলো এই আলোটি ধন
এই আলোটি চাকরি বাকরি ভালোবাসার মন,
যেই আলোতে ডুবে থেকে পাইনা ছুঁতে তারে
এই আলোটি সবার ঘরে প্রতিক্ষার গ্রহণ।

নিম্নবিত্ত
ডাকাত গরমে অতিষ্ঠ করে খুন করে যায় স্বস্তি,
কিনেছি একটু ঠান্ডা বাতাস ভনভন করে ঘুরে,
মাথার উপর পারেনি থামাতে গরমের উৎখাত
বেদনা এখন কোনঠাসা করে আমার অর্থ সুরে।
এসির ঠাণ্ডা আমাকে জড়িয়ে ধরার অর্থ নেই
ভাঙা টিন চাল সূর্যের চড় লাথি মেরে যেতে যেতে,
আর বর্ষার তুমুল পিটুনি বৃষ্টির নামে টিনের হুলাকে
হামলা করেছে গরিবের টিনে নির্দয়ভাবে তাতে।
মাঝেমাঝে ভাবি গাছের তলায় শান্তি আমার শুনি
গাছের তলায় নেই কোনো আর তালপাতার ছাউনি,
গরমে করেছে হামলা যখন শীতে ও ছাড়েনি সেই
পোশাক শীতের হামলা রক্ষা করতে পারেনি।
শুধু তাই নয় ঘরের চালের মজবুত নয় দুঃখ
পেটের ভেতর খালি রয়ে যায় এককোণে,
রোজগার দিয়ে আমাকে থলিতে ফাঁকা বাজার
আমাকে আছড়ে ফেলে দেয় দিনে দিনে।

সেই তুমি
কে এলো এই ভাঙা বেড়ার ফাঁকে;
কে জানে তার কি ছিলো সেই মনে,
চলে যাওয়ার পরে কি আর থাকে
হোঁচট খাই স্মৃতির আলিঙ্গনে।
মাঝখানে খুব হা করা এক নদী
দাঁড়িয়ে আছে এপার ওপার ফারাক,
ভাঙলে কেনো বুকের যায়গা জমি
চাইনি আমি এভাবে আর -যাক।
থমকে গিয়ে হঠাৎ করে দেখি
নতুন চরে বাঁধছে অট্র বাড়ি,
মিথ্যা হলাম স্রোত জলের মেকি
ভেঙেচুরে রাস্তা গেলে ছাড়ি।
যাবার বেলায় জানিনা কোন ভুলে
সরে গেছো কি বুঝে সেই তুমি,
মিথ্যে যে নয় ছলাকলার মূলে
আমার করার যুদ্ধে ছিলাম আমি।

আস্থা কোথায়?
আস্থা এখন উঠেই গেছে চলবো আমি কোথায়?
ভরসা নাই পায়ের তলার দামি টাকার জোতায়।
ঘাম কি আছে মজবুত তাঁতে ভাবছে পথিক কতো,
জুতার লাগি পথের মাঝে ইজ্জত যাবার মতো।
আস্থা আছে কতোটুকু অপর লোকের ঘারে,
কী থেকে যে কি  করে বয় বুঝিনা আর তারে।
আস্থা কোথায়? কোন মানুষের বিশ্বাস নিয়ে আর,
কথা দিয়ে বিমুখ হইছে চুনকালি তে তার।
আস্থা তুমি  নদীর তীরে নৌকার মতো ডুবি,
কথায় কথায় কান কথায় তার কানসে চুপাচুপি।
আস্থা গেলো গেলে সব কী তাহলে সব উঠে,
চাইলে বিমুখ ধারের টাকা পাওনা অর্থ জোটে।
অপর ঘারেই চেপে বসে স্বার্থ নেশার কুটুম।
মিথ্যা নিয়ে বসে থাকে গর্জে থাকা ভুতুম।
আস্থা আছে বাজার থেকে কেনা কাপর মোটে,
চকচকা খুব দেখলে কী হয় ধুইলেও রঙ উঠে।

মানুষত্য
এই পৃথিবীর মঞ্চে উপস্থিত সুধী
কেউকে খুঁজি না আজ, মানুষের মধ্যে,
মানুষ সত্য কে খুঁজি কতটুকু মেলে
জীবন বৃত্তান্ত জুড়ে আছে কি সান্নিধ্যে।
জাতি ,ধর্ম ,বর্ণ ,গোত্র কোনো পরিচয়
আমার জানার ইচ্ছা না আছে পোষণ,
আমি চাই তার মধ্যে  কতটুকু সত্য
কত মানুষ সত্যকে করেছে গ্রহণ।
আমি মানুষের মুখ খুঁজতে আসিনি
খুঁজতে এসেছি সেই এক মানুষত্য
পবিত্র হৃদয়ে এক উজ্জ্বল প্রজ্বলে
মানুষের হাসি মুখে অমলিনে পোক্ত।
মানুষ বলতে এক যে জীবকে বুঝি,
আমি মানুষের মধ্যে মানুষত্য খুঁজি।






অক্সিজেনে
ভালো লাগে যেতে আমার নদীর কাছে,
      সুদূরে জল ঢেউ যেখানে গড়িয়ে আছে!
যায় যদি গো বিষাদের ঘাম যায় যদি গো ভেসে,
   হঠাৎ কোনো ঢেউ এসে গো নেয়গো ধুয়ে ঘেঁষে।
ভালো লাগে যেতে আমার এদিক সেদিক ঘুরতে,
স্নিগ্ধ ভোরের ভোমরা হয়ে ফুলে ফুলে উড়তে
ভালো লাগে মৌমাছির ঐ দলে দিতে যোগ,
ভালো লাগে মুক্ত হয়ে গুটিয়ে দিতে শোক।
ভালো লাগে যেতে আমার রোদের চাষির মাঠে
ঐ যেখানে সৃষ্টিকর্ম চাষার হাতে হয় সপাটে
নতুন একটা বীজের মতো ফসল হয়ে ফোটতে,
সূর্য হয়ে আগামী কাল সবুজ শ্যামায় উঠতে।
ভালো লাগে মার আঁচলে মুছে নিয়ে মুখ,
আমি কত কষ্টে আছি জানাতে দুর্ভোগ
ভালো লাগে মায়ের হাতে খেতে মুঠো ভাত
জানি জানি আর হবেনা হবে অশ্রুপাত।
ভালো লাগে দূরে কোথায় করতে গিয়ে বাস,
যেথায় গেলে মানুষ দেখে নাইরে দীর্ঘশ্বাস।
ভালো লাগে দূর আকাশে পাখি হয়ে উড়ি
হয়তো যৌবন ছেলের হাতে হয়ে যেতে ঘুড়ি।
ভালো লাগে অবুঝ শিশুর হাসি মুখে বাঁচতে
ভুল মানুষের সঙ্গে থেকে শপথ করে বাঁচতে
জীবন জুড়ে ঐ গোছিয়ে সঠিক পথে চলা
ভাল লাগে না পোহাতে আর দুঃখের ছলকলা।

অপেক্ষা
গভীর আঁধারে আছি আমার একেলা
কখন উঠবে সেই আকাঙ্ক্ষিত সূর্য?
ছেয়ে আছে কবে এই গৃহে চারপাশ
কবেই হবে প্রস্থান মনোবলে ঊহ্য।
আকাশ দগ্ধ আঁধারে ডেকে আছে মেঘ
ঝড় হীন পূর্বাভাসে বায়ুর প্রবেগ,
চারদিকে শুধু আছে হিংস্রদের টেউ
নিভে গেছে বিশ্বাসের দুরন্ত বিবেক।
কবেই ডুবেই যাবো রোদের আলোয়
সবুজ মনের কোলে তুলে খাবে ঢেউ,
করবে কঠিনে সাধ্য কঠিন দুয়ার
সহযোগিতায় নেই আপনার কেউ।

তোমার কাছে
তোমার কাছে নিজ কে অনেক ময়লা মনেহয়!
তোমার থেকে ঠেলে দেয় দূর! খামচ মারে চিত্ত,
অনেক দূরে থেকে যাওয়া ইতিহাসই হয়ে যাই
উত্তাল প্রেমে ঘুরে ফিরে খুঁজছি একই বৃত্ত।
তোমার কাছে নিজকে এত ঠুনকো লাগে
যেনো কাগজ ছুঁড়ে ফেলা মাটির কাছে ঠোঙা,
চোখের কোণায় উড়ে বিকেল বিরক্ত এক ঘুড়ি
নিজকে লাগে সস্তা অতি তোমায় লাগে মাঙ্গা।
তোমার কাছে নিজকে লাগে তেতো বিশ্রী ছাই
মনেহয় এক মানান হীন্য তোমার হাতের চুড়ি,
আমায় লাগে ঘোলা জলে ছবি মত ফ্যাকাস
আমায় এখন নিত্য ভোলা তোমার জন্য উড়ি
তোমায় এত এত বেশি আকাশ মনে হয়
আর নিজেকে লাগছে যেন মাটির ময়লা জল
পথের কাঁটা

