তোমার চলে যাওয়া ছিল এক চিরন্তন ধূসরতা,
যেন পাতাঝরা বনভূমির উপর, আলোর অনুপস্থিতি চেপে বসেছে।
জোনাকির আলো কি আর পথ দেখাবে?—এই রাতে তুমি
হারিয়ে গেলে অন্ধকারের বুকে।

পোড়া মাটির গন্ধে ভর করে কেমন যেন
পৃথিবীর ধমনির নীরবতা ফাঁপিয়ে উঠল,
হৃদয়ের গভীরে ধরা দিল এক রূপকথার ভাঙা সুর।
আমি কি কোনো পুরনো দাহ নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম?
নাকি এই নিঃশ্বাসে মিশে ছিল এক অনন্ত ক্ষুদ্রতম মুক্তি?

তোমার বিদ্রোহের মাঝে লুকিয়ে আছে এক গভীর সুরেলা কান্না,
যেমন নদীর তলদেশে জমে থাকা পাথরের ওপর
পড়তে থাকে শতাব্দীর বৃষ্টির তীক্ষ্ণ আঘাত,
তবুও—নিঃশব্দ, ব্যর্থ।

এই চোখ দুটো দেখছে এক দূরবর্তী লোকালয়,
সেখানে কোনো রোদ নেই, শুধু ছাই-রঙা মেঘের জাল,
অথবা তোমার অবিনশ্বর ছায়া, যে কি না ছুঁয়ে যায় বালিয়াড়ির কোলাহলে।
এ এক পৃথিবী, যেখানে সময়ের লুকোচুরি
ফিরিয়ে আনে মৃত বসন্তের স্মৃতি—বেমানান শব্দের প্রতিধ্বনি
আর অতীতের কোনো বেদনাবাহী গান।

একা মনে হলেও আমি একা নই,
তুমি আছ—আশেপাশে ঘুরে বেড়ানো অদৃশ্য কুয়াশার মতো,
যে কুয়াশা চেপে ধরে বুক,
মোহের কাঁটায় বাঁধা, এক পরিত্যক্ত রাজপথের নিস্তব্ধতা।

আমাদের বিচ্ছিন্নতার মাঝে লুকিয়ে আছে এক মহাজাগতিক চিহ্ন,
যেন প্রতিটি কল্পনা শেষ হয় এক ভিন্ন বাস্তবতায়—
তোমার ছায়া খুঁজে ফিরি আকাশের প্রান্তে,
নক্ষত্রেরা উজ্জ্বল হয়ে উঠলেও—তোমাকে কখনও দেখা যায় না।