পল্লীর নিভৃত কোণে জন্ম নিল মেয়ে সন্তান;
দাদা দাদি পিতা ঘৃণার নয়নে তাকান।
মেয়ে হয়ে জন্মানো মনে হল আজন্ম পাপ;
মেয়ে এ সমাজের অভিশাপ;
আপন পিতার কাছে পায়না স্নেহ মায়া;
সমাজ কেন দিবে তাকে ছায়া।
পিতা কয় সে হবে অন্যের সংসারের বাদি;
লেখাপড়ায় লাভ কী দ্রুত দাও বিয়ে-শাদী।
চলবে না ঘোরাফেরা পাড়া পড়শির বাড়ি;
সালোয়ার কামিজ ছেড়ে পর শাড়ি।
বাদ দিয়ে দাও পড়াশুনা;
গৃহকর্মে হতে হবে নিপুনা।
স্বামী শাশুড়ির মন জোগানোর নাও দীক্ষা;
এটাই জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় শিক্ষা।
এ কাজে যদি হও সফল;
তবেই ভাগ্যে জুটবে খুশির মেওয়া ফল।
শেষ না হতে পুতুল বিয়ে বারতে স্বামী ঘর;
বাপের বাড়ি সেদিন থেকে পর।
এটাই বাঙালি ললনার অলিখিত কারাগার।
উপায় নেই এখান থেকে পালাবার।
লাল শাড়ি পরে হয় আগমন;
সাদা শাড়িতে ঢেকে দেহ হয় নির্গমন।
স্বামী শাশুড়ি ননদের তুষ্টিই জীবন;
দিবানিশি রোবট জীবন বুকের ব্যথা গোপন।
সবাইকে খাওয়ানোর পর জোটে খাদ্য তার;
এটাই রুটিন মেয়েটির নিত্যকার।
ঘুমে ঢুল ঢুল চোখ বইতে নারে দেহ ভার;
তারপরও মিটাতে হয় স্বামীর অধিকার।
সন্তানের মা হল চৌদ্দ বছরের কিশোরী;
মেয়ে সন্তান খুশি নয় স্বামী শ্বশুর শাশুড়ি।
একে একে দশটি সন্তান গর্ভে ধারণ;
এভাবেই চলল ত্রিশ বছরের সংসার জীবন।
সন্তানের ঘরে জন্ম নিয়েছে আরো সন্তান;
এখন করতে হচ্ছে তাদের তত্ত্বাবধান।
মেটে নাই জীবনের কোন সাধ আহ্লাদ;
জীবনটা একেবারেই বিস্বাদ।
পল্লী লালনা জানে না ছলনা;
মনের ব্যথা লুকিয়ে বুকে করে কল্পনা।
জীবনের খুঁজে পায়না কোনো অর্থ;
ষাট বছর বয়সে মনে হয় জীবনটাই ব্যর্থ।
তারিখ: ৩০-০৫-২০২৪ ইং;