আমরা আসলেই অন্যদের চেয়ে আলাদা।
আমরা সবার মতো জীবনকে উপভোগ করে চলতে পারি না;
আমরা অন্যদের মতো আরাম-আয়েশে জীবন কাটাতে পারি না;
একবেলা খাবার খেতে বসে পরের বেলা খাবারের চিন্তা আমাদের করতে হয়;
দামি পোশাক আমাদের কখনোই পড়া হয় না;
ব্র্যাণ্ডের জুতা, ঘড়ি আর সানগ্লাস আমাদের স্বপ্নে আনাও বারণ।
আমাদের জীবন থেকে মুছে ফেলতে হয় নানান আনন্দচিত্ত,
কারণ আমরা মধ্যবিত্ত।

আমাদের মন খারাপে সঙ্গ দেওয়ার মতো কেউ থাকে না;
দুঃসময়গুলোতে ভরসা দেওয়ার মতো পাশে কেউ আসে না;
আমাদের ভালো কিছুতেও কারো মন ভালো হয় না;
আমাদের ছোটখাটো কোনো অর্জনেও কারো মনে আনন্দ জাগে না;
আমাদের ঠুনকো কোনো ভুলেও মানুষের ব্যক্তিত্বে বড্ড আঘাত লাগে;
আমাদের কান্নার আওয়াজ অনেকের কাছেই শব্দদূষণ মনে হয়;
আবার আমারা হাসলেও কারো কাছে তা কুৎসিত।
আমাদের অভিযোগগুলোতে কেউ যাচাই করে না মিথ্যা নাকি সত্য,
কারণ আমরা মধ্যবিত্ত।

আমরা পৃথিবীতে বেশি কিছুর চাহিদা রাখতে পারি না;
আবার আমরা অনেক কিছু চেয়েও তা আদায় করতে পারি না;
আমরা সত্য কিছু তুলে ধরলে তা সহজেই চাপা পড়ে যায়;
আবার আমরা উচিৎ-অনুচিৎ কিছু ভাবলে তা বড়ই বেমানান;
অন্যদের জঘন্য কথা সহ্য করেই আমাদের বেড়ে উঠতে হয়;
মানুষের খারাপ আচরণেই আমরা অভ্যস্ত থাকতে হয়;
ভবিষ্যতের ভাবনায় আমাদের কত সময় হয়ে যায় ব্যয়;
জীবনের হিসাব মেলানোর পর আমাদের শূন্য থেকে যায় আয়।
আমরা বাঁচি; তবে বড্ড কঠোর, এটাই বাস্তব সত্য,
কারণ আমরা মধ্যবিত্ত।

প্রচণ্ড ভালোবেসেও আমরা হারিয়ে ফেলি শখের কাউকে;
আবার পাওয়ার পরেও ফেলে রেখে যায় অনেকেই;
ভালোবেসে আমরা কারো পাশে যাওয়া বড্ড অপরাধ হয়;
আবার ভালোবেসে কেউ আমাদের কাছে আসতেও মানা;
আমরা কাউকে জোর করে চাইতে পারি না, চাইলেও তা সত্য হয় না;
আবার আমাদের কেউ ভালোও বাসতে চায় না, ভালোবাসলেও থাকতে চায় না।
কাউকে ভালোবেসে পাওয়ার আমাদের নাই কোন সাধ্য;
বলা যায় ভালোবাসা আমাদের একেবারেই অবাধ্য।
জীবন নিয়ে আমরা সারাক্ষণ থাকি চিন্তায় মত্ত,
কারণ আমরা যে মধ্যবিত্ত।