আমরাই ভালো থাকি, ওরা তা চায় না
ছাড়ে না পিছ কিছুতে শকুনি হায়না,
আবেগে আপ্লুতে ভাব যেন শুভাকাঙ্ক্ষী
আমাদের স্বস্তি বোধ ওদের সয়না।
আমরাই ভালো থাকি ওরা তা চায় না
অধিষ্ঠিত হতে আর কভু কি পারবি?
মনোবল ভেঙে বলে মেধায় হয়না
বড় কিছু নেই তোগো, সবই খুয়াবি।
আমরাও ভালো থাকি ওরা তা চায় না
আমাদের সবকিছু ওদের কা সয়না?
ওদের পিছু আমরা কখনো লাগবো
আমাদের লাইব্রেরি এ কথা কয় না।
আমরাও ভালো থাকি ওরা কা চায় না?
অযথা পিছনে ছুটে আমরা না ছুটি!
ইয়ার্কি হচ্ছে গোপনে ওরা তো কি চায়!!
নিজের সুখ সন্ধানে থাকে খুনসুটি।

একটি সকালের অপেক্ষা
শহরের অলিগলি সারারাত জেগে থাকা
দিনের আলোর কাছে নিভে গেছে সব বাতি
নিভু নিভু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিদ্যুৎ বাতি গুলো নেই,
একটি ঊষার আলো অনেক জোরালোতম
আমিও বেরিয়ে যাব সেই সকালে হলেই।

বহুকাল অন্ধকারে নিমজ্জিত ডুবে গেছে
আমার চারিপাশের হাতে জ্বালানো প্রদীপ,
অনেক আগে নিভেছে হাঁটাহাঁটি করি একা
জানি পাবো না আগের স্বচ্ছতা বাতির জিব।
একটি সকাল হবে আমিও বেরিয়ে যাব
হিংস্র দের খাঁচা থেকে চলে যাব নিজস্বতে,
যেখানে নেই হিংস্রতা মুর্খতা নীচুতা মুখ,
বহুকাল অন্ধকারে পাকড়িয়ে আছি মেতে।
গ্রাম্য খনকার
এই খনকার গ্রাম্য সমাজে ধোঁকাবাজি দিয়ে
মানুষের মাঝে বিশ্বাসী হয় পীরের খাতিরে,
নিজের পয়দা উসুল করার কোনো পাঁয়তারা
দিয়ে মানুষের লুটেছে অর্থ ভেলকি বাজারে।

এই সংস্কার আদিম খেলায় কোন প্রতারনা
এই সুযোগের হাতছানি দেয় অজ্ঞাত জাতি,
যুগ যুগ ধরে কুসংস্কারের করে গেছে ফুটো
বিবেকের সেই সরল দরজা হয়েছে ভাংতি।
আমি এইসব মূর্খ মানব দৃষ্টির কাছে
হেরে যে গিয়েছি দেখে নির্বোধ,
নাকি মানুষের অপদস্থের কোনো শত্রুর
ফাঁদ পাতা এক কোন প্রতিশোধ।

শেষ একটি শব্দ পেলাম
পরের ঘরে চলল যেতে ঢোল সানাইয়ে বাদ্য মেতে
বধু সেজে চলল মেয়ে যাচ্ছে পরের বাড়ি,
সকল মায়া বাড়ির ভুলে বাবা দিচ্ছে তাকে তুলে
জামাই বাবুর হাত মিলিয়ে দিচ্ছে মেয়ে পাড়ি।

না আছে তার সে ঘর চেনা কিছু আগের লেনা দেনা
এই বাড়িতে সবাই নতুন মুখ,
পরকে আপন মেয়ে করে আত্না দিয়ে টেনে ধরে
এই আসল ঘর দুখেও কয় সুখ।

পরের মাকে করেছে মা পরের বাপকে করেছে বাপ
পর না ভেবে হৃদয় ভরে ডাকে,
বহু বছর কাটার পরে সন্তান ভরা তখন ঘরে
ঝগড়া দ্বেষ হয় অঘটন তো থাকে!

তাই বলে কি দেবে তালাক  ধোঁকা দিলো না কি চালাক সে মেয়েটির কেমন হলো তার,
কোথায় গেলো জয়ের আপন কোথায় বাঁধা গাঁথা বাঁধন কি আছে আর এমন কি হয়?
চিৎকারে শেষ সংসার।

মনের নেটওয়ার্ক
তোমার মনের নেটওয়ার্কে কোনো সংযোগে নেই
যেভাবে ছড়ানো থাকে অলিগলি যেনো কানেক্ট জাল,
সারাটা গ্রামের সারাটা শহরে এক টাওয়ার থেকে
মন সংযোগে চলছি দুজন বহুদিন বহুকাল।
নতুন একটি জীবনের সাথে  মানিয়েছো খুব বেশ
হয়তো একটি নব কম্পানি সিম কেনারই মত,
হয়তো তোমার কাছে এই মন বাজেয়াপ্ততা আমি
যেমন একটি সিটিসেল সিম দেশে আজ বিলুপ্ত
দোষ দিবে খুব একথাও জানি তোর কম্পানি পঁচা
ঠিক নেই সেবা  হৃদয়ের বাজে নেটওয়ার্ক মেটায়,
এখন জোরালো নেটওয়ার্কি সুবিধা নিতেছ আহা
যেমনি তোমার নতুন সঙ্গী ফাইভ জি আওয়তায়।

