অন্ধকারের গহ্বরে জমে ওঠা নক্ষত্রমালা,
তোমার চোখের শূন্যতা যেন তারার হাহাকার;
এখানে সময় থমকে দাঁড়ায়,
ঘড়ির কাঁটা ভেঙে যায় এক বিভাজনহীন অনন্তে।
তুমি কি সত্যি হেলেনকে ভালোবেসেছিলে,
নাকি সেই ভালোবাসা ছিল এক
মায়াজাগতিক অস্তিত্ববোধ,
যেখানে প্রেমের সংজ্ঞা অমর্ত্যলোকের ছায়ায় ধরা দেয়?
পৃথিবীর ইতিহাস লিখে রেখেছে
তোমার নিঃসঙ্গতার শিলালিপি।
তুমি ছিলে ভাষার এক মায়াআর্কিটেক্ট,
যেখানে শব্দেরা নির্মাণ করেছিল এক প্যারাডক্স-সেতু,
যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল
কালের সমস্ত বেদনা, আকাঙ্ক্ষা ও সংকল্প।
আজকের পৃথিবীতে যখন
প্রযুক্তির শ্বাসরুদ্ধকর নৃত্যে হারিয়ে যায় মানবিকতার স্পন্দন,
তোমার কবিতা যেন এক সাইবার-নির্জন দ্বীপ;
পৃথিবীর প্রযুক্তির চক্রে বন্দী মানুষ
তোমার শব্দে খুঁজে নেয় তাদের হারিয়ে যাওয়া আত্মা।
তুমি কি জানো,
তোমার কবিতা এখনো
কল্পনার বাষ্পে গড়ে তোলে এক বৈদ্যুতিন বাগান,
যেখানে প্রযুক্তি আর প্রকৃতির মিলনে
মানুষ নতুন করে আবিষ্কার করে ভালোবাসার সংজ্ঞা।
তোমার নিঃসঙ্গতা এক
মেটাফিজিকাল গ্যালাক্সি,
যার প্রতিটি তারা ইতিহাসের আলোকবর্ষ দূরে;
কিন্তু সেই তারাগুলি আজো আমাদের হৃদয়ে
নিঃশব্দ বিপ্লবের আলো ছড়ায়।
তুমি বেঁচে থাকবে,
মানবতার শিকড়ে লেগে থাকা
অমর সম্ভাবনার কবি হয়ে;
তোমার বিয়োগ শুধু নয়
সাহিত্যকাননে এক নববসন্তের জন্ম।
(উৎসর্গ : নিঃসঙ্গ কবি হেলাল হাফিজ কে
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪)