থামাও রণ দামামাThamao Rano Damama

এটা আমার দ্বিতীয় একক কাব্যগ্রন্থ। বইটি সাত ফর্মার। যুদ্ধের ধ্বংসলীলা থেকে পৃথিবীতে রক্ষা করা জরুরি। এই সচেতনতার প্রেক্ষাপটে শান্তির আহব্বানে লেখা প্রচ্ছদে নামাঙ্কিত কবিতাটি। এছাড়াও বইটিতে অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে দ্রোহ প্রকাশের অনেকগুলো কবিতা আছে। কবিতাগুলো সবই মৌলিক কবিতা। প্রতিটা কবিতায় সুস্পষ্ট একটি বক্তব্য আছে। অত্যন্ত সহজ, সরল এবং স্পষ্ট ভাষায় কবিতাগুলো লেখা। আশা কবি বইটি সর্বস্তরের পাঠকের মনে স্থান করে নিতে পারবে।

মুখবন্ধ

সেই ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি চলছে। তারপরও প্রথম একক কাব্যগ্রন্থ ‘বেলা শেষে হল দেখা’ মুদ্রণে উনসত্তর বছর সময় লেগে গেল। তবে একেবারে না হওয়ার চেয়ে দেরিতে হওয়া মন্দ কী! এবারে ‘থামাও রণ দামামা’ ছাপাতে আর বিলম্ব হয়নি। কাব্যগ্রন্থ ছাপানোর পিছনে বড় ভূমিকা রেখেছে আমার ছেলে—মেয়ে এবং সুহৃদ বন্ধু—বান্ধব। বিশেষ করে আমার একমাত্র ছেলে সেনা কর্মকর্তা মুদ্রণের খরচ প্রদান করাতে আমার উৎসাহ বহুগুণ বেড়ে গেল।
ছাত্র অবস্থায় স্কুল—কলেজ বার্ষিকীতে, কর্মজীবনে অফিসের পত্রিকায় কবিতা, গল্প—প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। অন—লাইন, অফ—লাইন পত্রিকা, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত নানা প্রবন্ধ ও কবিতা ছাপানোর কাজটি চলমান রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশে যৌথ গ্রন্থে বেশ কয়েকটি কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য যৌথ গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ লতিফা কলস—২০২৩ ও ত্রিপুরকাঞ্চন, ইত্যাদি।
ছোটবেলা থেকেই কবিতার প্রতি আমার দুর্বার আকর্ষণ ও গভীর মমত্ববোধ ছিল। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, পল্লীকবি জসীম উদ্দীন, শিশুকবি সুকান্ত ভট্টাচার্য, রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশদের কবিতা ছোটবেলা থেকেই নিয়মিত পাঠ করে আসছি। এ বয়সে এসেও অনেক কবিতা মুখস্থ আছে। কবিতা পড়তে পড়তেই কবিতার প্রতি ভালোবাসা জন্মে এবং আকৃষ্ট হয়ে পড়ি।
সবার কবিতা পড়লেও বিশেষ কাউকে অনুকরণ বা অনুসরণ করে আমি কবিতা লিখিনি। আমার কবিতাগুলো মূলত মৌলিক কবিতা। জীবনের উপলব্ধি থেকে কবিতাগুলোর সূত্রপাত হয়েছে। তারপরও যদি কার কবিতার সাথে সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়, তবে তা একেবারেই কাকতালীয়।
আমার কবিতাগুলো কতটুকু গুণগতমান অর্জন করতে পেরেছে এবং পাঠকদের মনে কতটা জায়গা করে নিতে পারবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন অনলাইন কবিতা আসরে কবিতাগুলো যথেষ্ট প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। বিশেষ করে, প্রখ্যাত কবি, কথাসাহিত্যিক ও বহুমাত্রিক লেখক সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ—সহ অনেকে আমার কবিতার প্রশংসা করায় আমি আপ্লুত। আশা করি, আমার কবিতা যুগদাবি পূরণ করে পাঠকের হৃদয়ে স্থান করে নিতে সক্ষম হবে।
বর্তমানে আধুনিকতার নামে অনেকেই কিছু শব্দ পাশাপাশি সাজিয়ে দুর্বোধ্য বিমূর্ত কবিতার সৃষ্টি করছেন। তাদের অভিমত কবিতার অর্থ উদ্ধার পাঠকের দায়িত্ব, কবির নয়। আমি বিশ্বাস করি, কবিতা পাঠকদের জন্য লেখা। তাই পাঠকদের বোধগম্য হওয়া অত্যন্ত বাঞ্ছনী। যে লেখা পাঠকদের মনের দাগ কাটতে পারে না সে লেখার যৌক্তিকতা কোথায়?
আমি বিশ্বাস করি, কবিতায় ছন্দ ও বক্তব্য অপরিহার্য। তাই প্রতিটা কবিতায় অবশ্যই একটি বক্তব্য থাকতে হবে। আর ছন্দ না থাকলে গদ্য ও কবিতার মধ্যে পার্থক্য কোথায়? একটি কথা মনে রাখা দরকার দেড়শো পৃষ্ঠার একটি উপন্যাসের বক্তব্য ২৪ লাইনের কবিতায় উপস্থাপন করা সম্ভব।
যাহোক, আমার কবিতা সাধারণ পাঠকদের জন্য লেখা। আশা করি তারা সহজেই আমার কবিতা হৃদয়ঙ্গম করতে পারবেন। কবিতায় সমাজ—সভ্যতা, নৈতিকতা, স্বদেশ প্রেম ও স্বাধীনতা, প্রকৃতি ও প্রেমের ছোঁয়া পাওয়া যাবে। আমার কবিতা যদি পাঠকদের সামান্য আনন্দ দিতে পারে, তবে আমার লেখা আমি সার্থক বলে মনে করব।
আমার ফেসবুক বন্ধুরা অনেকে বারবার কবিতার বই প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছেন। তাদের অনুরোধ আমাকে কবিতা লেখায় উৎসাহি করেছে। আমি বাংলা কবিতা ডট কম ওয়েবসাইটে নিয়মিত কবিতা লিখে থাকি। সেখানকার পাঠক ও কবি বন্ধুরা কবিতা লেখার ক্ষেত্রে আমাকে নিয়মিত উৎসাহ প্রদান করে এসেছেন। ফেসবুক ও বাংলা কবিতা ডট কম—এর সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘থামাও রণ দামামা’ আমার দ্বিতীয় কবিতার বই। বইটি নির্ভুলভাবে প্রকাশের ক্ষেত্রে চেষ্টার এতটুকু ত্রুটি ছিল না। তারপরও প্রথম মুদ্রণে নির্ভুল বই বের হওয়া কষ্টকর। যদি কোনো ভুল থেকে যায় সম্মানিত পাঠকবৃন্দ বিষয়টি ক্ষমা—সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। হোয়াটসঅ্যাপে ভুলগুলো ধরিয়ে দিলে পরবর্তী সংস্করণে একটি নির্ভুল বই উপহার দেয়া সম্ভব হবে। প্রকাশনার সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।


১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ শেখ মো. খবির উদ্দিন

আমার তিন সন্তান
শাহীন, জুঁই ও জ্যোতি
যারা স্বমহিমায় উদ্ভাসিত,
যাদের সুসংবাদে মন আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে,
যাদের এতটুকু দুঃসংবাদে অশ্রম্নতে দু’চোখ ভরে যায়।
আমার নয়নের সেই তিন মনিকে
আমার দ্বিতীয় কবিতার বই উৎসর্গ করলাম।