যুগের দূরত্ব
অপেক্ষিত দিনক্ষণে কারো কাটেনা সময়
হৃদয় স্রোতের গতি আজ মেলেনা সুদূর,
ক্ষণিকের ভালবাসা আজ প্রতিটি মনের
চলে না অনন্ত পথ  হয় নাত বহু দূর।
বেশিরভাগ হৃদয় আজ ভাঙা ভাঙা মন
ক্ষত বিক্ষত হৃদয় যেনো অদৃশ্য অন্তর,
সভ্যতা মুক্তি দিয়েছে দূর দূরের রাস্তাকে
অবিশ্বাসে ভরে গেছে সব হৃদয় বন্দর ।
বসে থাকার দিনটি কারো কভু আর নাই
কারো জন্য বসে থাকা সেইদিন আর নাই,
হৃদয় প্রাচীর নাই নির্দিষ্ট কারো দুয়ার
কারো প্রেমের আগুনে আজ হয় নাকো ছাই।
প্রযুক্তি দিয়েছে তার কত কাছাকাছি এনে
তাকে রেখে বহু মনে মুক্তে বহুতে হারাই!
আসল মানুষ পেতে আসল ছাড়িয়ে যাই
ডালে ডালে পাখি হয়ে নকলেই ডুবে যাই

জীবন মরুভূমির
মরুভূমির বৃক্ষের মতো সরে দাঁড়িয়েছি
তোমার পথের থেকে,
ক্লান্ত শরীর একটু জলের চাহনির মুখ
আমার শরীর তৃষ্ণা গলার
লড়াই করে বেঁচে আছি রোদে।
শেকড় যত রস পেয়েছি শেকড় আমায়
ভুলে গেছে আমি নিঃসঙ্গ
নিজের মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকার
মরুর বুকে চিবুক দিয়ে

অমিল
বিরাট আকাশ মনে, তোমাকে কল্পনা করি
নদীর মতন তীরে মন এসে ডুবে গেছে,
আমার বহুকালের আকাঙ্ক্ষার তীব্রতা
ভেসে যায় খর হয়ে ,কষ্ট এসে কাছে মেশে।
সকালে কুয়াশা হয়ে ধুলিসাৎ হয়ে দাঁড়ায়
আমার প্রত্যাশা গুলো ,, হঠাৎ রোদের ছায়া,
নেমে এসে বলে যায় ওপিঠ ভুলে যাও দিন
পাহাড় বুঝে কি আর পল্লীর হাঁটুর মায়া?
পাহাড় বুঝেনি কভু বিপুল সংখ্যক প্রেমে
তোমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছি, হেঁটে হেঁটে যেতে যেতে,
পাহাড় সমান ধনে আকাশ চুম্বন করে
আমাকে ফেলে গিয়েছো কালের কণ্ঠের স্রোতে।

বেদনার নীল রং
আহত স্বপ্ন জড়িয়ে মরীচিকা ধরে
আছাড় খাচ্ছি এমন অনাথ শরীরে,
আমি নিস্প্রভ সকালে বেদনার নীলে
কাত হয়ে শুয়ে আছি নিঃসঙ্গ গভীরে।
আমার কান্নার শব্দে জেগেছিল রাত
অনেক তারার ছবি, ফ্যালফ্যাল করে,
কথাবন্ধু ছিলো সুপ্ত নির্ঝঁঝাট রাত
বৃক্ষের দেহ পুড়েছে থরথর জ্বরে।
আমি মানুষ হয়েও জড় পদার্থের
মত হয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম,
মুখ খুলে পটভূমি গলাতে পারিনি
বার বার ঈশ্বরকে বিচার দিলাম।
আমার চোখের জল টপটপ করে
একসময় ঝরতে চোখের গঙ্গায়,
জলের স্রোত আমাকে ধুয়েছে শরীর
কাত হয়ে শুয়ে আছি নির্বিক সঙ্গায়।

