তোমার ভালোবাসা ছিলো যেন এক অর্ধচন্দ্র,
পূর্ণিমার প্রান্তে দাঁড়ানো অসম্পূর্ণতা।
সেখানে আমি ছিলাম শুধু ছায়া,
তোমার মেরুতে আটকে থাকা গ্রহের বৃত্তে—
কখনো ঘুরে ফিরে মিশে যাওয়া এক নিঃশেষ কেন্দ্রবিন্দু।
তোমার হৃদয় ছিলো যেন শীতল আগ্নেয়গিরি,
নির্বাসিত ধোঁয়ার ছত্রাক,
তবু রন্ধ্রে রন্ধ্রে লুকানো তাপ।
আমি হতে চেয়েছিলাম সেই মাটি,
যার স্তরে স্তরে জমা হবে তোমার বিস্মরণ।
কিন্তু তুমি চেয়েছিলে, আমি হই কেবল বাতাস,
অদৃশ্য, অমল, অথচ সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা।
কিছু ভালোবাসা এক মৃতদেহের মতন—
বেঁচে থাকে শোকগাথার অমৃতে;
তোমার ছিলো সেই রক্তশূন্য রঙ,
যা অস্তিত্বহীনতার আলোয় ঝলমল করে।
তুমি চেয়েছিলে আমিই হই তোমার স্মৃতি,
তোমার বিস্মৃতিতে হারিয়ে যাওয়া প্রতিধ্বনি।
তোমার চোখে যে নদী ছিলো,
সেখানে একপাশে দাঁড়িয়ে আমি দেখেছি
তোমার আকাশে ভাসতে থাকা মেঘের গন্ধ।
সেই মেঘেরা নামেনি কখনো বৃষ্টিতে,
তারা দাঁড়িয়ে ছিলো যেন শবযাত্রার নিঃশব্দ মিছিল।
আমি হতে চেয়েছিলাম সেই দিগন্ত,
যেখানে মেঘ আর আকাশ একসঙ্গে মিলে যায়—
কিন্তু তুমি চেয়েছিলে, আমি হই কেবল দৃষ্টি,
যা চেয়ে থাকবে চিরকাল, তবুও পাবে না ছোঁয়া।
আমাদের প্রেম ছিলো এক অসম্ভব গণিত,
সমীকরণের প্রতিটি অঙ্কে লুকানো ছিলো দ্বৈততা।
তুমি চেয়েছিলে আমি হই এক অলৌকিক সমাধান,
তবু অঙ্কগুলো ভেঙে পড়েছিলো শূন্যের দ্বীপে।
তোমার ভালোবাসা ছিলো এক চিরন্তন ধাঁধা,
যার উত্তর জানার জন্য আমি ভুলে গিয়েছিলাম
নিজেরই ছায়া।
অর্ধচন্দ্রের ছায়ায় আমি দাঁড়িয়ে আছি এখনো,
নিঃশব্দে শিখছি—
ভালোবাসা মানে হয়তো শুধু অসম্পূর্ণতাই।