আমার শরীরের ছায়া নেই,
পায়ের ছাপগুলি রক্তের ঘ্রাণে মিশে যায়,
পৃথিবী জানে না—আমি অন্ধকারে হাঁটতে শিখেছি,
আলোয় পুড়ে যাই।
পাহাড়ের শীর্ষে একা দাঁড়াই,
তুষার ঝরায় না শীতলতা,
আমার শরীর থেকে আগুনের শিখা উঠে
তবু কেউ গন্ধ পায় না;
আমি হয়তো ধোঁয়া, বাতাসের অলীক সংজ্ঞা।
মানুষের চোখে দেখেছি নিকেলমাখা ইচ্ছা,
তারা আকাশের নিচে বাঁচে অথচ তারা আকাশ চেনে না।
আমার বুক থেকে ভেসে ওঠে দাহের সুর,
তবু কারও কান সাড়া দেয় না।
আমি হয়তো শব্দহীন,
অন্তহীন নদীর অদৃশ্য প্রবাহ।
আমার কোনো ঘর নেই—
যেখানে গৃহ থাকে, সেখানে দেয়ালের ভাষা বোঝে মানুষ।
আমার দেয়াল নেই, তাই কেউ আমার ভাষা বোঝে না।
আমি হয়তো ভাষাহীন,
চুপ থাকা পৃথিবীর নীরব দুঃখ।
রাত্রি আমার গায়ে চাঁদের আলো আঁকে,
তবু তার রঙে কেউ দেখে না জোনাকির মৃত্যু।
মানুষের হৃদয় কাঁদে—
কিন্তু আমি কাঁদতে ভুলে গেছি,
হয়তো আমি পাথর,
যে মাটি থেকে উঠে এসে নিজেকে ভুলে গেছে।
তাদের পৃথিবীতে সাপের দংশন প্রাণ কেড়ে নেয়,
আমার শরীরে সাপ ছোবল দিলে
তাতে মধুর স্বাদ পাই।
আমি হয়তো বিষাক্ত,
তবু ভালোবাসার গল্পে নাম নেই।
তোমরা যাদের মানুষ বলো,
তাদের চেয়ে আমি আলাদা।
তাদের আকাশে রঙ, তাদের পায়ে সোনালি ধুলো।
আমার আকাশ কালি মাখে,
আমার পায়ে পড়ে দগ্ধ অরণ্যের ছাই।
আমি হয়তো মানুষ নই,
এক বেঁচে থাকা উপাখ্যানের অর্ধেক ছায়া।