প্রযুক্তির ডালে
প্রযুক্তি তুমি মুক্তি দিয়েছ তারে,
দূরকে এতোই নিয়ে এলা কাছাকাছি,
হেলায় ফেলায় হিতে বিপরীত ধরে
দুই পথে আজ চলেছে জগত বাসি।
মেয়েদের তুমি মুক্তি দিয়েছে ঘরে
সুযোগ মেলেছে বন্ধুর মেলামেশা,
খাতিরে খাতিরে এতো ডুবে অগোচরে
বিবাহ বিহীন মিলনের কি হামেশা।
মেলালে হারানো কিশোর বন্ধুসভা
কোথায় কি করে দেও খবরাখবর,
হারিয়ে ফেলার আর নেই কোনো পথ
সবাইকে আজ করেছে একটি দোর।
সহজেই দিলে অভিধান মুঠোফোনে,
গুগল সার্চে সকল তথ্য মেলে,
পৃথিবীর ঘটা খবরাখবর পাই
পৃথিবীটা আজ হাতের মুঠোয় এলে।
প্রেমে রসায়ন তিক্ত তবলা বাজে
প্রিয়সীকে কাছে টানার উল্টো দিকে,
ধাবিত হচ্ছে প্রেমের তৃপ্ত রস
যেনো অলস দুপুরে মন গেছে টিকে।
বাহিরে শরীর চোখের আড়ালে ডুবে
পরে আছে ভোর সবুজে সন্ধ্যা ঘেঁষে মাঠঘাটে,
বদ্ব জানাল থেকে যেন, খুঁজি তৃপ্ত অক্সিজেন
সবুজ আঁচল ধরে কেউ গেছে কভু কি একটু হেঁটে?

আলোর অভাব
একটুখানি আলোর দেখছি বড় অভাবে
গৃহের কোনার ধুম লেগে আছে অন্ধকার,
একটুখানি হাসির খোরাক আছে স্বভাবে
করছে আমায় শুধু আর শুধু একাকার....
একটুখানি আলোর তবু দেখা যদি পাই
বেরিয়ে যাবো আবার চেনা পথের মাঝারে,
হারিয়ে যাবো জনের সেই স্রোতের সম্মুখে
খুঁজব নতুন করে আমি হয়তো আমারে।
একটুখানি আলোর আমি যদি দেখা পাই
বুক চাপা কষ্ট গুলো হাতে যে দেবো সরিয়ে
বালিশ মাথায় ঠেকে ঘুরে যাইবো নিদ্রায়
স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে নিয়ে যাইবো জড়িয়ে।
একটুখানি আলোর আমি যদি দেখা পাই
স্বপ্ন গুলো হবে তাজা কাঁচা কচিকাঁচা পায়ে,
বেদনা গুলি হারাবে শুধু সুবিধা না পেয়ে
স্বপ্ন গুলো সত্যি হবে আর পূর্ণতার গায়ে।
একটুখানি আলোর আমি যদি দেখা পাই
জীবন যুদ্ধে আবার নামবো আবার ঘুরে
নতুন কোনো উচ্ছাসে জয়ধ্বনি এলে
তারুণ্যের জয়গানে সংগীত ধরবো সুরে

ছিটকে পড়েছি
থাপ্পড় দিয়েছে গালে ভোরের দুহাতে
ছিটকে পড়েছে ঠিক গোলক পৃষ্ঠায়,
নিজেকে মনে হয়েছে কোনো এলিয়েন
উড়িয়ে নিচ্ছে বেহুদা রাহিত্য নিষ্ঠায়।
মনেহয় স্যাঁতস্যাঁতে ছোড়াছুড়ি জলে
মাটির শরীর বৃষ্টি অতঃপর কাঁদা,
এতটা ঘৃণার চোখে ময়লার ডাস্টবিন
আমি যেনো আবর্জনা সব আর সাদা।
লাথি চড় খাই নিত্য অযোগ্য শরীরে
কিল ঘুষি খাই নিত্য চোখের কোণায়,
বড় অযোগ্য করেছে একটি ঘোষণা
সমুদ্র এসে আমাকে তখন শোনায়।
জোতার তলেই চাঁপা দিয়ে যাও তুমি
আমার শরীরে যাও দলাচটা করে
একাকী চলার ফিরে পথে পথে চলি
ব্যথিত ব্যথায় সেটা ফিরে মনে পড়ে।

বেকার জীবন
একটি চাকরি হলে ভাতের সহিত
অভিমান আজ কত কেটে যেতো!
একই পোশাক নিয়া নিত্য গায়ে থাকা
গায়ের উপ্রে-যে নাহি খেতো থেঁতো।
একটি চাকরি হলে ঘুমের বালিশে
দুশ্চিন্তা থেকে বেরিয়ে ঘুম খুঁজে পেতো,
পর নির্ভরশীল এ দরজা নামিয়ে
নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ভোর দেখা হতো।
একটি চাকরি হলে পায়ের সহিত
মাটির সংঘাত হতো পরিহার,
কাঁটার গাঁথার আগে কিনে জুতা
ব্যথা নিয়ে প্রায় না দিতো বিচার।
একটি চাকরি হলে দুর্ভিক্ষে সহিত
নিত্য কুস্তি করে নাহি যেতে হেরে,
একটি চাকরি হলে পায়ের উপর
মাটি গুলো নাহি কেউ নিতে কেড়ে।

