অস্থিরতার গর্ভে জন্ম এক ভবিষ্যৎ,
যেখানে ঘাসের কাঁটা আর রৌদ্রের আগুনে
শরীরের অভিমান গড়ে তোলে কঠিন প্রাচীর।
পাহাড় থেকে নদী ভাঙে না,
বরং সময়ের সর্পিল ছোবলে
বিন্দু বিন্দু আত্মা খসে পড়ে—
যেন শূন্যতার মেঘ।

অবিন্যস্ত অঙ্গুলি ছুঁয়ে স্মার্টফোনের
অন্ধ আলোর স্রোত বয়ে চলে,
তবু কোথাও নেই জাগ্রত সূর্যের স্পর্শ।
রাত্রির প্রান্তে এক নিষ্ক্রিয় স্রোতস্বিনী
আলোর সংজ্ঞা ভুলে,
গুমরে মরে নিজেরই ছায়ায়।

ইতিহাস?
তার তো এখন কেবল মৃত সঞ্চয়!
জীবনের পাতা থেকে ঝরে গেছে শব্দের ঘ্রাণ।
কেউ জানে না—
নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, কিংবা ফররুখের
অস্তিত্ব কেমন মায়ায় বাঁধা ছিল।
তাদের কণ্ঠস্বর এক অপূর্ণ নক্ষত্রের মতো
হারিয়ে গেছে কালবিলাসে।

পলকের মুদ্রায় বিক্রি হয় মূল্যবোধ,
অন্যায়ের আলিঙ্গনে ভেঙে পড়ে শ্রদ্ধার মিনার।
কিছু নেই যা দাঁড়াতে শেখায়—
মহাসাগরের তলদেশে সাহসের নৌকা,
আকাশে ডানা মেলার তৃষ্ণা—
সবই যেন ভুলে যাওয়া জীবাশ্ম।

একটি জাতি, যার হৃদয়ে জমাটবাঁধা উল্লাস,
কিন্তু অনুভব নেই।
তারা হাঁটে—
কিন্তু পথের স্পর্শে অনুভূতির কাঁপন নেই।
তারা শোনে—
তবু শব্দের ভেতরে লুকানো আহ্বান
পথ হারায়।

তবুও কি কিছু থাকে?
ক্লান্তির ছায়ায় লুকিয়ে
জেগে ওঠে এক মিথ্যা স্বপ্নের লোভ।
মুক্তি?
তারা জানে না—
মুক্তি মানে নিজেকে ছুঁয়ে দেখার ক্ষমতা।

যে জাতি রৌদ্রের বুকে দাঁড়ায় না,
যারা বৃষ্টির কান্নায় হারায় না
তাদের গন্তব্য এক চিরস্থায়ী নির্বাসন।
আর সেই নির্বাসনে,
একটি আলোকবিন্দু নয়,
বরং রক্ত-লেখা কবিতা—
অস্থিরতার ছায়ায় হারানো একটি প্রজন্ম।