পাহাড় জন্মায় কেমন করে?
বাতাসের গোপন অভিসারে, মাটির শরীরে জন্ম নেয় উঁচু ঢেউ,
সময়ের গভীরে জমে থাকে লোভ, হিংসা, আর প্রতিহিংসার স্তূপ।
দিনের পর দিন, রাতের পর রাত আমরা পাপ জমাই।
মিথ্যা, লালসা, ধোঁকা আর প্রতারণা জমাই।

আমরা পাপ জমাই—
কারও চোখের জল চুরি করে,
কারও স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে,
কারও হাসি কেড়ে নিয়ে,
কারও জীবন আগুনে পুড়িয়ে।

পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে আমরা ভাবি আমরা রাজা!
পায়ের নিচে যারা পড়ে আছে তারা শুধু পাথর।
ওদের কান্না, ওদের আর্তনাদ আমাদের গর্বিত পতাকায় আড়াল হয়ে যায়।

একদিন এক কৃষক এসেছিল শহরে,
হাতে ছিল ফসলের গন্ধ,
কিন্তু ফিরে গিয়েছিল খালি হাতে—
কারণ তার ঘামের দাম চুরি করা হয়েছিল।
একদিন এক মেয়ে দাঁড়িয়েছিল আদালতের দরজায়,
বিচারের আশায়, ন্যায়ের প্রত্যাশায়,
কিন্তু ন্যায় সেখানে বিক্রি হয়েছিল টাকার কাছে।

এভাবেই গড়ে ওঠে পাপের পাহাড়,
এভাবেই সময়ের বুকে খোদাই হয় অপরাধের শিলালিপি।
একটি করে অনৈতিকতা, একটি করে প্রতারণা,
একটি করে বিশ্বাসঘাতকতা—
সব মিলিয়ে এক পাহাড়, এক দানবীয় বিশালতা।

তুমি কি শুনতে পাও?
এই পাহাড়ের গহ্বরে কান পেতে শোনো,
অসংখ্য নীরব আর্তনাদ, চাপা কান্না,
শিশুর ক্ষুধার্ত বুক ধুকধুক শব্দে ফেটে পড়ছে।
এই পাহাড় রক্ত মাখা, এই পাহাড় মানুষের দুঃখে ভেজা।

কিন্তু পাহাড় ভাঙে কেমন করে?
ঝড় আসলে? বজ্রপাত হলে?
নাকি মানুষের বিবেক জাগলে?
যে দিন চোখ খুলবে এই পৃথিবী,
যে দিন ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্য বুঝবে,
সেদিন ধসে পড়বে পাপের পাহাড়,
সেদিন ভেঙে যাবে অত্যাচারের সাম্রাজ্য।

তবে এখনো সময় আছে,
এখনো চাইলে থামতে পারো,
এখনো চাইলে এই পাহাড়ের পাথর সরিয়ে
গড়ে তুলতে পারো ভালোবাসার এক সবুজ বন।
কিন্তু তুমি কি পারবে?
নাকি আরো পাপ জমিয়ে বানাবে আরও উঁচু পাহাড়?