ভালবাসার আরশিতে ঝরে পড়া পাতা—
নির্দয় ঝড়ের শব্দতৃষ্ণায়, যেন তারার বিলাপ
স্বপ্নের প্রদীপ, করুণার মঞ্জুষা খুলে
অশ্রু-সিঞ্চিত শপথে লেখা এক মহাকাব্য।
দেবতাদের ছায়া কি ছিল?
ছিল কি দুঃস্বপ্নের পাঁজরে জড়ানো বেদনামালা?
নাকি স্বেচ্ছাচারী নীরবতা,
যে নীরবতা দংশন করে এক মহাকালের প্রান্তে?
পার্বতীর কপালে জেগে থাকা চিহ্ন—
কেবল এক কালির কলঙ্ক নয়,
সে এক কালের মানচিত্র,
যেখানে প্রেমের খরায় বয়ে গেছে শূন্যতার তুফান।
চন্দ্রমুখীর চোখে ঝরে পড়া আলোর আঁকিবুকি—
সেখানে কি রাত্রির শেকলে বাঁধা ছিল বিশ্বাস?
যেখানে তার সাধনার বীজ অঙ্কুরিত হয়নি
একটি মাত্র আশার বুকে?
তবুও ভালবাসা জেগে থাকে তার হৃদয়ের গর্ভে,
যেন চাঁদের আলোয় অপূর্ণ প্রার্থনা।
দেবদাস!
তোমার প্রতিটি শ্বাসে বেজেছে অপমানের বীণা,
তবু কেন যেন জীবন তোমাকে ডেকে যায়
বিপন্নতার দরজায়।
কেন, তোমার প্রেম এক বিষাক্ত তীর হয়ে
ফিরে আসে পারোর হৃদয়ের বধ্যভূমিতে?
তোমার শব্দ কি শুধুই অন্তঃসারশূন্য প্রতিধ্বনি?
নাকি নিঃশ্বাসের শূন্যতাও এক দহন?
পৃথিবীর প্রতিটি কোণে আজও ভেসে আসে
কলঙ্কের মর্মর ধ্বনি।
এই একবিংশ শতাব্দীর শূন্যগর্ভে দাঁড়িয়ে
তোমার গল্প পুনর্লিখিত হয়,
মহাজাগতিক ইথারে মিশে যায় চন্দ্র-সূর্যের ভাষায়।
তবুও, দেবদাস,
তোমার নামের প্রতিধ্বনি নিয়ে
জেগে থাকে ভালবাসার রোদন,
ভালবাসার অবিনশ্বর ভগ্নাংশ।
অস্তিত্বের এক অসমাপ্ত মানচিত্রে
তোমার জীবনের ছাপ জেগে থাকে
যেন এক কালজয়ী প্রশ্ন—
কেন ভালবাসা, এই মানবিক সম্ভাবনা,
এতো সহজে মুছে যায়?
যেন শুকনো পাতা—ঝড়ে পড়ে,
ডাস্টবিনের ধুলোয় মেশে।
তবু, কোথাও—
অশ্রুর ফোঁটা থেকে জেগে ওঠে
নতুন ভাষা, নতুন কলঙ্কতীর্থ,
যেখানে ভালবাসা আর মৃত্যু একই স্রোতে ভাসে।