স্মৃতির স্নায়ুরেখা আঁকা শোকপালকে,
তোমাদের গল্প, নাফিসারা—
কালের শস্যক্ষেত্রে স্বপ্ন ফসলে সেচ দেওয়া
সেই নতজানু যোদ্ধা,
যারা রক্তের আল্পনায় আঁকে
মৃত্যুর চুম্বনে জাগ্রত জীবন।

বাতাসে ভাসে তোমাদের নাম,
তবু ইতিহাস তোলে না তার ক্লান্ত চোখ,
শহীদের লাশ থেকে উপড়ে নেয়
নিস্পৃহ চুমুক।
কে শোনে তোমাদের জিজ্ঞাসা?
কে গুনে রক্তে ভেজা রাস্তাগুলো?

তোমাদের বাবা-মা যে সংসারের প্রাচীরে
আশ্রয় খোঁজে—
তোমরা সেই প্রাচীর ভেঙে
প্রান্তরের বাতাসে লিখে যাও
সময়ের অমোঘ বাণী।
তোমাদের শিরায় বয়ে চলে
যে অশান্ত মহাকাল,
তার কাছে মিথ্যে মনে হয় বাঁচার সকল কৌশল।

সেই পথে, যেখানে মৃত্যুর প্রতিধ্বনি—
তোমাদের পায়ের চিহ্ন হয়ে দাঁড়ায়
একটি জেগে ওঠা জাতির অস্তিত্ব।
তোমরা হারিয়ে যাও রক্তরেখায়,
তবু পেছনে রেখে যাও
একটি দুঃখজড়ানো উদাসীন কবিতা।

নাফিসারা ফিরে আসে না;
তারা শুয়ে থাকে দেশের কবরস্থানে,
তাদের চোখের আলোয়
একটি জাতির ভোর হয়।
তারা পৃথিবীর কোলাহল শুনতে পায় না,
তাদের হৃদয়েই লেখা থাকে
জীবন আর মৃত্যুর শিলালিপি।

আজ যদি কারও মনে পড়ে—
তোমাদের আত্মত্যাগে বাঁচা এই প্রভাত,
তাহলে সময় থমকে দাঁড়িয়ে বলবে—
তোমরা ছিলে।
আর ছিলে বলেই,
আমরা এখনো বাঁচার গান গাই।