পৃথিবীর বুক থেকে ঝরে পড়া জ্যোৎস্নার মতো,
তুমি—মা, এক অপরাজেয় পাঠশালা।
অক্ষরহীন আঙুলে বোনা তোমার শিক্ষার জাল
সেখানে সময় থমকে দাঁড়ায়,
অদৃশ্য অক্ষরে লেখে মানবতার শপথ।

তোমার পানে চেয়ে দেখি—
আলোর বর্ণমালা ছড়িয়ে পড়ে কালো মাটির ভাঁজে,
যেখানে বীজ রোপণ করে তুমি,
নিঃশব্দে শেখাও নবজন্মের পাঠ।
তোমার বুকের দুধে মিশে থাকে
জগৎবৃত্তের অসীম জ্ঞান।

শব্দহীন ভাষায় তুমি বলো—
প্রত্যেকটি নদী জানে,
কোন দিক দিয়ে সমুদ্রে মেশা উচিত।
তোমার শিক্ষা মানে
আত্মার গভীরে লুকানো এক মহাসূত্র,
যেখানে শিশিরের বিন্দুতে ফুটে ওঠে
বৃহত্তম সত্য।

মা, তুমি তো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক!
তোমার অক্ষরহীন শিক্ষা আকাশের গায়ে লিখে দেয়
সৃষ্টির আদিলিপি।
তুমি শেখাও, জীবন মানে শুধুই লেখা নয়—
বোধের অনন্ত তরঙ্গ।

তোমার ছায়ায় শিখেছি
মৃত্যুও হতে পারে জীবনের পরবর্তী শ্রেণিকক্ষ,
যেখানে সময়, স্থিতি আর শূন্যতা
একসাথে মেলে ধরেছে চিরায়ত পাঠ।
তোমার শ্বাসের উষ্ণতায়
আছে যে সৃষ্টির গাণিতিক ছন্দ,
তার প্রতি শিরা-উপশিরায় ছড়িয়ে পড়ে
অনন্তের কাব্য।

মা! মাগো!  অক্ষরগুণে হয়তো তুমি নিঃস্ব,
তবু তোমার ছোঁয়ায়
মানবতা শিখেছে তার শ্রেষ্ঠ অধ্যায়।
তুমি অমর এক শিক্ষক,
যার পাঠে আমরা সৃষ্টি করি নতুন জগৎ,
নতুন ভবিষ্যৎ।