কবি জন্ম নেয় এক শূন্যতার মধ্যে,
তার প্রথম কান্নার শব্দেই লেগে থাকে কবিতার সুর।
জগতের আলো চোখে পড়ার আগেই সে অনুভব করে,
শব্দেরা তাকে খুঁজছে, বাক্যেরা তাকে ডাকছে,
ছন্দেরা তার জন্য অপেক্ষা করছে।
কবি বেড়ে ওঠে রোদ্দুরের নিচে,
জলভেজা মাটির গন্ধ তাকে শিখিয়ে দেয়—
কিভাবে অনুভব করতে হয় পৃথিবীকে,
কিভাবে ভালোবাসতে হয় প্রতিটি মুহূর্তকে।
তার কষ্ট যখন তাকে ছুঁয়ে যায়,
সে তা শব্দে বাঁধে, কবিতার রঙে রাঙায়।
তার আনন্দ যখন উচ্ছ্বাসে ভাসে,
সে তা ছড়িয়ে দেয় ছন্দের মালায়।
কবি জানে,
সমাজ কখনো কবিকে বোঝে না,
তার লেখা পড়ে কেউ হাসে, কেউ কাঁদে,
কেউবা কটাক্ষ করে।
কিন্তু কবি থামে না,
সে স্বপ্নের সুতোয় পৃথিবীকে বুনতে থাকে।
তার কলম কখনো বিদ্রোহী, কখনো স্নিগ্ধ,
কখনো ভালোবাসায় ভিজে যায়,
আবার কখনো রক্তের দাগে রাঙা হয়।
সে প্রেমিকের চোখে জল আনে,
বৈরাগীর অন্তরে আগুন জ্বালায়।
কবি পথ হাঁটে একা,
তার সঙ্গে থাকে তার ছায়া,
আর থাকে তার লেখা—
যা হয়তো একদিন বদলে দেবে কারো মন,
বদলে দেবে সমাজের কোনো এক কোণ।
তার কলম কখনো প্রেমের রং ছড়ায়,
কখনো রক্তের দাগে লিখে যায় সত্য,
কখনো বৃষ্টির সুরে গেয়ে ওঠে ব্যথার গান,
আবার কখনো নীরবতায় বুনে চলে ইতিহাস।
কবি কখনো রাজপ্রাসাদের সিংহাসনে বসে না,
সে থাকে পথের ধুলোয়, ভিখারির চোখে,
সে থাকে কৃষকের কষ্টে,
সে থাকে নারীর নীরব আর্তনাদে,
সে থাকে শিশুর নিষ্পাপ হাসিতে।
একদিন কবি চলে যাবে,
কিন্তু তার কবিতা বেঁচে থাকবে।
কারো না কারো ঠোঁটে, কারো না কারো মনে,
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে।
কবিতা কখনো মরে না,
কারণ কবিতাই কবির অমরতা।