সুদূর গগণে ছোট্ট একটি তারা।
দেখেছ? পশ্চিমাকাশে দেখ,
হে পথচারি, এই দিকে।
রজনী আবির্ভাবকালে
হ্যাঁ, এই সময়েই,
প্রতিনিয়ত হাতছানি দেয় হৃদয়পটে,
ডাকে কতইনা করুণ স্বরে।
সে যেন বলছে,
“নির্মম নির্জনে সৌহার্দহীনে
একাকিনী স্মৃতি লয়ে তোমার
দিবস অবসান, যামিনী বছরমান।
কতইনা আসি আসি বলে
অবশেষে নাহি এলে।
মনে কি পড়ে সেই গোধূলী লগন?
তুমি-আমি বসে ঝিলের ধারে
জোড়া পদ্ম দেখিয়ে বলতে,
‘হয়ত ছিড়ে নিবে পঙ্কজ কেহ
শোভা বর্ধনের লাগি।
নাহি হবে অবসান,
পূনঃ পূনঃ ঢেউয়ে
রহিবে আলিঙ্গনে।
আরও শোভিতে ফুল
আসিবে মুকুল,
করিবে না সংশয়, রহিবে না বেদন,
হর্ষ রবে দুকুল।
তুমি বর্ষার বারিধারা
কুকিলের কুহুতান
ফাগুনে তরুছায়া
বিজয়ের জয়গান।
তুমিহীনা প্রতিটি ক্ষণ ফিবছর সম
আবাল্য হতে যথা বর্তমান
আমরণ রহিব অম্লান।’
মনে পড়ে, সেই ক্ষণ?
পশ্চিমাকাশ লালাভা যুক্ত হতে মুক্ত হয়ে
কখন যে নামিল তিমির
এমনি করিয়া কতইনা ক্ষণ
শ্রবনে সর্ব কথা
বিভুর তোমাতে, শত বর্ষ অতীত।
হেনার সুবাসে মোহিত হয়ে
চাঞ্চল্য দখিনার বায়
নাসিক্য সম্মুখ যবে হত,
বিরহ ভরে বলিতে, ‘সুস্মিতা,
প্রতিটি প্রহর কেন এত নির্দয়
কেন অসহনীয় লাগে একাকী?
আজ তবে উঠি প্রিয়তম?
খুঁজিয়া পাইলে তোমার বাপে
বধ করিবে জোড়া পদ্মরে।’
মনে কি পড়ে সেই সময়?
হাতটি ছেড়ে যবে বলিলে
প্রিয়, আজ নাহয় আসি?
তোমা ছেড়ে যাইবার ব্যথা
পরানে নাহি সয়,
একই আত্মা দুজনার,
দূরে দূরে কেন রয়?”
তার পর?
পদযোগল তুলিতে পরে পরে
সর্বগ্রাসি আশীবিষ দংশীল তারে।
সুশ্রী গাত্র কদাকার হয়ে
বিবর্ণে বরিল দেহ।
মৃগনয়নী কালো চোক তার
আমার নয়নে চাহি
“তোমারে চাহিগো শুধু
অতুল ভালবাসি।
বক্ষে লহ মোরে একটিবার
প্রশান্তিতে ছাড়িব দীর্ঘস্বাশ।
স্বর্গে মোর ত্যাগিব সকল আশ।”
হে পথিক, পথচারি, কথা কহ!
কখন গেলে, বলেতো যাবে?
কথাগুলো কী অনেক বিশ্রী?
শুনবে না কেহ?
আত্মহত্যা মহাপাপ ব্যতিত প্রিয়ে,
ছুটিতাম ও পথ ধরে
তোমারে খুঁজিতে, কষ্ট যত লয়ে।
২০১২ ইং