শূন্য ঘরে এক কোণে পড়ে থাকে,
নিঃশব্দ, নিঃসঙ্গ এক আলোর উৎস।
এক টুকরো কাপড়, অথচ কত স্মৃতি আঁকা তার বুকে,
কত অশ্রু গড়িয়ে পড়েছে তার নরম বুননে!

কখনো ভিজে ওঠে চোখের জলে,
কখনো প্রশান্তির হাসি ফোটে তার বুক জুড়ে।
এখানে আশা বাঁধা যায় আলোর রশিতে,
এখানে পৃথিবীর যত দুঃখ ধুয়ে ফেলা যায়।

জায়নামাজ দেখেছে এক বৃদ্ধের নড়বড়ে হাঁটু,
যে কষ্ট সহ্য করে সিজদায় নত হয়।
জায়নামাজ দেখেছে এক তরুণের লুকানো কান্না,
যে দুনিয়ার ঝড় থেকে একটু আশ্রয় খোঁজে।

জায়নামাজ দেখেছে এক মায়ের শুকনো চোখ,
যে ছেলের হেদায়াতের জন্য প্রার্থনায় বসে,
জায়নামাজ শুনেছে কত রাতের ফিসফিসানি,
যে শব্দ পৌঁছায় সরাসরি আকাশের চূড়ায়।

রাত গভীর হলে, যখন পৃথিবী ঘুমিয়ে পড়ে,
তখনো জায়নামাজ জেগে থাকে নীরবে,
কোনো এক ভোরে হয়তো কেউ এসে,
তার বুকের ওপর রাকাতের হিসাব মেলাবে।

জায়নামাজ বোঝে না ধনী-গরীব,
শুধু জানে কারো হৃদয়ের গভীর টান,
সে শুধুই এক টুকরো কাপড় নয়,
সে এক সেতু—প্রভুর সান্নিধ্যের পথ।

একদিন সবাই চলে যাবে,
জীবন ফুরিয়ে যাবে ধুলোয় মিশে,
তবুও এক কোণে পড়ে থাকবে সে,
অপেক্ষায়—আরেকটি হাত তোলার,
আরেকটি সিজদার, আরেকটি কান্নার,
আরেকটি রাকাত শেষ না হওয়া বিনম্র আত্মসমর্পণের!