সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র ভবনে গতকাল (২০-০২-২০২৩ তারিখ) বাংলা কবিতা আন্তর্জাতিক কবি সম্মেলন ২০২৩ অনুষ্ঠিত হলো। সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কবিগান উপস্থিত হয়েছিলেন। এছাড়া ভারত থেকেও দুজন কবি শুধুমাত্র এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ এসেছেন। সম্মেলনের মূল উদ্যোক্তা ও আয়োযোজক ছিলেন শ্রদ্ধেয় কবি ও এডমিন জনাব কবীর হুমায়ূন।

এই অসাধারণ আয়োজনের জন্য প্রথমেই জনাব কবি কবীর হুমায়ূনকে জানাই সশ্রদ্ধ সালাম ও অভিনন্দন। বিশেষ করে স্বল্প পয়সায় সুন্দর আয়োজন সত্যিই অতুলনীয় ছিল। অনুষ্ঠানের যে সমস্ত দিক আমাকে মুগ্ধ করেছে তা নিম্নরূপ;

১) সকল কবিকে তাদের স্বরচিত কবিতা পাঠের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

২) সকল কবিকে মঞ্চে বসার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এটা যেন সাধারণ-অসাধারণ এবং নবীন-প্রবীণের একটা মিলন মেলা হয়ে উঠেছিল।

৩) সকল কবিকে একটি করে ক্রেস্ট ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানের ভাবমূর্তিকে আরো উজ্জ্বল করেছে।

৪) কবিতা আবৃত্তির পাশাপাশি গান, প্রবন্ধ পাঠ, কৌতুক পরিবেশন, অনুষ্ঠানকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলেছে।

৫) কবি মাতাদের পদক প্রদান অনুষ্ঠানের আর একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন ছিল।

৬) অনুষ্ঠানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে আরেকটি বিষয়, তা হল অপ্রয়োজনীয় অধিক বক্তৃতা যা এই অনুষ্ঠানে ছিল না।

৭) কবিদের কবিতার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে।

৮) অনুষ্ঠানে খাওয়ার আয়োজন ছিল খুবই সুন্দর। সকালে চা নাস্তা, দুপুরে মোরগ পোলাও, বিকালে পিঠা উৎসব, সব মিলে অসাধারণ।

অর্থের স্বল্পতা না থাকলে অনুষ্ঠানকে হয়তো আরও সমৃদ্ধ করা যেত। বিশেষ করে, অনুষ্ঠানের ভেনুটি আরেকটু সুন্দর হলে হয়তো ভালো হতো।

প্রস্তাবনা:
প্রতিবছর এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলে তা কবিদের, বিশেষ করে নতুন কবিদের জন্য খুবই ভালো হবে বলে আমি মনে করি। আগামী অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমার কিছু প্রস্তাবনা সদয় বিবেচানার জন্য নিম্নে উপস্থাপন করলাম:

১) ভেনু: অনুষ্ঠানের ভেনু আর একটু ভালো হওয়া দরকার। এ বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে

২) স্মারক গ্রন্থ: অনুষ্ঠান উপলক্ষে একটি স্মারক গ্রন্থ ছাপানো দরকার। এ গ্রন্থে যে সমস্ত কবিগন তাদের কবিতা ছাপাতে চান তারা অতিরিক্ত ৫০০/১০০০ টাকা করে অনুদান প্রদান করবেন। কবিগণ তিনটি করে কবিতা জমা দিবেন। এর মধ্য থেকে মডারেশন বোর্ড একটি কবিতা নির্বাচিত করবেন। যদি কোন কারণে কোন কবির কবিতা গ্রন্থে স্থান দেয়া সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে কবিকে তার টাকা ফেরত প্রদান করা হবে।

দ্বিতীয়তঃ এই স্মারক গ্রন্থে কবিতা সমালোচনা, কবিতা লেখার রীতি, কবিতার বিভিন্ন মাত্রা, সুর, ছন্দ, ইত্যাদি বিষয়ে প্রবন্ধ থাকতে পারে-যা আমার মত নবীন কবিদের ভবিষ্যৎ কবিতা লেখাকে সমৃদ্ধ করবে।

৪) শ্রেষ্ঠ কবি সম্মাননা: আসরের কবিদের কবিতাকে সম্মান জানানোর জন্য শ্রেষ্ঠ তিনজন কবিকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া যেতে পারে।

৫) কবিতা আবৃত্তি ছাড়াও অনুষ্ঠানে নৃত্য, গান, ছোট নাটিকা, সংযোজন করা যেতে পারে।

৬) অনুষ্ঠানে জনাব সেলিনা খাতুন এর মত প্রতিষ্ঠিত কবি বিশেষ করে পদকপ্রাপ্ত কবিদের আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে। এতে করে নতুন পুরাতনের একটি সেতুবন্ধু সৃষ্টি হবে।

৭) অনুষ্ঠানে প্রকাশক ও সরকারের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে। এতে অনুষ্ঠানের মান যেমন বৃদ্ধি পাবে; তেমনি প্রশাসক ও প্রকাশকদের সাথেও  নবীদের কবিদের একটা যোগাযোগ সৃষ্টি হবে। ফলের নবীন কবিদের কবিতা ছাপানোর পথ সুগম হবে।

এগুলো সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব মতামত। আমার বিশ্বাস এ বিষয়ে আরো অনেকেই তাদের মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করবেন। সবার মতামত গুলো একত্রিত করে আগামী অনুষ্ঠানের জন্য একটি সুন্দর কর্মপরিকল্পনা করা যেতে পারে; যাতে অনুষ্ঠান সর্বাঙ্গীর সুন্দর হয়।

আমি বাংলা কবিতা.কম এর সকল কবি বন্ধুদের সাফল্য কামনা করছি। বাংলা কবিতা.কম কবিদের মিলন মেলায় পরিণত হোক এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আমার আলোচনার এখানেই ইতি টানছি। ধন্যবাদ সবাইকে। সবাই ভালো থাকবেন।
            তারিখ: ২১-০১-২০২৩ ইং;