আমার অস্তিত্ব জাগে প্রাচীন বৃক্ষের ক্ষয়ে,
পত্রপুটের স্তব্ধতায় ঘুমিয়ে থাকা আলোয়—
যেন সূর্যাস্তে হারিয়ে যাওয়া শঙ্খচিলের গান।
অতীতের শেকলে বাঁধা এক নদী,
তোমার স্মৃতির মতোই রহস্যময়
বয়ে যায় পরিত্যক্ত শৈবাল ছুঁয়ে।

মৃত্যু কি তবে এক প্রতিধ্বনি?
কিংবা নিশীথ রাতে বেজে ওঠা
অজানা গ্রহের কাঁপন?
তুমি কি অনুভব করো
নক্ষত্রের মধ্যে শীতল চুম্বনের রেখা?
পৃথিবীর গোপন হৃদস্পন্দনে
আমার নাম লিখে রেখেছে কোনো কাল্পনিক কবি।

আমার প্রিয়তমা!
তোমার নিঃশ্বাসে আমি এক অমর বালিকা,
যার চোখে ছায়াপথের ছিন্ন কাব্য
জেগে ওঠে নীলিমার অক্ষরে।
তোমার চোখের জলে গলে যায়
অপরাহ্নের অব্যক্ত শোকগাথা।

আমার পুত্র!
তোমার আঙুলের প্রথম স্পর্শে
আমি এক জাগ্রত বিপ্লব।
তোমার নামের প্রতিটি অক্ষরে
আমি লিখে গেছি এক জীবন্ত মন্ত্র—
যে মন্ত্রে একদিন সূর্য ডুববে,
পৃথিবীর নতুন অঙ্ক শুরু হবে।

আমার এই দেহহীন কণ্ঠস্বর
অরণ্যের ঝরা পাতায় প্রতিধ্বনিত হবে,
যেখানে পাখিদের ডানায়
মিশে থাকে অপূর্ণ স্বপ্ন।
তোমাদের আর্তনাদে আমি ফিরে আসব
আকাশের উন্মুক্ত দিগন্তে,
একজন পথিক হয়ে,
যে চাঁদের নীলে লিখে যায়
মৃত্যুর পরও জীবনের গান।

আমার শেষ ভাষ্য শুধু হাওয়ার ইশারায় থাকবে—
গোধূলির আলো আর গভীর রাতের অন্ধকারে।
তারার ঝরে পড়া রশ্মিতে
তোমরা খুঁজে পাবে এক শাশ্বত মুক্তি।
তবুও চাঁদ সাক্ষী থাকবে—
আমার অস্তিত্বের অশেষ অর্ঘ্য।