বটবৃক্ষ
একটি অজ্ঞতা নিয়ে ,মিশে আছি ,আলোর শরীরে
দেখি সরিষার ফুল, চোখ জুড়ে, টেনে টুনে ছিঁড়ে,
আমাকে আছড়ে ফেলে দেয় নীচে পায়ের নিকট
উত্তরণ খুঁজে ক্লান্ত আমি ক্লান্ত মনের শিবিরে।
আমার চোখের নিচে ছেয়ে গেছে কিছু কালো দাগ
জলের মত প্লেয়ার এসে খেলে চোখের কোণায়,
মনেহয় পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যর্থতা আমার
পথের বাস্তব সুর চুপচাপ আমাকে শোনায়।
প্রিয় মুখের সামনে মিথ্যে করে গ্রহণযোগ্যতা
একটি মন্তব্য নেই বুঝে গেছি তুচ্ছের ভেতর,
কভু নেই আবরণে আমি নেই হৃদয় নিক্ষেপ
নিজের মুখের দিকে চেয়ে দেখি দৃষ্টির গোচর।
এই তুচ্ছার্থ প্রশান্ত চেপে আছে আমার শরীরে
নিস্তব্ধ নিঃসঙ্গ করে দেয় খুব জীবনের স্রোতে,
যেন ভেসে যাই নিত্য ময়লার কোনো ডাস্টবিনে
আর সকলে চলেছে উন্নতির স্টাইল শিখরে।

মানুষের রং
কান কথার তুবড়ি পরে গেছে
অনেক মুখে করে বলাবলি,
কেউ বুঝে কয় না বুঝে কয় কথা
কেউ হেসে মুখ করে গলাগলি।
মানুষের রং সময় হলে চেনে
ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিয়ে,
তারপর সে দেখায় বৃদ্ধাঙ্গুলি
মানুষ গুলো থাকে কিবা নিয়ে?
নিজের ঘামের গন্ধে পালায় ভূত
পরের গায়ে ময়লা টি শার্ট দেখে,
বলে কদিন  ধুইতে পারো নাকো?
চলে পথে খুশবু মেখে মেখে।
এক হারামীর চাকরি ছিলো নাতো
মানবিক এক চিন্তা করে দেখুন?
তারে আমি চাকরির জন্য আনি
সে এখুনি আমার কেমন ইজ্জত করে খুন।

বেরিয়ে এসেছি
সকল স্বাদ এখন,তেতো মনেহয়
আমি ধীরে স্থির হয়ে থমকে দাঁড়িয়ে,
তেতো থেকে খোলা স্থানে নেমেছি এখন
শিখে গিয়েছি কিভাবে বেরিয়ে আসব।
দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে চোখের কোণায়
কিছুটা জল খসিয়ে নিস্তেজ হলাম,
আমার একাকী থাকা নিস্প্রভ রাতের
রাতের গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে কাতর।
যুদ্ধ ময়দান থেকে পরাজিত সৈন্য
সবার কাছে যেমন হয়েছে বিচ্যুত,
ঠিক এমন একটি বস্তু মনেহয়
আমার দুয়ার বন্ধ সকল চাওয়া।
বড় মনের ভিটায় কেউকে চেয়েছি
নিজের অযোগ্য আছে দাঁড়িয়ে দালান
একটা মানুষ আর আরেক মানুষে
এত অসম্ভব ময় ভালোবেসে পারে।
এই প্রথম অধ্যায় থেকে সৃজনশীল
কোনো মানুষের ঠাই হঠাৎ জেগেছিল
দ্বিতীয় পৃষ্ঠার পাতা উল্টিয়ে দেখিনি
নিজের অযোগ্য এসে নিভিয়ে দিয়েছে
আমার মনের ঘরে জ্বালানো প্রদীপ।
আমি আর কি তৃতীয় চতুর্থ পৃষ্ঠার
পূর্নাঙ্গ পাতাটা পড়া হয়নি তাহলে
শেষ পৃষ্ঠায় দ্রষ্টব্য জানতে পারিনি।

ঘোলাজল
নিজেকে এত কেনো ঘৃণ্য মনেই হয়!
মনেই হয় এর চে ভালো মুতে দেওয়া জল,
কচু বনের চাঁদের মতো বড্ড মনে হয়
মনেই হয় ময়লা জলা নলের কলকল।
দিনের কাছে নিজেকে এত আঁধার মনে হয়
মনেই হয় প্রাচীর ভেঙে খসে পড়ার মত,
উষ্ণ ছাড়া যত্ন হীনা স্পর্শ ছাড়া সন্ন্যাসীর ঘর
হাজার ক্ষয়ে নজর পরা হাজার কতশত।
নিজেকে এত বেশি ঘৃণ্য মনেই হয়
মনেই হয় এরচে ভালো থুথু ভরাট মুখ,
এরচে ভালো পায়ের নিচে হাজার ধুলোবালি
পরিত্যক্ত কাগজ গুলো দেয়ালে উদ্ভট।
এত নিজেকে অনেক বেশি ঘৃণ্য মনেই হয়
মনেই হয় এরচে ভালো বর্ণচোরা যুথ,
মন ভাঙার মানুষ গুলো উচ্চ মনে হয়
মনেই হয় এর চে ভালো ঐ গোলামের পুত।
নিজেকে এত কেনো ঘৃণ্য মনেই হয়
মনেই হয় এরচে ভালো তার পায়ের জুতা,
যত্ন নেয়া চমকে উঠে কদমে ছোটা ছুটি
মনেই হয় এরচে ভালো ছেছড়া সুতরাং।
পড়া লেখার পড়ে যখন বেকার বসে খাই
এর চে ভালো লাগার কথা আছে কি আর কিছু,
ক্লান্ত হয়ে সর্বশেষে বলতে শুরু করি
চাকরি পেতে সামনে গেলে হচ্ছি শুধু পিছু।

