অন্ধকারে ডুবে গেছে ভোরের পাখি,
তার গান নেই, শুধু স্মৃতির ছায়ায় জেগে থাকে।
একটু একটু করে সরে যায় জীবনের রং,
যেন জলপাই পাতায় ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির দাগ।
তুমি ছিলে—
নক্ষত্রের মতো দূরে, অথচ এত কাছে।
তোমার ছায়ায় ছায়ায়
আমি তৈরি করেছিলাম আমার রঙিন ভূগোল,
যেখানে প্রতিটি শহর ছিলো তোমার নামে।
কিন্তু সেই মানচিত্র,
আমার নিজের হাতেই ছিঁড়ে গিয়েছিলো একদিন।
আমি জানি না কেন,
কেন অনুভূতিগুলো নদীর মত
শুকিয়ে গেল মরুভূমির বুকে।
তোমার হাসি ছিলো বসন্তের সুবাস,
তোমার চোখ ছিলো মেঘের কবিতা।
কিন্তু আমি সেই বসন্তকে পরিণত করেছিলাম
শুকনো পাতার বিদ্রোহে।
আজ আমার চারপাশে শুধু নৈঃশব্দ্যের ঝড়,
যেখানে প্রতিটি শব্দ
আমার নিজের বুকের গহীন বেদনা।
তোমার মুখখানি এখন এক দূরবীন,
যে দূরত্বে চোখ রাখি,
তোমার ছায়া আবছা হয়ে যায়।
তুমি কি জানো?
অবহেলা শব্দটি এত ধারালো হতে পারে—
যেন তা কেটে দেয় হৃদয়ের সমস্ত আর্তনাদ।
আমি একটি শব্দের খোঁজে বেরিয়েছি,
যে শব্দ আমাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে আনবে।
তোমার স্পর্শের প্রতিচ্ছবি,
আজও জমা আছে হৃদয়ের কোনো এক গোপন কোণে।
আমি প্রতিনিয়ত মুছে দিই নিজেকে—
তোমার স্মৃতির সামনে দাঁড়ানোর অক্ষমতায়।
তুমি ফিরবে না জানি,
তবু প্রতিটি সন্ধ্যা
তোমার নামে লিখে যায় বেদনার নতুন কবিতা।
আমি আজ জানি—
প্রেম শুধু প্রাপ্তি নয়,
প্রেম এক মহাকাব্যিক অনুশোচনা,
যার প্রতিটি পৃষ্ঠা
পোড়া ধূপের গন্ধে ভরা।
আমি আজ হারিয়েছি—
তোমার কাছে শুধু নয়,
আমার নিজের কাছে।
এই হারানোর গানে
বেঁচে থাকি প্রতিটি মুহূর্ত।
তুমি হয়তো জানো না—
প্রতিটি দীর্ঘশ্বাসে আমি তৈরি করছি
একটি নতুন জগত,
যেখানে আমি আর তুমি
কোনো দিন আলাদা হবো না।
এ এক অদ্ভুত প্রার্থনা,
যেখানে ঈশ্বর নেই—
শুধু স্মৃতির অলংকরণে আমি বেঁচে থাকি।