বিহ্বল নক্ষত্রের মাঝে লুকিয়ে থাকা তারাদের মতো,
জ্বলে-পুড়ে অঙ্গার হয়েছে যে প্রেম, তার ছাই
নিঃশব্দে ভেসে যায় অশ্রু বাষ্পের ঘ্রাণে,
চুপিচুপি ডুব দেয় সময়ের অন্ধ স্রোতে।

কে খুঁজে পাবে, সেই হারানো অস্তিত্বের ছায়া?
যে স্মৃতি লুকিয়েছে মহাবিশ্বের বিস্মৃত অগ্নিতে,
চেনারও অতীত, বাঁধা পড়া নিরালায়;
যে নদী অন্ধকারে মিশে গেছে ধূলিরে স্রোত হারিয়ে।

পৃথিবীর কোথাও কি জানে—
কেন এত অন্তঃসলিলা দহন জেগে ওঠে হৃদয়ের গভীরে?
অবিরাম দগ্ধে ছাই হলো যে অনুভূতি,
তার পাশে কি কোনো শোকের অলোক আঁকড়ে আছে?

জীবনের নিভৃত কক্ষে বন্দী একাকীত্বের মহানায়ক,
তুমি কি জানো কীভাবে ভাঙে হৃদয়ের শিরাগুলি
একটি ফুল ঝরে পড়ার মতো মূল্যহীনতায়?
নিঃশব্দে ছিঁড়ে যায় যে প্রেম, তার কান্না
তুমি শুনবে না, শুনবে না।

অবিচলিত বুকে ঢেউ তুলে চলে যায় যে ভালোবাসা,
তোমার কোনো চেতনাও খোঁজ পায় না;
তুমি হয়তো জানতে না, কেমন করে
একদিন আমি হতে চেয়েছিলাম সত্ত্বার ঐ মহাস্রষ্টা,
কিন্তু হয়েছি নিঃশব্দ, নিস্তব্ধ একাকীত্বের মহানায়ক।

এমন একটি জীবন, যেখানে আত্মিক রক্তপাত নিঃশব্দে বয়ে যায়
অজানা বেদনার এক গভীর স্রোতে;
যেখানে দৃষ্টি হারিয়েছে অমল স্বপ্নের আকাশে,
আর হৃদয় হয়ে উঠেছে স্থবির অঙ্গার,
যেমন মহাকালের পাথরে ক্ষয়ে যায় প্রণয়ের নিবিড় স্মৃতি,
নিঃসীম অন্ধকারে হাওয়ার সঙ্গে মিশে যায়
এক নিঃশ্বাস, এক বিনাশ, এক প্রান্তহীন বিদায়।