শেষ থেকে শুরু হয়ে যায়
বের করে দেবো এইটুকু ভাবি তোকে
আড়াল সরিয়ে সামনে দাঁড়ালে,
আবার প্রথম শুরু হয়ে যায় ধ্যানে
তোমাকে ভাসায় এ যাবত কালে।
এইবার শেষ আর যে হবে না
চাইনা ধরতে হৃদয়ে এমন বাজি,
আমিও চাইনা ভুল মানুষের
পাল্লায় পরে ধুঁকতে হয়না রাজি।
তবুও মোহের মাধুরী মিশিয়ে
হৃদয়ের ঘুণ কেটে কেটে যায়,
দেহের ভেতর হয়েছে খোলসে
তাকে ছাড়া মন ভাবে না আমায়।

হারিয়ে ফেলা
তোমাকে হারিয়ে ফেলা নিতান্ত সম্ভব নয়
তবুও সময় এসে করায় দাঁড় দেয়ালে,
পিঠে হেলান দিয়ে আকাশের খুব দেখি
এত সঞ্চিত আবেগ ধুলিসাৎ করে খেয়ালে।
আমার শরীরে হাতে ইচ্ছে করে রেখে দেই
দখলে নেওয়া এক যেন ভুখন্ড প্রসাদ!
এখানে পিছিয়ে আছি বিলম্ব যানের মত
মনের উঠুন থেকে বুঝানো কঠিন স্বাদ।
ঈশ্বর পারে এমন মানুষের সাধ্যে হীন
অসম্ভব কে সম্ভব করাই সহজ সাধ্য,
আমি তো তারই সৃষ্টি আরেক সৃষ্টির মত
আমি নয় কভু তার জানি হুকুমে অবাধ্য।
শক্তিহীন সূর্য হয়ে মেঘাচ্ছন্ন করে মন
আলোর জ্বালানো চেষ্টা একটা প্রদীপ থেকে
পৃথিবীর খরকুটো জুগিয়ে জুগিয়ে জুড়ি
মনের মিছিলে আমি তবু রেখেছি আগলে।

অসময়

কষ্টের ধারালো দাঁত দিয়েছে কামড়!
চোখের নিচে বইছে সমুদ্র সৈকত,
মনেহয় তিমি নয় একটি হাঙ্গর
অহেতুক মেঘাচ্ছন্ন মনের পর্বত।

কতকাল রোদ হীন মাথার আকাশ!
কতকাল মাঠঘাটে নেই কিছু চাষ,
কতকাল ব্যক্ত হীন আমার নিবাস
কতকাল আমি হীন করি বসবাস।
ছুড়ে মারছে হাঁটুতে বিষাক্ত মুগর
থেমেছে পথ চলার রুক্ষ বহুদূর,
হারিয়ে গিয়েছে ভ্রাতৃ চোখের পলক
মনের জমিন যেন হলো মিছে সুর।
দূর্বল নাবিক
নিজেকে বদল নেয়া চাইলে কি পারে
আমিতো কব্জির জোরে দিতেছি সাঁতার,
ছিটকে গেছি শ্রেণীতে প্রথম আসর
পৌঁছেতে অনেক দেরি পথের ওপার।

চাইলে বদলে যাবো এত কি সহজ
কঠিন হয়ে গিয়েছে যা হতো অর্জন,
কঠিন হয়ে পড়েছে যা ছিলো সহজ
কিভাবে বদলে যাই কি করি বর্জন।
যেদিকে যাই সেদিকে কঠিন দাঁড়ায়
একমুঠো ভালবাসা খুঁজতে গেলাম!
এত দাম কেনা দায় সাধ্যের বাইর
বিনিময়ে ফ্রী মূল্যের বেদনা পেলাম।
মৌলিক চাহিদা গুলো পূরণের লক্ষ্যে
গিয়েছি কর্ম বাজারে দিয়েছি সাঁতার,
কর্মের পুস্তক পড়া ছিল কঠিনের
ছিটকে পড়েছি সেই পিছন কাতার।
পিছন থেকে আবার দিলাম সাঁতার
হারিয়ে মনের জোর হাবুডুবু খাই
সাঁতরে কূলে উঠতে চালছে প্রচেষ্টা
পথের যুদ্ধা দেখেছি একটা ও নাই।
হয়তো তারা পেয়েছে আপন ঠিকানা
নাগল পেয়েছে পার ওঠার গন্তব্য,
সাফল্য গাঁথা মালায় সুন্দর সকালে
দূর্বল নাবিক হয়ে করেছি মন্তব্য।।

মা
স্বার্থ বিনে একটি মানুষ যদি থেকে থাকে,
জন্ম থেকে শেষ পর্যন্ত পাবে তোমার মাকে।
গোচর থেকে অগোচরে করেন আর্শীবাদ,
এমন একটি মানুষ আছে শুধু মায়ের জাত।

অনাহারে খায়না খাবার দেয় সন্তানের মুখে,
ছেলে মেয়ে থাকলে ভালো থাকেন তিনি সুখে।
চোখের নিচে কালো চিহ্ন কার চোখে কি পরে,
বলে কয় মা খাস না খাবার শুকালে কতোরে।
একটি কথা অনেক ব্যথার মা যখন হয় বৃদ্ধ,
নেয়না খবর না ফিরে চায় হেলায় করে সিদ্ধ।
দোয়া করে ছেলে তখন কবে মরবে মায়ে,
টানাহেঁচড়া ভাল্লাগে না ঝামেলা মর যায়ে।
ছেলে চাহে মায়ের মরণ মা চাহে তার মঙ্গল,
এরই নাম যে, মা- দুখীনি বন্ধন জোড়া অঞ্চল।

শ্রমিকের ইতিকথা
কাঠের সাথে কুস্তি করে কুঠার সাথে কুস্তি,
গা খাটুনি হচ্ছে কতো শ্রমিক হলে বুঝতি।
লোহার সাথে কুস্তি যুদ্ধেই গা এর হচ্ছে ক্ষয়
সেই কুস্তিতে জয়ী সৈনিক খুঁটির অঙ্গ জয়।
মাথায় করে টানছে কুলি ঐ প্রসাদের বস্তা,
নয়তো সহজ মাথায় করে নেয়া এত সস্তা।
কতকিছু তৈরি করছে দৈনিক পরিশ্রমে
সবার তরে দেয় বিলিয়ে নিজের মেধা ঘামে।
নিত্য যারা হচ্ছে জয়ী করছে কাজে কুস্তি ,
ফসল ফলতে নিত্য যারা কাজকে করে দোস্তি।
উপকরণ থাকলে কি আর নিজে সৃষ্টি হয়
এই শহরের অলিগলি যাদের হাতে হয়।
এই শহরে নাইতো বাড়ি না আছে তার ঘর,
রোজের টাকায় পেট চালিয়ে কাটয় জীবনভর।
এই শহরের শিল্প বিপ্লব যাদের শ্রমে গড়া,
দিনের শেষে যায় হারিয়ে একাই বাড়ি ফেরা।
যারা শুধু রোজের অর্থে সাজিয়ে দেয় অন্যে,
তাদের জন্য শ্রদ্ধা রাখি সৃষ্টি তোমার জন্যে।

দূষিত চিন্তা

দগ্ধ দূষিত আঠা পরিবেশে আমি আছি ডুবে,
ভোরের সূর্য ছোঁয়না কপালে উঠে যেই পুবে।
দূষিত চিন্তা দূষিত বিবেকে নিয়ে পরিবার,
অসুস্থ মনে ঘরে ঘরে করে দূষিত বিচার।

এক পরিবারে  আছে কেউ হয় ভারী এক বোঝা,
বিষহীন দেহে বিষ নামাতেই ডেকে আনে ওঝা।
সবুজ গাছের ভীষণ অভাব অভিমানী মাটি,
যেখানে মেলায় নোংরামি মুখে আছে যত ঘাঁটি।
সমাজের মুখে ভালো কথা বলে দেয়ই প্রলেপে,
মুখের আড়ালে মন্দের জয়ে গিলে খায় ছেপ।
এখানে দূষিত এর বিশ্বাসে যেন হয় সুখী
যারা ওই ভালো নেই কোন ঠাঁই ভুকতো-ভোগী।
স্বার্থের পিছু পিছু কিছু লোক হারিয়েছে দিশা,
সীমার বাইরে চলছে যখন হয় মেলামিশা।
এই যেন‌ এক বিবেক বুদ্ধি  লোপ পেয়ে পেয়ে,
দূষিত সমাজে হলো পরিণত ডালপালা খেয়ে।
কবি পরিচিতিঃ মোঃ মুসা